একাদশে ভর্তিতে আবেদন চলছে, যেভাবে করতে হবে আবেদন

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: এ বছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের ফলাফলের ভিত্তিতে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন শুরু হয়েছে। ২০ আগস্ট পর্যন্ত প্রথম পর্যায়ে অনলাইনে আবেদন করতে পারবে শিক্ষার্থীরা। এবারও একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির প্রক্রিয়া চলবে লটারিতে। এবারও তিন পর্যায়ে আবেদন গ্রহণ করা হবে। কলেজে ভর্তির জন্য কোনো পরীক্ষা হবে না, শিক্ষার্থীদের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে ভর্তি করা হবে।

অনলাইনে আবেদন যেভাবে
চলতি বছর অনলাইনে নির্ধারিত ওয়েবসাইটে (http://www.xiclassadmission.gov.bd/) একাদশ শ্রেণির ভর্তির আবেদন করা যাবে। অনলাইন ছাড়া ম্যানুয়ালি ভর্তির আবেদন নেওয়া হবে না। শিক্ষার্থীদের আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫০ টাকা। এ ফি দিয়ে সর্বনিম্ন ৫টি এবং সর্বোচ্চ ১০টি কলেজে পছন্দ দিতে হবে শিক্ষার্থীদের। একজন শিক্ষার্থী যতগুলো কলেজে আবেদন করবে, তার মধ্য থেকে তার মেধা, কোটা ও পছন্দক্রমের ভিত্তিতে একটিমাত্র কলেজে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হবে।

নির্বাচিত শিক্ষার্থীকে ৩৩৫ টাকা দিয়ে ভর্তির প্রাথমিক নিশ্চায়ন করতে হবে। আগে প্রাথমিক নিশ্চায়ন ফি ছিল মোট ৩২৮ টাকা। আগের ১৩৫ টাকা রেজিস্ট্রেশন ফি ৭ টাকা বাড়িয়ে ১৪২ টাকা করায় মোট ফি বেড়েছে।

তবে যেসব শিক্ষার্থী বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন হিসেবে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে, তারা বোর্ডে ম্যানুয়ালি ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবে। প্রবাসীদের সন্তান ও বিকেএসপি থেকে শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য বোর্ডে ম্যানুয়ালি আবেদন করতে পারবে। এ ক্ষেত্রে বোর্ড প্রমাণপত্র যাচাই–বাছাই করে শিক্ষার্থীর ভর্তির ব্যবস্থা করবে।

গ্রুপ নির্বাচন যেভাবে
 বিজ্ঞান গ্রুপ থেকে এসএসসি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা উচ্চমাধ্যমিকে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা গ্রুপের যেকোনো একটি নির্বাচন করতে পারবেন। মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা গ্রুপ থেকে উত্তীর্ণরা এ দুই গ্রুপের যেকোনো একটি নির্বাচন করতে পারবেন। দাখিল উত্তীর্ণ বিজ্ঞান গ্রুপের শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা গ্রুপের যেকোনো একটি ও সাধারণ গ্রুপ থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা গ্রুপের যেকোনো একটি নির্বাচন করতে পারবেন। ভর্তির জন্য কোনো পরীক্ষা হবে না, শিক্ষার্থীদের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে ভর্তি করা হবে।

তিন ধাপে আবেদন ও ফল প্রকাশ
প্রথম ধাপে অনলাইনে একাদশে ভর্তির আবেদন চলবে ১০ থেকে ২০ আগস্ট। তবে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে অনলাইন আবেদন ও কল সেন্টার বন্ধ থাকবে। ২১ থেকে ২৪ আগস্ট আবেদন যাচাই–বাছাই করা হবে। ৩১ আগস্ট পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করে ফল বদলানো শিক্ষার্থীদের আবেদনের সুযোগ দেওয়া হবে। আগামী ৫ সেপ্টেম্বর রাত আটটায় প্রথম ধাপের ফল প্রকাশ করা হবে। ৭ থেকে ১০ সেপ্টেম্বর নির্বাচনে নিশ্চায়নের সুযোগ পাবে প্রথম ধাপে নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা।

১২ থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর রাত আটটা পর্যন্ত দ্বিতীয় ধাপের আবেদন নিয়ে ফল প্রকাশ করা হতে পারে ১৬ সেপ্টেম্বর। একই দিন রাত আটটায় প্রথম মাইগ্রেশনের ফল প্রকাশ করা হবে। ১৭ ও ১৮ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় ধাপে নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা নির্বাচন নিশ্চায়নের সুযোগ পাবে। আর ২০ ও ২১ সেপ্টেম্বর তৃতীয় পর্যায়ের আবেদন নিয়ে ২৩ সেপ্টেম্বর ফল প্রকাশ করা হবে। ২৪ ও ২৫ সেপ্টেম্বর তৃতীয় ধাপের নির্বাচন নিশ্চায়ন চলবে।

ভর্তি ও ক্লাস কবে
তিন ধাপের ফল প্রকাশের পর ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবর একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিপ্রক্রিয়া চলবে। একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু হবে ৮ অক্টোবর থেকে।

একাদশে ভর্তিতে কোটা
কলেজের ৯৩ শতাংশ আসন সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে ও এসব আসনে ভর্তির জন্য মেধার ভিত্তিতে শিক্ষার্থী নির্বাচন করা হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অধীনস্থ দপ্তর সংস্থায় কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের ক্ষেত্রে মহানগর, বিভাগীয় ও জেলা সদরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির ন্যূনতম যোগ্যতা থাকা সাপেক্ষে ২ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত থাকবে। যদি আবেদনকারীর সংখ্যা বেশি হয়, সে ক্ষেত্রে তাদের নিজেদের মধ্যে মেধার ভিত্তিতে ভর্তির সুযোগ পাবে। আবেদনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কর্মচারী কর্তৃক দপ্তরপ্রধানের প্রত্যয়নপত্র দাখিল করতে হবে। সংশিষ্ট কর্মকর্তা দপ্তরপ্রধান হলে সে ক্ষেত্রে তার একধাপ ওপরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার প্রত্যয়নপত্র দাখিল করতে হবে। মোট আসনের ৫ শতাংশ বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও সন্তানদের সন্তানের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও সন্তানদের সন্তান শনাক্ত করতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে প্রদত্ত সনদপত্র দাখিল করতে হবে।  

কলেজে ভর্তি ফি কত
ভর্তির সময় এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ঢাকা মহানগরে পাঁচ হাজার টাকা সেশন চার্জ ও ভর্তি ফি নেওয়া যাবে। ঢাকা মহানগর ছাড়া অন্য মহানগর এলাকায় তিন হাজার, জেলায় দুই হাজার ও উপজেলা বা মফস্‌সল এলাকায় দেড় হাজার টাকা নেওয়া যাবে। এ ছাড়া এমপিওভুক্ত নয়, এমন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা আংশিক এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে উন্নয়ন ফি, সেশন চার্জ ও ভর্তি ফি কত নেওয়া যাবে, সেটি নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ঢাকা মহানগরে বাংলা ভার্সনে সাড়ে সাত হাজার ও ইংরেজি ভার্সনে সাড়ে আট হাজার টাকা নেওয়া যাবে।
ঢাকা মহানগর বাদে অন্যান্য মহানগর এলাকায় বাংলা ভার্সনে পাঁচ হাজার ও ইংরেজি ভার্সনে ছয় হাজার টাকা, জেলা পর্যায়ে বাংলা ভার্সনে তিন হাজার ও ইংরেজি ভার্সনে চার হাজার টাকা এবং উপজেলা ও মফস্‌সল এলাকায় বাংলা ভার্সনে আড়াই হাজার ও ইংরেজি ভার্সনে তিন হাজার টাকা নেওয়া যাবে।

গত ২৮ জুলাই এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়। এতে ১১ শিক্ষা বোর্ডে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ২০ লাখ ৪১ হাজার ৪৫০ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ১৬ লাখ ৪১ হাজার ১৪০ জন। উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা এখন একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির চেষ্টা করবে।