কোনো ওয়েবসাইটে একসঙ্গে একাধিক ডিভাইসের মাধ্যমে ট্রাফিক পাঠিয়ে ওই সাইটের গতি ধীর বা ডাউন করে দেওয়াকে ডিডস (ডিস্ট্রিবিউটেড ডিনায়েল অব সার্ভিস) আক্রমণ বলা হয়। এ ধরনের আক্রমণ হলে সংশ্লিষ্ট সাইটে প্রবেশ করা যায় না।
প্রতীকী ছবি |
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা: দেশে সাইবার হামলার হুমকি দেওয়ার পর ইতিমধ্যে কিছু ওয়েবসাইটে ডিডস হামলা চালিয়েছে হ্যাকার দল। এখনো হামলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তারা। হামলার বিষয়ে সতর্কতা জারির পর আজ রোববার পর্যন্ত ১২টি প্রতিষ্ঠান সরকারের কম্পিউটার ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিমের (বিজিডি ই-গভ সার্ট) কাছে পরামর্শ চেয়েছে।
গত শুক্রবার বিজিডি ই-গভ সার্ট এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দেশে সাইবার হামলার আশঙ্কার কথা জানিয়ে সতর্কতা জারি করে। তাতে বলা হয়, ১৫ আগস্ট বাংলাদেশের সাইবার–জগতে সাইবার আক্রমণের ঝড় চালানোর হুমকি এসেছে। হুমকিদাতা হ্যাকার গোষ্ঠী নিজেদের ‘হ্যাকটিভিস্ট’ দাবি করে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানকে হামলার লক্ষ্য বানানোর ঘোষণা দিয়েছে। নিজেদের ভারতীয় হ্যাকার গোষ্ঠী বলে দাবি করে ওই হুমকিদাতারা।
সতর্কতা জারি নিয়ে আজ বিজিডি ই-গভ সার্ট প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল আলম খান বলেন, সংশ্লিষ্টরা যাতে নিজ নিজ ক্ষেত্রে সুরক্ষিত থাকতে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারে, সে জন্যই সতর্কতা জারি করা হয়। সতর্কতা জারির পর থেকে আজ পর্যন্ত ১২টি প্রতিষ্ঠান তাদের কাছে পরামর্শ চেয়েছে। সাইবার নিরাপত্তায় কী করা উচিত, কী করা যায়—এসব বিষয়ে জানতে চেয়েছে এসব প্রতিষ্ঠান।
নিরাপত্তাবিশেষজ্ঞদের সূত্রমতে, হ্যাকার দল দেশের বিভিন্ন সংস্থার ওয়েবসাইটে ডিডস হামলা চালিয়ে সাইটগুলো ডাউন করে রেখেছিল। কোনো ওয়েবসাইটে একসঙ্গে একাধিক ডিভাইসের মাধ্যমে ট্রাফিক পাঠিয়ে সাইটের গতি ধীর বা ডাউন করে দেওয়াকে ডিডস (ডিস্ট্রিবিউটেড ডিনায়েল অব সার্ভিস) আক্রমণ বলা হয়। এ ধরনের আক্রমণ হলে সংশ্লিষ্ট সাইটে প্রবেশ করা যায় না। গতকাল শনিবার সরকারের চারটি সংস্থার ওয়েবসাইট কিছু সময়ের জন্য ডাউন করে রাখা হয়েছিল।
এ বিষয়ে সাইফুল আলম খান বলেন, এই হ্যাকার দল ডিডস হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। শুক্রবার ও শনিবারও তারা দেশের কিছু সংস্থার ওয়েবসাইটে ডিডস হামলা চালিয়েছে। তিনি আরও বলেন, হ্যাকাররা কোন দেশের, তা চিহ্নিত করা গেছে, তবে তাদের আইপি ঠিকানা এবং তারা কারা, তা খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। এ ছাড়া তিনি জানান, সতর্কতা জারির পর থেকে সন্দেহজনক কিছু নিয়ে কোনো সংস্থা যোগাযোগ করেনি।
দেশজুড়ে সতর্কতা জারির বিষয়ে বিজিডি ই-গভ সার্ট প্রকল্প পরিচালক সাইফুল আলম খান বলেন, ‘আমরা যদি শুধু সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে অভ্যন্তরীণভাবে সতর্ক করতাম, তাহলে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি পর্যায়েও মানুষ জানতে পারত না। হ্যাকাররা সব সময়ই হামলার লক্ষ্য খুঁজতে থাকে। এটা জাতীয় নিরাপত্তার ইস্যু। সার্ট থেকে সতর্কতা জারি করা হয়েছে, যাতে সবাই সতর্ক থাকে এবং নিজেদের নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করে।’
এদিকে বিজিডি ই-গভ সার্ট সতর্কতা জারির পর বাংলাদেশ ব্যাংকও দেশের
ব্যাংকগুলোকে সতর্ক থাকতে নির্দেশ দিয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের সূত্র
জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচ বাংলাদেশ (এনপিএসবি),
রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট (আরটিজিএস), বাংলাদেশ অটোমেটেড ক্লিয়ারিং হাউস
(বিএসিএইচ), ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফারের (ইএফটি) মতো সেবা যেসব ব্যাংক
নিয়ে থাকে, তাদের সঙ্গে আগামীকাল সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ে করণীয় নিয়ে
পরামর্শ সভা হবে।