বনানীর সেতু ভবনের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন ওবায়দুল কাদের | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

নিজস্ব প্রতিবেদক: সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দেশের প্রথম ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের একাংশ যান চলাচলের জন্য প্রস্তুত।  আগামী ২ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধনের এক দিন পরই যানবাহন চলাচল করতে পারবে।

সেতুমন্ত্রী আজ সোমবার আরও বলেন, আগামী ২৮ অক্টোবর কর্ণফুলী টানেলের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। আর অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে দেশের প্রথম মেট্রোরেল এমআরটি লাইন৬–এর আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত উদ্বোধন হবে।

আজ সকালে রাজধানীর বনানী সেতু ভবনে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমনটি জানিয়েছেন সেতুমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাওলা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত সাড়ে ১১  কিলোমিটার উড়ালসড়ক প্রথম দফায় যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। প্রথম দফায় ১৩ র‍্যাম্প খুলে দেওয়া হবে।’

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, এক্সপ্রেসওয়েটিতে যানবাহনের সর্বোচ্চ গতি নির্ধারণ করা হয়েছে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার। সিএনজিচালিত অটোরিকশার মতো দুই ও তিন চাকার কোনো যানবাহন এই উড়ালসড়কে চলতে পারবে না। মোটরসাইকেল আপাতত বন্ধ থাকবে।

সেতুমন্ত্রী জানান, ২ সেপ্টেম্বর আগারগাঁও পুরোনো বাণিজ্য মেলা মাঠে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধনের পর সুধী সমাবেশ করবেন প্রধানমন্ত্রী।

বিমানবন্দর থেকে চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত ৪৬ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ চলছে তিন ভাগে। এর মধ্যে মূল উড়ালসড়কের দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। তা ছাড়া ২৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ৩১টি র‍্যাম্প আছে উড়ালসড়ক থেকে বিভিন্ন জায়গার ওঠা এবং নামার জন্য।

ঢাকা শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণে নির্বিঘ্নে চলাচলের  জন্য ২০১১ সালের জুন মাসে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করা হয়েছিল। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব (পিপিপি) আওতায় প্রকল্পটির ২০১৬ সালে শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু উড়ালসড়কের নকশা বদল, ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা, অর্থের সংস্থানসহ নানা জটিলতায় নির্মাণকাজ শেষ করার সময়সীমা পাঁচবার পিছিয়েছে।

প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে উড়ালসড়কের নির্মাণকাজ শেষ করার প্রথম সময়সীমা ছিল ২০১৭ সাল। সেটি পিছিয়ে হয় ২০১৮। তারপর আবারও পিছিয়ে হয়েছে ২০২২ সাল। এই সময়ে কাজ শেষ না হওয়ার চতুর্থবার সেই সময়সীমা পিছিয়ে দাঁড়ায় ২০২৩ সালের জুনে। তবে সর্বশেষ পুরো প্রকল্পের কাজ ২০২৪ সালের জুনে শেষ করার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।

এদিকে শুরুতে উড়ালসড়ক নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ৮ হাজার ৭০৩ কোটি টাকা। ২০১৩ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৮ হাজার ৯৪০ কোটি টাকায়। এরপর কাজের ধীরগতির সঙ্গে বাড়তে থাকে প্রকল্পের মেয়াদ। এতে প্রকল্প বাস্তবায়নে সর্বশেষ ট্যাক্স, ভ্যাটসহ প্রকল্পটির ব্যয় বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ১৬ হাজার কোটি ৭০ লাখ ৭ হাজার ১৫৩ টাকা।

ফার্স্ট ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (এফডিইই) কোম্পানি লিমিটেড হচ্ছে বিনিয়োগকারী কোম্পানি। এতে ইতালিয়ান থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেডের ৫১ শতাংশ, চায়না শানডং ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল কো-অপারেশন গ্রুপের (সিএসআই) ৩৪ শতাংশ এবং সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেডের ১৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।

বনানীর সেতু ভবনের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন ওবায়দুল কাদের | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

কর্ণফুলী টানেল
সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আজ বলেন, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণ হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল। আগামী অক্টোবর মাসের ২৮ তারিখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই টানেলের উদ্বোধন করবেন।

তিনি আরও জানান, দেশের প্রথম মেট্রোরেল এমআরটি লাইন৬–এর আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত উদ্বোধন হবে অক্টোবর মাসের মাঝামাঝিতে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মতিঝিল মেট্রোরেলের উদ্বোধন করবেন।