মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার জন্য প্রচারণা চালাচ্ছেন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির স্বেচ্ছাসেবকেরা। শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে পিরোজপুর সদর উপজেলার কলাখালী গ্রামে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি পিরোজপুর: পিরোজপুরের বলেশ্বর নদের মধ্যে জেগে ওঠা দুটি চরের বাসিন্দারা স্থানীয় আশ্রয়কেন্দ্রে গবাদিপশু ও হাঁস–মুরগি নিয়ে উঠেছেন। তবে লোকালয়ের আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে মানুষের উপস্থিতি কম। গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে মানুষকে নিকটস্থ আশ্রয়কেন্দ্রে ও নিরাপদ স্থানে যাওয়ার জন্য রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কমিটির (সিপিপি) স্বেচ্ছাসেবকেরা মাইকিং করছেন। মধ্যরাতে কোথাও কোথাও আকাশে মেঘের গর্জন শোনা গেছে। সন্ধ্যার পর থেকে গুমোট আবহাওয়া বিরাজ করছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বলেশ্বর নদের মঠবাড়িয়া উপজেলার মাঝের চর ও ইন্দুরকানি উপজেলার সাউথখালী চরের কয়েক শ মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন। গতকাল বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত চর দুটির বাসিন্দারা গবাদিপশু ও হাঁস–মুরগি নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছেন। তবে জেলার বেশির ভাগ আশ্রয়কেন্দ্রে শনিবার দিবাগত রাত আড়াইটা পর্যন্ত মানুষের উপস্থিতি খুবই কম ছিল।

মঠবাড়িয়ার মাঝের চরের বাসিন্দা মো. সালাউদ্দিন বলেন, মাঝের চরের ৪০০ বাসিন্দা চরের আশ্রয়কেন্দ্রে নিরাপদে রয়েছেন। মোখার প্রভাবে সন্ধ্যার পর থেকে গুমোট আবহাওয়া বিরাজ করছে। রাত একটা থেকে দুইটা পর্যন্ত আকাশে মেঘের গর্জন শোনা গেছিল।

মাঝের চরের বাসিন্দা সুখী বেগম বলেন, ‘শনিবার সন্ধ্যার পর হাঁস–মুরগি নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছি। পরিবেশ স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এখানে থাকব।’

বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির পিরোজপুর ইউনিটের প্রশাসনিক সংগঠন ও নিয়োগ বিভাগের প্রধান নাসিফ জাহাঙ্গীর বলেন, ‘শনিবার সন্ধ্যা থেকে রাত দুইটা পর্যন্ত আমাদের দল পিরোজপুর সদর উপজেলার শারিকতলা, ডুমুরিতলা, কলাখালী, হুলারহাট এলাকাসহ কঁচা নদীর তীরের গ্রামগুলোতে মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্র ও নিরাপদ স্থানে যাওয়ার জন্য মাইকিং করে প্রচারণা চালিয়েছে। তবে এসব এলাকার আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে মানুষের উপস্থিতি খুবই কম। ঝোড়োবাতাস ও বৈরী আবহাওয়া শুরু না হওয়ায় মানুষের মধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার প্রবণতা এখনো কম।’

নাসিফ জাহাঙ্গীর আরও বলেন, চরের বাসিন্দারা অনেক সতর্ক। স্থানীয় প্রশাসন তৎপর থাকায় ইন্দুরকানি উপজেলার সাউথখালী চরের বেসরকারি প্রাইমারি স্কুল কাম সাইক্লোন শেল্টারে শনিবার দুপুর থেকে চরের মানুষ আশ্রয় নিতে শুরু করেছেন।

পিরোজপুর জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার কফিল উদ্দিন মাহামুদ বলেন, মোখা মোকাবিলায় জেলার সাত উপজেলায় ৪০৭টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জেলায় ৬৯টি চিকিৎসক দল গঠন করা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির স্বেচ্ছাসেবক ও ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) সদস্যদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া জেলা ও প্রতিটি উপজেলায় নিয়ন্ত্রণকক্ষ খোলা হয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও স্বেচ্ছাসেবকেরা মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে প্রচারণা চালাচ্ছেন।