(বাঁ থেকে) রাজু আহমেদ, সাকোয়ান সিদ্দিক, মহিবুল মমিন | ছবি: সংগৃহীত 

প্রতিনিধি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়: ভর্তি জালিয়াতি ও ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীকে ‘প্রক্সি চুক্তির’ টাকার জন্য আটকে রেখে মুক্তিপণ দাবির ঘটনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তিন শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করেছে। তাঁরা তিনজনই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী ছিলেন। গত শনিবার তাঁদের সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া অসদুপায় অবলম্বন করে ভর্তি হওয়া এক শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবদুস সালাম স্বাক্ষরিত এক আদেশে এসব তথ্য জানানো হয়। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার হওয়া ওই তিনজন হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শের-ই-বাংলা ফজলুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী রাজু আহমেদ, শহীদ হবিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের কর্মী ও লোকপ্রশাসন বিভাগের মহিবুল মমিন এবং শের-ই-বাংলা হল ছাত্রলীগের কর্মী ও শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী সাকোয়ান সিদ্দিক।

আর ভর্তি বাতিল হওয়া শিক্ষার্থীর নাম আহসান হাবীব। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগে ২০২২-২৩ সেশনে ভর্তি হয়েছিলেন।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের মাধ্যমে ভর্তি হওয়ার বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় ওই শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করা হয়েছে। ওই শিক্ষার্থীকে টাকার বিনিময়ে অসদুপায় অবলম্বনের মাধ্যমে ভর্তি হতে সহায়তা করায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হলো।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুশফিক তাহমিদসহ ছাত্রলীগের চার নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি, অপহরণ ও তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবির অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় শুক্রবার তাঁদের বিরুদ্ধে নগরের মতিহার থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়। এর মধ্যে একটি মামলা পাবলিক পরীক্ষা (অপরাধ) আইনে, ১৯৮০ করা হয়। অন্য মামলাটি অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে করা হয়েছে। পরে শনিবার রাতে ছাত্রলীগ নেতা মুশফিক তাহমিদসহ চারজনকে সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।

ছাত্রলীগ নেতা মুশফিক তাহমিদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব না থাকায় তাঁর বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি। তবে তাঁর বিরুদ্ধে হওয়া মামলা চলবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আবদুস সালাম।

তবে মুশফিক তাহমিদ শাহ মখদুম হলে থাকেন বলে নিশ্চিত করেছেন আবাসিক শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে শাহ মখদুম হলের প্রাধ্যক্ষ রুহুল আমিন বলেন, ‘তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র না; তবু ছাত্রলীগের পদধারী হওয়ায় ক্ষমতার দাপটে হলে থাকতেন। এর আগে আমরা অনেকবার তাঁকে হল ত্যাগ করতে বলেছি। কিন্তু তিনি শোনেননি। সম্প্রতি তাঁর কক্ষটি আমরা সিলগালা করে দিয়েছি। তাঁর আর হলে থাকার সুযোগ নেই।’