প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি আজ রোববার গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে বিটিআরসি ভবন ও তথ্য কমিশন ভবন উদ্বোধন করেন। একই সঙ্গে বিএফডিসি কমপ্লেক্সের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন | ছবি: বাসস

বাসস, ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী  শেখ হাসিনা বলেছেন, তাঁর সরকার চায়, বাংলাদেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকুক।

রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নবনির্মিত বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ভবন ও তথ্য কমিশন ভবন উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি একই সঙ্গে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) কমপ্লেক্সের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও অগ্নিসন্ত্রাসের মতো মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবিলা করেও তাঁরা উন্নয়নের পথে দেশের অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে চান। এই দেশকে সুন্দরভাবে গড়ে তোলাই তাঁর সরকারের লক্ষ্য।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হারানোর বিয়োগান্ত অধ্যায় স্মরণ করে সরকারপ্রধান বলেন, জাতির পিতার তৈরি করে দেওয়া ভিত্তি বা শুরু করে যাওয়া প্রতিটি কাজ সফলভাবে করতে পেরে তিনি দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘জনগণ আমাদের বারবার নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে তাঁদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন বলেই এ কাজগুলো আমরা করতে পেরেছি। বাংলাদেশে ২০০৯ সাল থেকে আজকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ধারাবাহিক গণতান্ত্রিক পদ্ধতির সরকার চলছে, দেশে স্থিতিশীলতা বজায় রয়েছে। যদিও এর মধ্যে আমাদের প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মনুষ্য সৃষ্ট দুর্যোগ এবং অগ্নিসন্ত্রাস—এমন অনেক কিছুই মোকাবিলা করতে হয়েছে। কিন্তু তারপরও বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রা যেন অব্যাহত থাকে, সেটাই আমরা চাই।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি। এবং ২০৪১ সালের মধ্যে এই বাংলাদেশকে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। সেখানে আমাদের স্মার্ট জনগোষ্ঠী হবে, স্মার্ট ইকোনমি হবে, স্মার্ট সোসাইটি হবে, স্মার্ট গভর্নমেন্ট তথা প্রতিটি ক্ষেত্রই স্মার্ট হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই তাঁর সরকার সব ক্ষেত্রেই আধুনিক প্রযুক্তিজ্ঞানসম্পন্ন জনগোষ্ঠী, সমাজ ও দেশকে গড়ে তোলার পদক্ষেপ নিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইনশা আল্লাহ, আমরা এটা সফলভাবে করতে পারব। বাংলাদেশে কোনো ক্ষুধা-দারিদ্র্য থাকবে না, কোনো মানুষ কষ্ট পাবে না, প্রত্যেক ভূমিহীন মানুষ ঘর পাবে, প্রতিটি মানুষের জীবন মান উন্নত হবে।’

বর্তমান সরকারের চালু করা সর্বজনীন পেনশন স্কিমের প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আগে অবসরভাতা শুধু সরকারি কর্মকর্তারাই পেত, সেটাকে আমরা এখন সর্বজনীন করে দিয়েছি। কেননা, যখন তাদের (অবসরে যাওয়া বেসরকারি কর্মজীবী) কাজ করার সুযোগ থাকবে না, তখন তাদের জীবনটা যেন অর্থবহ থাকে এবং প্রত্যেক মানুষের জীবনটা যেন নিরাপদ হয়।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা যখনই কোনো উন্নয়নের উদ্যোগ নিই, তখনই দেখতে পাই, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভিত্তি প্রদান করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া ভিত্তির ওপর নির্ভর করেই আজকের বাংলাদেশ উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার পদচিহ্ন অনুসরণ করে বাংলাদেশ ও এর জনগণের উন্নয়নে কাজ করতে পেরে তিনি অত্যন্ত আনন্দিত বোধ করছেন।

১৫ তলার দৃষ্টিনন্দন বিটিআরসি ভবনটি এক একর জমিতে নির্মিত। ১৩ তলার তথ্য কমিশন ভবনটি শূন্য দশমিক ৩৫ একর জমিতে নির্মিত। অনুষ্ঠানে বিটিআরসি ভবন, তথ্য কমিশন ভবন ও বিএফডিসি কমপ্লেক্স সংযুক্ত ছিল।

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। অনুষ্ঠানে নবনির্মিত বিটিআরসি ও তথ্য কমিশন ভবন এবং বিএফডিসি কমপ্লেক্সের ওপর অডিও-ভিডিও তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।