সংসদ সদস্যের জানাজা থেকে ফেরার পথে নলডাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যানের ওপর হামলা

রক্তাক্ত জখম নলডাঙ্গা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান। নাটোরের পচুর হোটেলে তোলা | ছবি: সংগৃহীত 

প্রতিনিধি নাটোর: নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান ও জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম ওরফে শাহীনের ওপর হামলা হয়েছে। হামলায় তিনি গুরুতর আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে শহরের চকরামপুরে পচুর হোটেলের ভেতরে এই হামলা হয়। হামলার জন্য নাটোর-২ (নাটোর সদর-নলডাঙ্গা) আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলামের অনুসারীদের দায়ী করা হয়েছে।

জেলা আওয়ামী লীগের দুজন নেতা ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নাটোর-৪ (গুরুদাসপুর-বড়াইগ্রাম) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল কুদ্দুসের জানাজা ও দাফন সম্পন্ন করে বিকেলে নলডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান ও জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুলসহ কয়েকজন নেতা শহরে ফিরছিলেন। তাঁরা শহরের পচুর হোটেলে খাওয়াদাওয়া করার সময় কিছু দুর্বৃত্ত তাঁদের ওপর হামলা করে। হামলাকারীরা কাচের গ্লাস দিয়ে চেয়ারম্যানের মাথায় আঘাত করলে তাঁর মাথা রক্তাক্ত হয়। জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের ঘাড়ে আঘাত করলে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। একই সময় হোটেলের গ্লাস, প্লেট ভাঙচুর করা হয় ও খাবার তছনছ করা হয়।

খবর পেয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম ওরফে রমজান ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোর্ত্তুজা আলী ওরফে বাবলুসহ অন্য নেতারা এসে আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। পরে পুলিশ এসে হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে এবং স্থানীয় লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে।

আহত জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম বলেন, চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান হোটেলে খাচ্ছিলেন। এ সময় অতর্কিত হামলা চালানো হয়। হামলাকারীরা নাটোর-২ আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলামের অনুসারী। তাঁরা পরিকল্পিতভাবে ঘটনাটি ঘটিয়েছেন।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম হামলার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তিনি আহত ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছেন, এ ঘটনার সঙ্গে সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলামের লোকজন জড়িত। তিনি পুলিশকে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছেন।

নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছিম আহম্মেদ জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। সেখানকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। ফুটেজ পর্যালোচনা করে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে সন্ধ্যা পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি।

জানতে চাইলে সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম জানান, ‘আমি সংসদ সদস্য আবদুল কুদ্দুসের জানাজা শেষে ঢাকায় ফিরছি। কথিত হামলার ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানি না। কারা ঘটনা ঘটিয়েছে, তা–ও শুনিনি।’ তিনি বলেন, ‘উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান ছাত্রলীগ নেতা জীবন হত্যা মামলার প্রধান আসামি। তিনি জামিনে মুক্ত আছেন। এসব নিয়ে গোলমাল থাকতে পারে।’