নওগাঁয় কাঁচাবাজারে লাগামহীন নিত্যপণ্যের দাম

দরদাম করে সবজি কিনছেন ক্রেতারা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি নওগাঁ: নওগাঁয় বেড়েই চলেছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। এতে বিপাকে পড়েছেন স্বল্প আয়ের মানুষসহ স্থানীয় দিনমজুরেরা। আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের সামঞ্জস্য খুঁজে পাচ্ছে না তাঁরা। এ দিকে বাজারদর নিয়ন্ত্রণে ভ্রাম্যমাণ আদালতের দু-একটি অভিযান ছাড়া, প্রশাসনের দৃশ্যমান কোনো তৎপরতা নেই বলে অভিযোগ ক্রেতাদের।

ক্রেতারা বলছে, অনিয়ন্ত্রিতভাবে বেড়ে যাচ্ছে নিত্যপণ্যের দাম। আয়ের সঙ্গে মানুষ তাঁর ব্যয়ের সামঞ্জস্য খুঁজে পাচ্ছে না। বাজার নিয়ন্ত্রণে তদারকি না করলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে।

আজ বৃহস্পতিবার নওগাঁ শহরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এক সপ্তাহ আগে দেশি পেঁয়াজ ৭৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও এখন সেটি বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকায়। ভারতীয় পেঁয়াজ ১৫ টাকা বেড়ে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা মরিচ কেজিতে ৪০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়। আদার কেজি ২৪০, দেশি রসুন ২৬০, ভারতীয় রসুন ২৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

অন্যদিকে হলেন্ডার আলু ৪০ টাকা কেজি। দেশি আলু ৫০ টাকা। এ ছাড়া পটলের কেজি ৪০ টাকা, একেকটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫, কচু ৮০ টাকা, পেঁপের কেজি ৪০, কাঁকরোল ৮০, মিষ্টি কুমড়া ৪০, ঢ্যাঁড়স ৪০, করলা ৮০, বরবটি ৮০, বেগুন ৬০, শসা ৮০ টাকা, শজনে ২০০, ঝিঙে ৬০ কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এ ছাড়া সব ধরনের মাছের দাম কেজিতে ৩০ থেকে ৫০ টাকা বেড়েছে। কাতলা ৩২০ টাকা, রুই ৩৫০ টাকা, সিলভার ১৮০ টাকা, পাঙাশ ১৭০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ টাকা, এক কেজি ওজনের ইলিশ ১ হাজার ৬০০ টাকা, পাবদা ৬০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা যায়।

তবে কিছুটা স্বস্তি মিলেছে ব্রয়লার মুরগিতে। সপ্তাহের ব্যবধানে ২০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়।

নিত্য প্রয়োজনীয় এসব পণ্যের দাম বাড়ায় নাভিশ্বাস উঠেছে মধ্য ও নিম্নবিত্ত শ্রেণির মানুষের মাঝে। দিনমজুরেরা পড়েছেন আরও বিপাকে। জীবনের ন্যূনতম চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাঁদের।

বাজারে কথা হয় বিহারি কলোনির বাসিন্দা তৌহিদুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘দিনের পর দিন দাম বেড়েই চলেছে। ব্যয় এতই বাড়ছে জীবন চালানো দায় হয়ে পড়তেছে। বাজার ব্যবস্থার ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ নাই।’

বাজারে মাছের কেনাবেচা চলছে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

অপর এক ক্রেতা সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত বৃদ্ধিতে মাস পার করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। প্রতি মাসের আয়ের তুলনায় ব্যয় বেশি হচ্ছে।’ 

বাজারে আসা স্কুলশিক্ষক আজিজুল রহমান আজকের বলেন, ‘কোনো কারণ ছাড়াই দাম বাড়ছে। খরচের তুলনায় তো মানুষের আয় বাড়েনি। দাম নিয়ন্ত্রণে এখন লাগাম টানতে হবে, না হলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে।’ 

দাম বৃদ্ধির বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যবসায়ী মো. রাশেদ হোসেন  বলেন, ‘স্বাভাবিক কারণে বাজারে কিছু পণ্যের দাম ওঠা মানা করে। যেমন, আমদানি কম থাকায় পেঁয়াজের দাম কিছুটা বেড়েছে। আমদানি স্বাভাবিক হলে দাম কমে আসবে।’ 

মাছ ব্যবসায়ী আফাজ উদ্দিন বলেন, ‘চাহিদা বেশি থাকায় কেজিতে সব ধরনের মাছের দাম ৩০ থেকে ৫০ টাকা বাড়ছে। বেশি দামে কিনছি, এ জন্য বেশি দামেই বিক্রি করতে হয়।’ 

এ ব্যাপারে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর নওগাঁর সহকারী পরিচালক রুবেল আহমেদ বলেন, ‘সরকার নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি নিশ্চিত করতে প্রতিদিনই আমরা বাজার মনিটর করছি। মূল্যবৃদ্ধির অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।’