জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার রুকিন্দীপুরের বটতলী বাজারে অনুকূল চন্দ্রের চা–দোকানে মাছ দিয়ে বানানো শিঙাড়া | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
প্রতিনিধি জয়পুরহাট: আলু দিয়ে শিঙাড়া, সবজি দিয়ে রোল ও বল বানানো হয়, এটা কমবেশি সবাই জানে। মুখরোচক এই খাবার অনেকেরই বেশ পছন্দের। তবে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার একটি চা–দোকানে শিঙাড়া, রোল ও বল বানানো হয় মাছ দিয়ে। নাম হচ্ছে ফিশ শিঙাড়া, ফিশ রোল ও ফিশ বল।
আক্কেলপুরের রুকিন্দীপুর ইউনিয়নের বটতলী বাজারে অনুকূল চন্দ্রের চা–দোকানে মাছ দিয়ে বানানো পদগুলো পাওয়া যাচ্ছে। উপজেলা সদর থেকে উত্তর দিকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দূরে এই বাজারের অবস্থান। ছোট-বড় মিলিয়ে বাজারে ২০-২২টি দোকান। অনুকূলের চা–দোকান প্রতিদিন বিকেল ৪টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকে।
এক বিকেলে চা–দোকানে গিয়ে দেখা গেল, ফিশ শিঙাড়া, রোল ও বল ভাজা হচ্ছে। দূরদূরান্ত থেকে আসা লোকজন স্টলের ভেতরে খাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন। ভেজে তুলতে না তুলতেই সব শেষ হয়ে যাচ্ছে!
বাজারের কয়েকজন দোকানি বলেন, অনুকূল চন্দ্রের বাড়ি উপজেলার পাশের জালালপুর গ্রামে। তিনি একটি কলেজে এলএমএসএসের চাকরি করেন। এক যুগের বেশি সময় ধরে চাকরির পাশাপাশি বিকেলে চা ও পেঁয়াজু বিক্রি করেছেন। চার মাসে আগে মাছের তৈরি শিঙাড়া, রোল ও বল বিক্রি শুরু করেন। প্রথম দিকে তেমন সাড়া পাননি। তবে এখন দূরদূরান্তের মানুষ এগুলোর স্বাদ নিতে আসেন। বিক্রিও ভালো হচ্ছে। প্রতিটি ফিশ শিঙাড়ার দাম পাঁচ টাকা। ফিশ রোল ও বলের দাম ১০ টাকা করে।
চা–দোকানি অনুকূল চন্দ্র বলেন, ‘এক যুগের বেশি সময় ধরে চা স্টলে বিকেলে পেঁয়াজু বিক্রি করছি। আমার স্ত্রী গোলাপি রানী বেসরকারি একটি সংস্থার মৎস্য উৎপাদন ও বিপণন প্রকল্পের (পিকেএসএফের আর্থিক সহযোগিতায় এসোর একটি প্রকল্প) সদস্য। ওই সংস্থা মাছের শিঙাড়া, রোল ও বল তৈরিতে উদ্বুদ্ধ করেছে।’ প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ কেজি পাঙাশ, তেলাপিয়া, রুই ও সিলভার কার্প মাছ দিয়ে তিনি এসব খাবার তৈরি করেন বলে জানালেন।
মাছ দিয়ে বানানো পদের নাম ফিশ শিঙাড়া, ফিশ রোল ও ফিশ বল | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
আওয়ালগাড়ী গ্রামের শহিদুল ইসলাম বলেন, অনুকূলের দোকানে ভিন্ন স্বাদের শিঙাড়া পাওয়া যায়। এ কারণে বিকেলে আট বছরের ছেলে সিফাতকে সঙ্গে নিয়ে তিনি ফিশ শিঙাড়া খেতে এসেছেন। আক্কেলপুর পৌর শহরের হাস্তাবসন্তপুর মহল্লার নিয়াজ মোর্শেদ বলেন, ‘এখানে বিকেলে মাছের তৈরি শিঙাড়া, বল ও রোল পাওয়া যায় শুনেছি। তাই খেতে এসেছি। আমার ভালো লেগেছে।’
বেসরকারি সংস্থা এসোর মৎস্য কর্মকর্তা নাজমুল হাসান বলেন, ‘বর্তমানে তাজা মাছের পাশাপাশি প্রক্রিয়াজাত মাছ বা রেডি টু ইট ফিশ প্রোডাক্ট আমাদের খাদ্যতালিকায় স্থান করে নিয়েছে। অনেক পরিবারের ছোট বাচ্চারা মাছের কাঁটা বা গন্ধের কারণে মাছ খেতে চায় না। রেডি টু ইট ফিশ প্রোডাক্ট সম্পূর্ণ গন্ধমুক্ত, কাঁটামুক্ত এবং পুষ্টিমান অক্ষুণ্ন থাকায় সব বয়সের মানুষ এটা সহজেই খেতে পারবে।’
এই প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বিকল্প কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে এবং বাড়তি আয় করা সম্ভব। পিকেএসএফের আর্থিক সহযোগিতায় এসো প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।