মন যখন সতেজ থাকে, চেহারায় তার প্রভাব পড়তে বাধ্য । মডেল: চন্দনা আহমেদ | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
বিপাশা রায়: বয়স বেড়েছে, তাই হয়তো ত্বকে ধরেছে একটু টান, শরীরে বেড়েছে মেদ। তার মানে এই নয় যে নিজেকে বুড়ি ভাবতে শুরু করবেন। এখন থেকেই যত্ন নেওয়া শুরু করুন। দেখুন কেমন সতেজ হয়ে উঠছেন আপনি। সুন্দর থাকার নির্দিষ্ট কোনো বয়স নেই। যেকোনো বয়সেই মানুষ সুন্দর থাকতে পারে। এ জন্য সবচেয়ে বেশি যেসব নিয়ম মেনে চলতে হবে, সেগুলো হলো—পুষ্টিসম্পন্ন খাবার গ্রহণ, নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম এবং রূপচর্চা করা। এই তিন বিষয় মেনে চললে বয়স যা–ই হোক না কেন, নিজেকে সুন্দর রাখা সম্ভব। এ বিষয়ে রাহিমা সুলতানার কিছু পরামর্শ অনুসরণ করতে পারেন।
প্রতিদিন সকালে পান করতে পারেন ডিটক্স ওয়াটার। কোনো দিন হালকা গরম পানিতে লেবু ও পুদিনাপাতা মিশিয়ে খেতে পারেন। আবার কোনো দিন সকালে আগের রাতে মেথি ভিজিয়ে রাখা পানি পান করতে পারেন। আবার কোনো দিন খেলেন তোকমা পানি। এসব পানীয় শরীরের দূষিত পদার্থ বের করতে সাহায্য করে। তবে খেয়াল রাখবেন, সকালে এসব পানীয় পানের সময় পেট যেন খালি থাকে।
নিয়মিত খাবারে ভাত ও আমিষজাতীয় খাবারের পরিমাণ কমিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দিলেন রাহিমা সুলতানা। বদলে শাকসবজি ও ফলের পরিমাণ বাড়িয়ে দিন। একটা নির্দিষ্ট বয়সের পর শরীরে খুব বেশি আমিষের চাহিদা থাকে না। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কমে আসে হজমশক্তি। আমিষ এই হজমপ্রক্রিয়াকে আরও বাধাগ্রস্ত করে। যে কারণে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে খাবারে আমিষের পরিমাণ কমিয়ে দেওয়া ভালো। প্রতিদিন সকাল ও রাতে ২ টেবিল চামচ টক দই খাওয়ার চেষ্টা করুন। কারণ, টক দইয়ে থাকা প্রোবায়োটিকস হজমপ্রক্রিয়ার গতি বাড়ায়। টক দইয়ে আরও আছে ক্যালসিয়াম ও মিনারেল, যা শরীরের জন্য বেশ উপকারী। সবচেয়ে ভালো হয় যদি এই টক দই বাড়িতে বানিয়ে নেন। বাইরের টক দইয়ে প্রিজারভেটিভ থাকে, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর।
মনকে প্রফুল্ল রাখুন । মডেল: চন্দনা আহমেদ | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
বয়স বাড়তে থাকলে ঘুমের পরিমাণ কমে আসে। এ জন্য ঘুমানোর আগে এক গ্লাস দুধ খেয়ে নিতে পারেন। ভালো ঘুম হতে সাহায্য করে দুধ। ভালো ঘুমের ফলে ত্বক পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া ভালো হয়। এটি ত্বকের টক্সিক পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে।
একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর ত্বক আর্দ্রতা হারাতে শুরু করে। এ জন্য প্রচুর পানি পান করা খুব জরুরি। কারণ, পানি ভেতর থেকে ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে।
এসব তো গেল ভেতরটাকে কীভাবে সুন্দর রাখবেন, তার কথা। তবে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যেহেতু ত্বক তার স্বাভাবিক আর্দ্রতা হারায়, তাই ত্বক সতেজ রাখার জন্য বাইরে থেকেও কিছু ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। ত্বকে ডিপ ময়েশ্চারাইজিং করা এ সময় খুব জরুরি। সমপরিমাণ নারকেল তেল, গোলাপজল ও গ্লিসারিন মিশিয়ে সারা রাত ত্বকে মেখে রাখুন। নারকেল তেল ত্বকের যত্নে বেশ উপকারী। এমনটা অবশ্য রুনা খানও বলেছেন। ঘুমানোর আগে ত্বকের যত্নে তিনি শুধু নারকেল তেলই ব্যবহার করে থাকেন। কারও ত্বক যদি তৈলাক্ত হয়, তাহলে এই মিশ্রণে নারকেল তেলের পরিমাণ কমিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দেন রাহিমা সুলতানা।
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ত্বকের প্রধান শত্রু হয়ে দাঁড়ায় বলিরেখা। এ জন্য
টোনার ব্যবহারের পরামর্শ দেন রাহিমা। বাড়িতেই বানাতে পারেন এটি। ২ টেবিল
চামচ টক দই, ১ টেবিল চামচ গুঁড়া দুধ, আধা চা–চামচ মধু এবং পাঁচটি জাফরানের
রেণু একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। এটি ক্রিমের মতো হবে। সারা রাত ত্বকে মেখে রাখুন।
সকালে ঘুম থেকে উঠে পরিবর্তনটা নিজেই টের পাবেন।