লালপুরে স্কুলছাত্রী অপহরণ ও ধর্ষণের দায়ে তরুণের মৃত্যুদণ্ড, সহযোগীর আমৃত্যু কারাদণ্ড

আদালত | প্রতীকী ছবি

প্রতিনিধি লালপুর: স্কুলছাত্রীকে অপহরণ ও ধর্ষণের দায়ে এক তরুণের মৃত্যুদণ্ড ও অপর একজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল। আজ রোববার দুপুরে ট্রাইবুন্যালের বিচারক (দায়রা জজ) মুহাম্মদ আবদুর রহিম এই আদেশ দেন।

দণ্ডিত দুজন হলেন—নাটোরের লালপুর উপজেলার পোকন্দা গ্রামের মো. সুমন (২৬) ও সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলার ধানকুন্টি গ্রামের রফিকুল ইসলাম (৪৩)। আদালত দুজনকেই ৩০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ডও দিয়েছেন। এই টাকা ভুক্তভোগীকে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ২০১৬ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় ১০ম শ্রেণিপড়ুয়া ওই স্কুলছাত্রী (১৫) বাড়িতে বসে পড়ালেখা করছিলেন। এ সময় আসামি মো. সুমন একটি মাইক্রোবাস নিয়ে বাড়ির সামনে আসেন। এরপর সুমন ও তাঁর সঙ্গে থাকা লোকজন বাড়িতে ঢুকে জোর করে ওই ছাত্রীকে অপহরণ করে সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলার ধানকুন্টি গ্রামের রফিকুল ইসলামের বাড়িতে নিয়ে যান। এ ঘটনায় মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে মো. সুমনসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে লালপুর থানায় মামলা করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা লালপুর থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) আসাদুজ্জামান ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করেন। পরে ওই ছাত্রী আদালতে জবানবন্দি দেন। একই সঙ্গে ডাক্তারি পরীক্ষায় তাঁকে নির্যাতনসহ ধর্ষণের প্রমাণ পাওয়া যায়।

তদন্ত শেষে ২০১৬ সালের ১০ মে ছয় আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। অভিযোগ গঠনের সময় আদালত আসামি মো. সুমন ও রফিকুল ইসলাম ছাড়া বাকি আসামিদের অব্যাহতি দেন। আদালত মোট ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল সূত্রে জানা যায়, আসামি মো. সুমনকে অপহরণ ও ধর্ষণের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড ও ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন আদালত। ধর্ষণে সহযোগিতার দায়ে রফিকুল ইসলামকে আমৃত্যু সশ্রম কারাদণ্ড ও ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। রায় ঘোষণার পর আসামিদের কড়া পাহারায় নাটোর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

ট্রাইবুন্যালের সরকারি কৌঁসুলি আনিছুর রহমান বলেন, অপ্রাপ্তবয়স্ক এক স্কুলছাত্রীকে প্রকাশ্যে অপহরণ করে বাড়িতে আটকে রেখে ধর্ষণ করার ঘটনা ঘটেছিল। সাক্ষ্য প্রমাণে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা দিয়েছেন আদালত। এ রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তবে আসামিরা রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন।