ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদলের সদস্যরা গাড়িতে উঠলে বিভিন্ন দাবিদাওয়া লেখা কাগজ নিয়ে তাঁদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
নিজস্ব প্রতিবেদক: অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রাক্-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল। আজ মঙ্গলবার দুপুরে প্রায় এক ঘণ্টা অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে বৈঠক করেন তাঁরা। সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় অবস্থিত অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে বৈঠক হয়। সেখানে দেশের প্রচলিত বিভিন্ন আইন নিয়ে কথা হয়েছে বলে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
এদিকে বৈঠক চলাকালে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের নিচতলার প্রবেশপথের সামনে অবস্থান নেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা। এ সময় ‘নো মোর হাসিনা’, ‘উই ওয়ান্ট ডেমোক্রেসি’, ‘উই ওয়ান্ট কেয়ারটেকার’, ‘উই ওয়ান্ট ভোটিং রাইটস’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন তাঁরা। বৈঠক শেষে বিকেল পৌনে তিনটার দিকে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় থেকে বেরোনোর সময় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ ও মোহাম্মদ মেহেদী হাছান চৌধুরী।
ইউরোপীয় নিউনিয়নের প্রতিনিধিদলের সদস্যরা আজ সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে গিয়ে তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের আইন বিষয়ে জানতে চান | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
ইইউ প্রতিনিধিদল অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের নিচতলার প্রবেশপথ দিয়ে বের হন। এ সময় আগে থেকে সেখানে থাকা বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা কাগজে হাতে লেখা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড নিয়ে ‘নো মোর হাসিনা’ ও ‘ইউ ওয়ান্ট কেয়ারটেকার’সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। ইইউর প্রতিনিধিদলের সদস্যরা গাড়িতে উঠলে স্লোগানের পাশাপাশি গাড়ি ঘিরে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড নিয়ে তাঁদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেন তাঁরা। এ সময় ‘রিস্টোর ডেমেক্রেসি ইন বাংলাদেশ’, ‘ডিএসএ আ ব্ল্যাক ল’ ও ‘নো ইলেকশন আন্ডার হাসিনা’—কাগজে লেখা এমন প্ল্যাকার্ড বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের হাতে দেখা যায়। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন, আইনবিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল ও জাতীয়াতাবাদী আইনজীবী ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক গাজী কামরুল ইসলামসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের একাধিক সূত্র জানায়, বেলা দুইটার দিকে ইইউর প্রতিনিধিদলের সদস্যরা অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে আসেন। পরে সম্মেলন কক্ষে বৈঠক হয়। ইইউর প্রতিনিধিদলের বৈঠকে অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর, শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ ও মোহাম্মদ মেহেদী হাছান চৌধুরী ছিলেন।
বৈঠক শেষে নিজ কার্যালয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্বাচনী আইনসংক্রান্ত বিষয়ে কথা বলেছেন। প্রচলিত আইন কী, কীভাবে প্রয়োগ হয়—এ বিষয়ে প্রতিনিধিদলের সদস্যরা জানতে চান। নির্বাচনের সময়ে আমাদের আরপিও, ফৌজদারি ও দেওয়ানি যে আইনগুলো আছে এবং নাগরিকদের অধিকারসংক্রান্ত যে আইনগুলো আছে—সেগুলো সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। বাংলাদেশের বিভিন্ন আইন সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। আইনে কী আছে—আমি তা বলেছি।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘আইনগুলো নিয়ে জানতে চেয়েছেন, আইন বিষয়ে প্রতিনিধিদলকে জানিয়েছি।’ বিদ্যমান আইন নিয়ে প্রতিনিধিদলের কোনো অভিযোগ আছে কি না—এমন প্রশ্নে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘এ নিয়ে তারা কোনো মন্তব্য করেননি।’
বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণে জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশ ও নির্বাচনপূর্ব রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনায় ইইউর নির্বাচনসংক্রান্ত তথ্যানুসন্ধানী দলটি গত শনিবার ১৬ দিনের সফরে ঢাকায় আসে। তারা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে বৈঠক করছে।
ঢাকা সফরের পর প্রতিনিধিদলটি যে প্রতিবেদন দেবে, তার ওপর ভিত্তি করে আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইইউ পূর্ণাঙ্গ পর্যবেক্ষক দল পাঠানোর বিষয়ে ইউরোপীয় কমিশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট জোসেপ বোরেল আগামী সেপ্টেম্বরে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবেন।