ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আম রপ্তানি বেড়েছে। ২৫ মে রাজধানী ঢাকার শ্যামপুরের কেন্দ্রীয় প্যাকিং হাউসে আম রপ্তানির কার্যক্রম উদ্বোধন হয়। সে থেকে শুক্রবার পর্যন্ত ৭১ দিনে আম রপ্তানি হয়েছে ২ হাজার ৭৫০ টন। যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ১ হাজার টন বেশি। গত বছর রপ্তানি হয়েছিল ১ হাজার ৭৫৭ টন আম।

শুধু রপ্তানি নয়, বেড়েছে বাংলাদেশ থেকে আম আমদানিকারী দেশের সংখ্যাও। গত বছর ২৮টি দেশে আম রপ্তানি হয়েছিল, চলতি বছর আম রপ্তানি হয়েছে ৩৪টি দেশে। এর মধ্যে সিঙ্গাপুর, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, কুয়েত, যুক্তরাজ্য, ইতালি, সুইজারল্যান্ড, জার্মানি, ফ্রান্স, সুইডেন ও কানাডার মতো দেশ রয়েছে। শুক্রবার কৃষি মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা গেছে এ তথ্য।

তবে রপ্তানি বৃদ্ধি পেলেও লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। চলতি বছর ৪ হাজার টন আম রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল সরকার। শুক্রবার পর্যন্ত আম রপ্তানি হয়েছে ২ হাজার ৭৫০ টন। হাতে সময় আছে আর মাত্র ১৫-২০ দিন। এ সময়ের মধ্যে ১ হাজার ২৫০ টন আম রপ্তানি করা যাবে কি না, সে বিষয় নিয়ে চিন্তায় আছেন রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্পের পরিচালক আরিফুর রহমান।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যমতে, দেশে বছরে প্রায় ২৫ লাখ টন আম উৎপাদন হয়। কিন্তু উৎপাদনের তুলনায় রপ্তানির পরিমাণ অনেক কম। ২০১৭-১৮ সালে মাত্র ২৩২ টন, ২০১৮-১৯ সালে ৩১০ টন, ২০১৯-২০ সালে ২৮৩ টন, ২০২০-২১ সালে ১ হাজার ৬৩২ টন, ২০২১-২২ সালে ১ হাজার ৭৫৭ টন আম রপ্তানি হয়েছে।

কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের আমের বিপুল চাহিদা থাকলেও উত্তম কৃষিচর্চাসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে আম উৎপাদন ও প্যাকেজিং না হওয়ায় রপ্তানির পরিমাণ কম।

প্রকল্প পরিচালক আরিফুর রহমান বলেন, ’চলতি বছর আরও ১৫-২০ দিন আম রপ্তানি হবে। আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ হাজার টন। এটি হয়তো পূরণ করা সম্ভব হবে না। এ বছর যেহেতু প্রথম কাজ করা হচ্ছে এটি তো চলতে থাকবে। আমরা মৌসুমের পরেও বাজার খুঁজব। যাতে আগামী বছর রপ্তানির পরিমাণ বাড়ানো যায়।’

রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের সমস্যা সম্পর্কে তিনি বলেন, ’বাজার অনুসন্ধানের কাজ মূলত বাণিজ্য ইউংয়ের। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আমাদের যেসব দূতাবাস আছে, সেসব কর্মকর্তাদের। তারা বাজারের সন্ধান দেবে। আমরা রপ্তানি করব। তা ছাড়া ভারত ও পাকিস্তানে কেজিপ্রতি কার্গো খরচ ১৩০-১৫০ টাকা, সেখানে আমাদের দেশে ২০৫-২২০ টাকা। এই বাড়তি খরচের জন্যও আমরা পিছিয়ে পড়ছি।’

গ্লোবাল ট্রেড লিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাজিয়া সুলতানা প্রতিদিনের বাংলাদেশকে জানান, গত বছর তিনি ৭০ টন আম রপ্তানি করেছিলেন। এ বছর এখন পর্যন্ত ৫০ টন আম রপ্তানি করেছেন। আগে ১৫-২০ জন আম রপ্তানি করত। রপ্তানির জন্য সংগঠনের সদস্য হতে হতো। মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার ফলে সে শর্ত তুলে নেওয়া হয়েছে। এতে করে রপ্তানিকারকের সংখ্যা ৭০ জনে পৌঁছেছে।

আমের রপ্তানি বৃদ্ধিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কী ধরনের কাজ করছে—জানতে চাইলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের রপ্তানি অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) আবদুর রহিম খান বলেন, ’বিশ্বের ২১টি দেশে আমাদের বাণিজ্য উইং রয়েছে। এসব দেশের সঙ্গে আমরা যখন আলোচনা করি, তখন কৃষিপণ্যের বিষয়গুলো থাকে। ৮ আগস্ট যুক্তরাজ্যের সঙ্গে একটি জয়েন্ট পার্টনার মিটিং আছে, সেখানেও আমাদের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।’