রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে চেয়ার ছোড়াছুড়ি। শনিবার সন্ধ্যায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেসিয়ামে | ছবি: সংগৃহীত 

প্রতিনিধি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বিভাগ বাস্কেটবল প্রতিযোগিতার ফাইনাল খেলায় স্লেজিং (কটু কথা) করাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি ও চেয়ার–ছোড়াছুড়ির ঘটনা ঘটেছে। শনিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জিমনেসিয়ামে এ ঘটনা ঘটে।

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বনাম মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে হওয়া মারামারি থামাতে গিয়ে একজন শিক্ষক আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। ওই শিক্ষকের নাম এস এম মোখলেসুর রহমান। তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। তিনি চোখে আঘাত পেয়ে একটি বেসরকারি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অন্তর্বিভাগ বাস্কেটবল ২০২৩–এর ফাইনালে ওঠে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও মার্কেটিং বিভাগ। সন্ধ্যা ছয়টায় খেলা শুরু হয়। খেলার বিরতির পর রাষ্ট্রবিজ্ঞান ২১ পয়েন্ট ও মার্কেটিং বিভাগ ১৯ পয়েন্ট ছিল। একপর্যায়ে দুই পক্ষের শিক্ষার্থীরা নিজ দলের পক্ষ নিয়ে অন্য দলের সমর্থকদের স্লেজিং (কটু কথা) করতে থাকেন। এতে দুই পক্ষের শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে একে অপরের দিকে চেয়ার ছুড়তে শুরু করেন। এ সময় শিক্ষকেরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এগিয়ে গেলে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক এস এম মোখলেসুর রহমান চোখে আঘাত পান। এ ছাড়া অর্ধশতাধিক চেয়ার ভাঙচুর করা হয়েছে। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন খেলাটি স্থগিত ঘোষণা করে।

এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গোলাম সাব্বির সাত্তার, সহ–উপাচার্য সুলতান-উল-ইসলাম ও অধ্যাপক হুমায়ুন কবীর, কোষাধ্যক্ষ অবায়দুর রহমান প্রামাণিক, অন্তর্বিভাগ গেমস সাব কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মো. আবদুল হালিম ও বাংলাদেশ বাস্কেটবল ফেডারেশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খায়রুল আলম।

আহত রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক এস এম মোখলেসুর রহমান বলেন, স্লেজিংয়ের একপর্যায়ে দুই পক্ষের শিক্ষার্থীরা মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের ধাক্কায় নিচে পড়ে যান। পরে দাঁড়ালে দড়ির আঘাতে চোখে আঘাত পান। পরে নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আসাবুল হক বলেন, ‘আপাতত খেলাটি স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে ঘটনা তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ শরীরচর্চা বিভাগের (ভারপ্রাপ্ত) পরিচালক মোহাম্মদ আলী বলেন, অনাকাঙ্ক্ষিত কারণে ফাইনাল খেলাটি স্থগিত করা হয়েছে। পরে খেলাটি হবে কি না প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেবে।

সহ-উপাচার্য সুলতান-উল ইসলাম বলেন, ‘খেলাধুলার মধ্যে বিশৃঙ্খলা কাম্য নয়। আমরা শিক্ষার্থীদের সুন্দর পরিবেশে খেলাধুলার মাধ্যমে সুস্থ বিনোদন দিতে চাই। এ ঘটনায় দুই বিভাগের বেশ কয়েকজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। বিভাগের সভাপতি ও চিহ্নিত ব্যক্তিদের নিয়ে প্রক্টর দপ্তরে বসে সমাধান করা হবে।’