জামালপুরের মাদারগঞ্জ পৌরসভার নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক মো. ইমরান আহমেদ | ছবি: সংগৃহীত |
নিজস্ব প্রতিবেদক: ঘটনার সত্যতা যাচাই করে জামালপুরের জেলা প্রশাসক মো. ইমরান আহমেদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আজ বুধবার বিকেলে ইসির সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মো. আশাদুল হক গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে এই তথ্য জানিয়েছেন।
জামালপুরের মাদারগঞ্জ পৌরসভার নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধন উপলক্ষে গত সোমবার বিকেলে আয়োজিত এক সভায় জেলা প্রশাসক মো. ইমরান আহমেদ উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আওয়ামী লীগ সরকারকে আবার ক্ষমতায় আনার আহ্বান জানিয়েছেন।
অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক ইমরান আহমেদের দেওয়া বক্তব্যের ৩ মিনিট ৩৮ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ক্লিপ গত মঙ্গলবার সকাল থেকে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। সরকারি কর্মকর্তা হয়ে এ ধরনের বক্তব্য দেওয়ার সমালোচনা করেছেন অনেকে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ নির্বাচন কমিশন থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয় জামালপুরের জেলা প্রশাসক মো.ইমরান আহমেদ স্থানীয় সংসদ সদস্য জনাব মির্জা আজমের উপস্থিতিতে এক সভায় বক্তব্য দেন। সেখানে তিনি উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আওয়ামী লীগ সরকারকে পুনরায় নির্বাচিত করে ক্ষমতায় আনার আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্য মির্জা আজমকে আগামী নির্বাচনের পর মন্ত্রী হিসেবে দেখার আশা প্রকাশ করেছেন। তাঁর বক্তব্যের ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
ইসির বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আসন্ন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের পক্ষপাতহীন নিরপেক্ষ আচরণ করতে হবে। এটি সংবিধান ও সংশ্লিষ্ট সব আইনের অর্থ ও অন্তর্নিহিত চেতনা। সংবিধানের ১২০ ও ১২৬ নম্বর অনুচ্ছেদ এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৫ ও ৯১ (গ) নম্বর অনুচ্ছেদসহ আরও বিভিন্ন আইন ও ধারায় এ বিষয়টি সুস্পষ্ট। নির্বাচন বিষয়ে কমিশনের এখতিয়ার কেবল তফসিল ঘোষণার পর নয়, সব সময় বিদ্যমান থাকে।
নির্বাচন কমিশন বলছে, জেলা প্রশাসকগণ সাধারণত রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে
নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করে থাকেন এবং নির্বাচনের সময় জেলা ম্যাজিস্ট্রেট
হিসাবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বও পালন করে থাকেন। বর্ণিত
অবস্থাধীনে সরকার, গণতন্ত্র, নির্বাচন ব্যবস্থা এবং নির্বাচন কমিশনের ওপর
জনমানুষের আস্থা অক্ষুণ্ন রাখার স্বার্থে মো.ইমরান আহমেদকে, উক্ত ঘটনার
সত্যতা যাচাই সাপেক্ষে, জেলা প্রশাসকের দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া
এবং আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনোরূপ নির্বাচনী দায়িত্ব প্রদান করা থেকে
বিরত রাখা সমীচীন হবে এবং একই সঙ্গে জেলা প্রশাসকগণকে এ ধরনের আচরণ থেকে
বিরত থাকতে সতর্কবার্তা দেওয়া প্রয়োজন মর্মে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।