প্রতিবেশীর সঙ্গে ঝগড়ার পর মা ও শিশুকন্যার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

প্রতীকী ছবি

প্রতিনিধি রাণীনগর: নওগাঁর আত্রাইয়ে মা ও মেয়ের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার সকালে উপজেলার জামগ্রাম বাঁধপাড়া গ্রাম থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়। পরিবারের দাবি, প্রতিবেশীরা বিরোধের জেরে তাদের হত্যার করেছে।

আত্রাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারেকুর রহমান সরকার বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা তা তদন্ত করা হচ্ছে।

নিহতরা হলেন বাঁধপাড়া গ্রামের আরিফুল ইসলামের স্ত্রী সাবিনা বিবি (৩২) এবং মেয়ে আফরুজা আক্তার (৯)।

সাবিনার ভাবি ফিরোজা বিবি জানান, গত বুধবার ছাগলে গাছ খাওয়া নিয়ে প্রতিবেশী আবুল হোসেনের স্ত্রী রেখা বিবির সঙ্গে সাবিনার ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে সাবিনাকে বেদম মারধর করায় তাঁকে আত্রাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনা সমাধান করতে সাবিনাকে হাসপাতাল থেকে শুক্রবার বিকেলে বাড়িতে আনা হয়।

রাতে স্থানীয় মেম্বার রুহুল আমিনের নেতৃত্বে বৈঠক বসে। বৈঠকে ঘটনাটি হাত ধরে ক্ষমা চাওয়ার মাধ্যমে সমাধান করা হয়। আজ শনিবার সকালে পরিবারের সবাই একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া শেষে আরিফুল ভ্যান নিয়ে বেরিয়ে যান। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে আরিফুল বাড়ি ফিরে দেখেন এক রশিতে মা-মেয়ে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলছে। খবর পেয়ে দুপুরে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।

ফিরোজার দাবি, বিরোধের জেরে প্রতিবেশী রেখাই সাবিনা ও তাঁর মেয়েকে হত্যা করেছেন।

প্রতিবেশী রেখা বলেন, ‘সাবিনার সঙ্গে আমাদের যে দ্বন্দ্ব হয়েছিল তা রাতে মীমাংসা হয়েছে। সাবিনার মৃত্যুর ব্যাপারে আমাদের কিছু জানা নেই। তারা আমাদের ওপর অন্যায়ভাবে দোষ চাপাচ্ছে।’

স্থানীয় মেম্বার রুহুল আমিন বলেন, ‘প্রতিবেশীর সঙ্গে মারপিটের ঘটনাটি আমরা স্থানীয়ভাবে সমাধান করে দিয়েছি। কিন্তু সকাল ৯টার দিকে জানতে পারি, সাবিনা এবং তার মেয়ে মারা গেছে। তারা আত্মহত্যা করেছে নাকি কেউ তাদের হত্যা করেছে—এটা বলতে পারছি না।’

আত্রাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারেকুর রহমান সরকার বলেন, ‘মা-মেয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে দুপুরে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছি। তবে তারা আত্মহত্যা করেছে নাকি হত্যা করা হয়েছে—তা এখনো জানা যায়নি। ঘটনা জানতে সুষ্ঠু তদন্ত করা হচ্ছে।’

এ ঘটনায় নওগাঁ জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) আহসানুজ্জামান পিপিএম ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ফৌজিয়া হাবিব খান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।