ছাত্রলীগ নেতা মুশফিক তাহমিদ ওরফে তন্ময় | ছবি: সংগৃহীত 

প্রতিনিধি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি জালিয়াতি ও ভর্তি–ইচ্ছুক এক শিক্ষার্থীকে ‘প্রক্সি চুক্তির’ টাকার জন্য আটকে রেখে মুক্তিপণ দাবির ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগ নেতা মুশফিক তাহমিদ ওরফে তন্ময়ের ক্যাম্পাসে অবস্থানে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে প্রশাসন। বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবদুস সালাম স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আদেশে বলা হয়, ‘ভর্তি জালিয়াতি ও ভর্তি–ইচ্ছুক এক শিক্ষার্থীকে অর্থের বিনিময়ে অসদুপায় অবলম্বনের মাধ্যমে ভর্তি হতে সহায়তাকারী প্রাক্তন ছাত্র মুশফিক তাহমিদ তন্ময়কে ক্যাম্পাসে অবস্থান না করার নির্দেশ দেওয়া হলো।’

বুধবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘তন্ময়ের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব নেই। তাই তাঁকে বহিষ্কার করা সম্ভব হয়নি। তাঁর বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা হয়েছে। তিনি পলাতক। আইনি প্রক্রিয়ায় পুলিশ যেকোনো সময় তাঁকে গ্রেপ্তার করতে পারে। তাই তিনি যেন বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান করতে না পারেন, এ জন্য নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।’

নিষেধাজ্ঞা পাওয়া মুশফিক তাহমিদ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও সৈয়দ আমীর আলী হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন। তবে তিনি শাহ মখদুম হলে থাকেন বলে জানিয়েছেন হলটির শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে শাহ মখদুম হলের প্রাধ্যক্ষ রুহুল আমিন বলেন, ‘তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র না; তবু ছাত্রলীগের পদধারী হওয়ায় ক্ষমতার দাপটে হলে থাকতেন। এর আগে আমরা অনেকবার তাঁকে হল ত্যাগ করতে বলেছি। কিন্তু তিনি শোনেননি। সম্প্রতি তাঁর কক্ষটি আমরা সিলগালা করে দিয়েছি। তাঁর আর হলে থাকার সুযোগ নেই।’

গত বৃহস্পতিবার ছাত্রলীগ নেতা মুশফিক তাহমিদসহ চার নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি, অপহরণ ও তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবির অভিযোগ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় শুক্রবার তাঁদের বিরুদ্ধে নগরের মতিহার থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়। এর মধ্যে একটি মামলা পাবলিক পরীক্ষা (অপরাধ) আইনে করা হয়। অন্য মামলাটি করা হয়েছে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে। পরে শনিবার রাতে ছাত্রলীগ নেতা মুশফিক তাহমিদসহ চারজনকে সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। তা ছাড়া এ ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে তিন শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তাঁরা তিনজনই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী। অন্যদিকে অসদুপায় অবলম্বন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থী আহসান হাবীবের ভর্তি বাতিল করা হয়।