কুকুরের কামড়ে আহত অন্তত ৫০ জন মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। রোববার দুপুরে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন 

প্রতিনিধি মাদারীপুর: মাদারীপুরের কালকিনিতে বেওয়ারিশ একটি কুকুরের কামড়ে নারী, শিশুসহ অর্ধ শতাধিক মানুষ আহত হয়েছে। আজ রোববার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত কুকুরে কামড়ে আহত ৫০ জনের বেশি রোগী মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসে। এর মধ্যে ভর্তি হয়েছে ৩০ জন।

আহত রোগীদের বাড়ি কালকিনি উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের ফাঁসিয়াতলা, চর লক্ষ্মীপুর, সস্তাল, কালীগঞ্জ এলাকায়।

পুলিশ, হাসপাতাল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ সকাল সাড়ে ৮টার দিকে লাল, সাদা ও হলুদ রঙের একটি কুকুর একজন কৃষকের পায়ে কামড় দেয়। এরপর কুকুরটিকে মারতে স্থানীয় লোকজন ধাওয়া করলে কুকুরটি বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তখন কুকুরটিকে আশপাশে যাকে পায়, তাকেই কামড় দিতে শুরু করে। এভাবে কুকুরটি ৩ থেকে ৪ ঘণ্টার ব্যবধানে ৫০ জনের বেশি মানুষকে কামড় দিয়ে জখম করলে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

মাদারীপুর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসা কর্মকর্তা মো. রিয়াদ মাহামুদ বলেন, হাসপাতালে সকাল ৯টা থেকেই একের পর এক কুকুরে কামড়ে মারাত্মক জখম রোগীরা আসতে থাকে। আহত সবার পায়ের হাঁটু থেকে নিচ পর্যন্ত জখম রয়েছে। অনেকের হাতেও কামড় আছে। বিশেষ করে শিশু ও নারীদের ক্ষত বেশি। কামড়ে আহত সবার জলাতঙ্ক রোধে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। গুরতর আহত রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

মাদারীপুর জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কুকুরের কামড়ে আহত রোগী ও স্বজনদের ভিড় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন 

কালীগঞ্জ এলাকার শিশু হালিমা সকালে বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে কুকুরটি তাকে কামড় দেয়। আহত অবস্থায় তার মা ময়না আক্তার তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। ময়না আক্তার বলেন, ‘আমার ছোট্ট মেয়েটা বাড়ি থেকে স্কুলে যাচ্ছিল। হঠাৎ কোথা থেকে কুকুরটা এসে আমার মেয়ের পায়ে ও কোমড়ে কামড় দেয়। মেয়েটা হাসপাতালে ছটফট করে কান্না করতাছে। মেয়েটাকে খুব চিন্তা হচ্ছে।’

স্থানীয় অটোরিকশাচালক সরোয়ার হোসেন বলেন, ‘কুকুরে কামড়ে আহত চারজনকে আমি একসঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে আসছি। সবার পায়ে কুকুরটি কামড় দেয়। লাল, সাদা ও হলুদ রঙের বড়সড় এই কুকুর এলাকায় আগে কখনো দেখিনি। একটা কুকুর এভাবে এলাকার এতগুলো মানুষকে কামড়ে দেবে, এটা আমার জীবনদশায় দেখিনি। এলাকার সবাই খুব ভয়ের মধ্যে রয়েছে।’