ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে বগুড়ার ইনস্টিটিউট অব হেলথ্ টেকনোলজির শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ করেন । মঙ্গলবার বিকেলে ইনস্টিটিউটের সামনে শেরপুর সড়কে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
প্রতিনিধি বগুড়া: বগুড়ায় বহিরাগত এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে সড়কে লাঠি হাতে বিক্ষোভ করেছেন ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (আইএইচটি) শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের সামনে সাতমাথা-বনানী সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। এতে শহরে ব্যাপক যানজট তৈরি হয়। সমস্যা সমাধানের আশ্বাস পেয়ে পরে শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেন।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইহান ওলিউল্লাহ বলেন, ছাত্ররা বিক্ষুব্ধ হয়ে সড়ক অবরোধ করেছিলেন। তাঁদের দাবি ছিল, ক্যাম্পাসে বহিরাগত কেউ যেন প্রবেশ করতে না পারেন। এ ব্যাপারে অধ্যক্ষের কাছ থেকে তাঁদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস পেলে তাঁরা অবরোধ তুলে নিয়ে ক্যাম্পাসে ফিরে যান।
বহিরাগত ওই ছাত্রলীগ নেতার নাম সজল ঘোষ। তিনি জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বহিরাগত হয়েও সজল ঘোষ এক যুগ ধরে আইএইচটি ছাত্রাবাসের ২১৮ নম্বর কক্ষ দখল করে রেখেছেন। বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে সজল পুরো ক্যাম্পাসে ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করে রেখেছেন।
এ ছাড়া সাধারণ শিক্ষার্থীদের মারধর, আসন–বাণিজ্য, মাদক সেবন ও পরীক্ষায় পাস করিয়ে দেওয়ার কথা বলে মোটা অঙ্কের চাঁদা আদায়ের অভিযোগ আছে সজলের বিরুদ্ধে। ছাত্রলীগ নেতার এসব অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আজ বিকেলে লাঠি হাতে সড়ক অবরোধ করেন এবং অভিযুক্ত সজল ঘোষকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
আমিনুল ইসলাম নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, আজ দুপুরে ছাত্র হোস্টেলে তৃতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী খাবারের টাকা চাইতে গেলে সজল ঘোষ তাঁকে মারধর করেন। এরপরই শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে সড়কে অবস্থান নেন।
মারধরের শিকার আমিনুল ইসলাম বলেন, সজল বহিরাগত হয়েও দীর্ঘদিন ধরে কলেজের হোস্টেল পরিচালনা করে আসছেন। তিনি কলেজে বসে মাদক সেবন করেন। ছেলেদের হোস্টেলের সবার খাওয়ার মিলের টাকা সজল নিজের কাছে রেখে দেন। আজ বাজারের জন্য তাঁর কাছে টাকা চাইলে, তিনি দেড় হাজার টাকা দিয়ে মিল চালাতে বলেন। তখন প্রতিবাদ করতে গেলে তাঁকে তিনি মারধর করেন। খবর পেয়ে কলেজের শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ জানান।
আরেক শিক্ষার্থী মেফতাহুল জান্নাত বলেন, সজল ঘোষ কলেজে বিভিন্নজনের কাছ থেকে টাকার বিনিময়ে সুবিধা দেন। শুধু তা–ই নয়, পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মিষ্টি খাওয়ার জন্য বকশিশের টাকা তোলেন।
অভিযোগের বিষয়ে সজল ঘোষের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
জানতে চাইলে বগুড়া আইএইচটির অধ্যক্ষ আমায়াত উল হাছিন বলেন, সজল ঘোষ নামের বহিরাগত কোনো ছেলে হলে থাকেন, সেটি তিনি জানতেন না। এ ব্যাপারে তাঁকে আগে কেউ অভিযোগ করেননি। এখন অভিযোগ পাওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।