ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু | প্রতীকী ছবি

প্রতিনিধি রাজশাহী: কোচিংয়ের জন্য মেয়েকে রিকশা থেকে রাস্তায় নামিয়ে দিলেন বাবা। রেললাইন পার হয়ে সে কোচিং করতে যাবে। কিন্তু ট্রেনের ধাক্কায় রেললাইনের পাশে পড়ে যায় মেয়েটি। বাবা জানতেও পারলেন না, তাঁর মেয়ের কোচিং করতে যাওয়া হয়নি।

স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজশাহী নগরের কাদিরগঞ্জ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ওই মেয়ের নাম মনিকা তাবাসসুম ওরফে চৈতি। বাবার নাম মনিরুল ইসলাম। বাড়ি রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার মহিশালবাড়ী এলাকায়। নগরের কাশিয়াডাঙ্গা থানার হড়গ্রাম নতুনপাড়া এলাকায় থাকেন তাঁরা। মনিকা রাজশাহী নগরের প্রমথনাথ (পিএন) সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।

রাজশাহী রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোপাল কর্মকার বলেন, শিশুটি প্রতিদিন সকালে কোচিং করতে আসে। কোনো কোনো দিন তার সঙ্গে আসেন স্বজনদের কেউ। কেউ না এলে একাই এসে পড়ে চলে যায়। আজ সকালে তার বাবা তার সঙ্গে এসেছিলেন। বাবা পুলিশের চাকরি করেন। মেয়েকে নগরের কাদিরগঞ্জের কদমতলার মোড়ে নামিয়ে দিয়ে তিনি চলে যান। সকাল ৬টা ৪৫ মিনিট থেকে ৫০ মিনিটের মধ্যে দুর্ঘটনাটি ঘটে।

মেয়েটির এক সহপাঠীর বাবা আক্তারুজ্জামান কদমতলার মোড়ের বাসিন্দা। তিনি বলেন, মেয়েটির বাবা দিনাজপুরে নতুন বদলি হয়েছেন। তিনি নতুন কর্মস্থলে যেতে ব্যস্ত ছিলেন। মেয়েকে রাস্তায় নামিয়ে দিয়ে তিনি চলে যান। মেয়ে রিকশা থেকে নেমে রেললাইন পার হচ্ছিল। প্রথম লাইন পার হয়ে দ্বিতীয়টা পার হচ্ছিল। এমন সময় রাজশাহী থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জগামী ‘আই-আর’ ট্রেনটি তাকে ধাক্কা দেয়। এতে সে রাস্তার পাশে ছিটকে পড়ে যায়। তখনো সে বেঁচে ছিল। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। তাকে ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখান থেকে আইসিইউতে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছিল। এর মধ্যে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

আক্তারুজ্জামান বলেন, সকাল নয়টায় হাসপাতালে তিনি লাশ দেখতে গিয়েছিলেন। তখনো তার বাবাকে দেখতে পাননি। হয়তো তার পরে তিনি আসতে পারেন। ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ নেওয়ার জন্য স্বজনেরা চেষ্টা করছিলেন। বেলা দুইটার দিকে হাসপাতাল থেকে লাশ পরিবারের কাছ হস্তান্তর করা হয়। বিকেল পাঁচটায় গোদাগাড়ী মহিশালবাড়ীতে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।