ইসরায়েলি নাগরিক মেন্দি এন সাফাদি ও গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর | ছবি: সংগৃহীত |
নিজস্ব প্রতিবেদক: চলার পথে ভুলভ্রান্তি হলে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এজেন্ট হিসেবে পরিচিত দেশটির নাগরিক মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের করা প্রশ্নে এভাবেই ক্ষমা চান তিনি।
মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচি’ নিয়ে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির সঙ্গে গণঅধিকার পরিষদের প্রতিনিধিদের বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপির ঘোষণা করতে যাওয়া এক দফা দাবিতে আন্দোলনে যোগ দেবে গণঅধিকার পরিষদও। সে নিয়েই আজ বৈঠক হয়। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের কাছে বৈঠকে হওয়া বিভিন্ন সিদ্ধান্ত জানান দুই দলের নেতারা।
এ সময় ইসরায়েলি নাগরিক মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে কৌশলে জবাব দেন নুরুল হক নুর। তিনি বলেন, ‘চলার পথে ভুলভ্রান্তি হলে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। গণঅধিকার পরিষদের নির্বাচিত নেতৃত্ব হিসেবে আরও দায়িত্বশীল, সচেতন ও সতর্ক থেকে, দেশ ও জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ থেকে দেশের সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ণ রাখতে আমাদের জীবন উৎসর্গ করতে কার্পণ্য করব না। দেশের গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় কখনও কোনো অপশক্তির সঙ্গে আপস করব না।’
গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর দুবাইয়ের সিটি মলে স্টারবাকস কফিশপে আনুমানিক বেলা ৩টায় মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে বৈঠক করার অভিযোগ ওঠে নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে।
তবে যতবারই সাফাদির সঙ্গে বৈঠকের কথা উঠেছে, ততবারই অস্বীকার করেছেন নুর। সম্প্রতি সাফাদির সঙ্গে বৈঠকের আগে-পরে তোলা নুরের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সেই সঙ্গে গণঅধিকার পরিষদের আরেক নেতা ও সাবেক আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়াও সাফাদির সঙ্গে নুরের বৈঠক হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন। এমনকি বৈঠকের পর নুর বিপুল পরিমাণ অর্থ সাফাদির কাছ থেকে পেয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন রেজা কিবরিয়া।
ফলে নতুন করে আবারও বিতর্ক ওঠে নুরকে নিয়ে। এর আগে কখনোই নুর স্বীকার না করলেও এবার কৌশলে উত্তর দিয়েছেন।
আজ বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে দলটির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর নেতৃত্বে ছিলেন দলের যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। অন্যদিকে গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নুর, সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ, শহিদুল ইসলাম ফাহিম, ফাতিমা তাসনিম, আব্দুল জাহের, নুরে এরশাদ সিদ্দিক, সাবেক যুগ্ম সদস্য সচিব মশিউর রহমান ও তৌফিক শাহরিয়ার অংশ নেন।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পতন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে বিএনপির এক দফা আন্দোলনে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যায় নুর বলেন, ‘আমাদের সামনে এক দফার কোনো বিকল্প নেই। এক দফা হচ্ছে অবৈধ ও ভোটারবিহীন সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। বর্তমান সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে। নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। এই এক দফার বাইরে আপাতত আমাদের কোনো বিকল্প নেই।’
তবে আগামী জাতীয় নির্বাচনে গণঅধিকার পরিষদ এককভাবে নাকি জোটগতভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে, তা নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান নুর।