সাঈদ হাসান | ছবি: সংগৃহীত |
প্রতিনিধি রাজশাহী: রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পথে প্রার্থী হওয়ার কথা ভাবছেন মহানগর বিএনপির সাবেক নেতা সাঈদ হাসান। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা জানান। তবে তিনি এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি।
সাঈদ হাসান বলেন, ইতিবাচকভাবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা ভাবছেন। পরিবেশ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কি না, সেটাও দেখছেন। সব মিলিয়ে পরে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।
সাঈদ হাসান বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নাদিম মোস্তফার ভাই। ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির থেকে মনোনয়ন ফরম তুলেছিলেন সাঈদ।
রাজশাহী সিটি নির্বাচনে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও জাতীয় পার্টি প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে। টানা চারবারের মতো আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান। ইসলামী আন্দোলন রাজশাহী মহানগর কমিটির সহসভাপতি মুরশিদ আলম ফারুকীকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। আর জাতীয় পার্টি মহানগর কমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামকে আজ প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত করেছে।
আওয়ামী লীগের অধীনে সিটি নির্বাচনসহ সব ধরনের নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। দলটি নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে। সেই সঙ্গে দল থেকে কঠোর নির্দেশনা আছে, নির্বাচনে অংশ নিলে তাঁদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এরই মধ্যে রাজশাহীতে বিএনপির কেউ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ইচ্ছা পোষণ করলেন। যদিও কয়েক দিন ধরে রাজশাহীতে বিএনপি থেকে প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, সাঈদ রাজশাহী কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন। পরে তিনি রাজশাহী কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি হন। পরে মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি হন তিনি। ২০১১ সালে মহানগর বিএনপির কমিটিতে মিজানুর রহমান সভাপতি ও শফিকুল হক সাধারণ সম্পাদক হলে ওই কমিটি যুগ্ম সম্পাদক হন সাঈদ। ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী-২ (সদর) আসনে বিএনপির মনোনয়ন ফরম তোলেন দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান ও সাঈদ। বিএনপি দুজনকেই মনোনয়ন দেয়। রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে দুজনই মনোনয়ন ফরম দাখিল করেন। পরে মিনুর প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা হলে সাঈদ নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন। সাঈদের ভাই নাদিম রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। সাঈদ বর্তমানে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চালান।
বিএনপির নির্বাচন বর্জনের মধ্যে হঠাৎ নির্বাচন করার কারণ জানতে চাইলে সাঈদ হাসান বলেন, ‘হঠাৎ করে ঠিক না। এর আগেও আমি চেষ্টা করেছি। ২০০২ সালে মিজানুর রহমান মিনুকে যখন দ্বিতীয়বার সিটি মেয়রের মনোনয়ন দেওয়া হয়, তখনো চেষ্টা করেছিলাম, পোস্টার মেরেছিলাম ভোট করার জন্য।’ বিএনপি থেকে কোনো চাপ আসবে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘চাপ বা বাধা আসবে। বিএনপির সবার সঙ্গেও যোগাযোগ আছে। দেখা যাক, পরিবেশ পরিস্থিতি বলে দেবে।’
সাঈদের প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান বলেন, ‘এটা ভুয়া কথা। এটা হতে পারে না। আমাদের দলের কেউ নির্বাচন করবে না, এটা আমার বিশ্বাস। এভাবেই রাজশাহীতে দল গড়ে তোলা হয়েছে। এই নির্বাচন তিনি (সাঈদ) করবেন না, এটা আমার বিশ্বাস।’
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা এরশাদ আলী বলেন, ‘তিনি অনেক দিন আগে বিএনপিতে ছিলেন। এখন কোনো কমিটিতে নেই। সক্রিয়ও নন। বর্তমানে বিএনপির সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পর্ক নেই। আমরা বর্তমান সরকারের অধীনে সব ধরনের নির্বাচন বর্জন করেছি। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নেবে বিএনপি।’