চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের রেড ক্রিসেন্ট ফিজিও অর্থোপেডিক পুনর্বাসন সেবাকেন্দ্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দেন তথ্যমন্ত্রী ১৮ আগস্ট | ছবি: তথ্য মন্ত্রণালয়ের সৌজন্যে |
নিজস্ব প্রতিবেদক: তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, দেশের প্রান্তিক মানুষের কথা ভেবে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সামাজিক কল্যাণ রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে সর্বজনীন পেনশন–ব্যবস্থা চালুর বিরাট উদ্যোগ নিয়েছেন। বিএনপিসহ নাগরিক সমাজের একাংশ এটিকে অভিনন্দন জানাতে ব্যর্থ হয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের রেড ক্রিসেন্ট ফিজিও অর্থোপেডিক পুনর্বাসন সেবাকেন্দ্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) এ টি এম আবদুল ওয়াহ্হাবের সভাপতিত্বে ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি চট্টগ্রাম সিটি ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক আবদুল জব্বারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উদ্বোধক ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ট্রেজারার এম এ ছালামের ব্যক্তিগত অর্থায়নে প্রায় ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে ফিজিও অর্থোপেডিক পুনর্বাসন সেবাকেন্দ্রটি স্থাপন করা হয়।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, বিশ্ব সম্প্রদায় থেকেও প্রশংসিত হচ্ছে। শুধু প্রশংসা করতে পারে না আমাদের দেশের বিএনপিসহ কিছু দল আর কিছু ব্যক্তিবিশেষ। এটি জাতির জন্য দুর্ভাগ্য। যে যা-ই বলুক না কেন, যতই সমালোচনা করুক না কেন, কাজ করলে সমালোচনা হবে। আমরা সমালোচনাকে সমাদৃত করার মানসিকতা পোষণ করি। সেই কারণে আমরা মনে করি, সমালোচনা করলে ক্ষতি নেই। কিন্তু অন্ধের মতো সমালোচনা ভালো নয়, সবকিছুতে না বলার সংস্কৃতি এবং না বলার রাজনীতি রাষ্ট্রের জন্য ভালো নয়।’
হাছান মাহমুদ বলেন, দেশের প্রান্তিক মানুষের কথা ভেবে সর্বজনীন পেনশন–ব্যবস্থা চালু করেছেন প্রধানমন্ত্রী। সর্বজনীন পেনশন–ব্যবস্থার মধ্যে চারটি প্রোগ্রাম আছে। তার মধ্যে একটি প্রোগ্রাম একেবারে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য। তিনি যত টাকা দেবেন, সরকার সমপরিমাণ টাকা সেখানে দিয়ে দেবে। তিনি যদি মাসে এক হাজার টাকা দেন সরকার আরও এক হাজার টাকা দিয়ে দেবে। সামাজিক কল্যাণ রাষ্ট্র গঠন করার ক্ষেত্রে এবং রাষ্ট্রকে মানবিক করার ক্ষেত্রে সর্বজনীন পেনশন–ব্যবস্থা একটি বিরাট উদ্যোগ।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, মানবিক ও সামাজিক কল্যাণ রাষ্ট্র গঠন করার লক্ষ্যেই ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করার পর বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বয়স্ক ভাতা ও বিধবা ভাতা চালু করেছেন। এখন সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ২২ প্রকার ভাতা দেওয়া হয়। প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার মানুষ নানা প্রকারের ভাতা পান। আজ মানুষের স্বপ্নকেও হার মানিয়ে শেখ হাসিনা ছিন্নমূল মানুষকে ঘর করে দিচ্ছেন।
মন্ত্রী বলেন, যে কুষ্ঠ রোগীর পাশে আত্মীয়স্বজনও যান না, যে বেদে সম্প্রদায় নৌকায় বসবাস করে, যারা ঘর বাঁধে না, যে মানুষটি মানুষের দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করত, রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজত, সে কখনো পাকা দালানের স্বপ্ন দেখত না। সে স্বপ্ন দেখত তার যদি একটি দোচালা ঘর হতো, তাদের স্বপ্নকেও হার মানিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা জমির মালিকানাসহ ইতিমধ্যে সাড়ে আট লাখ পাকা টিনশেড ঘর করে দিয়েছেন।
রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি বাংলাদেশের মানুষের আস্থা ও ভালোবাসা অর্জন করেছে উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, দেশে নতুন নতুন বিশ্বমানের হাসপাতাল হচ্ছে, সেখানে সেবার মূল্য এত বেশি যে তা সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। সে জন্য আমাদের সরকার স্বাস্থ্যসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক ও হাসপাতালগুলোর আধুনিকায়ন করেছে। হাসপাতালের অবস্থা আগের চেয়ে অনেক ভালো। রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি এতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে।
সিটি করপোরেশন ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি প্রতিষ্ঠিত অর্থোপেডিক সেন্টার যাতে মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তের একটি জনপ্রিয় আস্থার প্রতীক হয়, সেই কামনা করে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি সেবার মানসিকতা নিয়েই কাজ করে। শুধু প্রতিষ্ঠান দাঁড় করালেই হবে না, সেবার মানটি রক্ষা করে এবং একই সঙ্গে স্বল্পমূল্যের সেবা নিশ্চিত করতে হবে।