কোমর থেকে নীচ পর্যন্ত বেধড়ক পিটিয়েছে: গয়েশ্বর

পুলিশের কাছ থেকে ছাড়া পাওয়ার পর নয়াপল্টনে নিজের কার্যালয়ে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

নিজস্ব প্রতিবেদক: পুরান ঢাকার ধোলাইখাল পুলিশ ও বিএনপি নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষে আহত দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। তাঁকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) কার্যালয়ে নেওয়ার পর ছেড়ে দেওয়া হয়।

ডিবি কার্যালয় থেকে বের হচ্ছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

এদিকে কার্যালয়ে পৌঁছে সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপকালে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘সংঘর্ষের সময় আমার মাথা ফেটে গেছে, আমি রক্তাক্ত হয়ে পড়েছি। পরে কোমর থেকে নিচ পর্যন্ত বেধড়ক পিটিয়েছে। সেখান থেকে পুলিশ ধরে নিয়ে রাজারবাগের পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়েও নেওয়া হয়েছিল। এখন অফিসে নামিয়ে দিয়ে গেলো।’

শারীরিক অবস্থা এখন কেমন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ইনজুরি হওয়ার পর সুস্থ হতে সময় লাগবে। এখন স্যালাইন দিতে হবে।’

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ডিবির প্রধান হারুন অর রশিদ | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

ধোলাইখালে আজ শনিবার বেলা ১২টার দিকে পুলিশের পিটুনির শিকার হন গয়েশ্বর। সেখান থেকে পুলিশ তাঁকে তুলে নেয়। ডিবি কার্যালয়ে নেওয়ার পর বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারের উপ-কমিশনার ফারুক হোসেন বলেন, গয়েশ্বরকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

পিটুনির এক পর্যায়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় রাস্তায় পড়ে যান। ঢাকা, ২৯ জুলাই  | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

ঢাকার চারটি প্রবেশমুখে বিএনপির অবস্থান কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ সকাল ১১টার দিকে ধোলাইখালে জড়ো হয়েছিলেন দলের নেতা-কর্মীরা। সেখানে তাঁরা স্লোগান দিচ্ছিলেন। আধা ঘণ্টা পর পুলিশ তাঁদের ধাওয়া দেয়। বিএনপির নেতা-কর্মীরাও পাল্টা ধাওয়া দেন। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এ সময় পুলিশকে ফাঁকা গুলি ও কাঁদানে গ্যাস (টিয়ারগ্যাস) ছুড়তে দেখা গেছে।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বিএনপির নেতা-কর্মীদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করছিলেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, সংঘর্ষের একপর্যায়ে গয়েশ্বরকে লাঠি দিয়ে পেটান পুলিশের কয়েকজন সদস্য। এতে গয়েশ্বর রাস্তায় পড়ে যান। তখনো তাঁকে লাঠি দিয়ে পেটানো হয়। আরও মারতে গেলে কয়েক জন পুলিশ সদস্য বাকিদের বাধা দেন।

একপর্যায়ে পুলিশ সদস্যরা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে একটি দোকানের ভেতরে নিয়ে যান। সেখানে তাঁকে ১০ মিনিটের মতো রাখা হয়। তখন পুলিশের একটি গাড়ি আসে। গাড়িতে করে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়।

যাওয়ার সময় গয়েশ্বরের মাথা থেকে রক্ত ঝরতে দেখা যায়। পুলিশ সদস্যরা বলেন, চিকিৎসার জন্য তাঁকে (গয়েশ্বর) নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

ধোলাইখালে আজ শনিবার বেলা ১২টার দিকে পুলিশের পিটুনির শিকার হন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। ঢাকা, ২৯ জুলাই | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

এর আগে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ চলে। এতে দুই পক্ষের অনেকেই আহত হন। দুপুর ১২টার দিকে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ধোলাইখাল থেকে ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয়। এর পৌনে এক ঘণ্টা পর লাঠিসোঁটা হাতে ধোলাইখালে এসে মিছিল করেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।

ধোলাইখাল থেকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে পুলিশ নিয়ে যাওয়ার সময় তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন বিএনপির এক কর্মী | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন