কৃষিপ্রযুক্তি মেলার স্টলে থরে থরে সাজানো বিভিন্ন জাতের আম। শনিবার দুপুরে বাঘা উপজেলার বটমূল চত্বরে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
প্রতিনিধি রাজশাহী: রাজশাহীর বাঘায় তিন দিনব্যাপী কৃষিপ্রযুক্তি মেলা শুরু হয়েছে, যাতে ঠাঁই পেয়েছে ১০০ জাতের আম। শনিবার দুপুরে উপজেলার বটমূল চত্বরে এই মেলার উদ্বোধন করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
রাজশাহী বিভাগের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় এই মেলার আয়োজন করা হয়েছে। কৃষি খাতে অবদান রাখায় মেলায় ২৭ জন কৃষককে সম্মাননা স্মারক দেওয়া হয়। এ ছাড়া বাঘা ম্যাঙ্গো ব্র্যান্ডিং প্রতিযোগিতা-২০২২–এর তিনজন বিজয়ীকে পুরস্কার ও চারজন বীজ উদ্যোক্তাকে বীজের ডিলারশিপ লাইসেন্স দেওয়া হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, কৃষকদের জন্য বাঘা হবে একটি মডেল উপজেলা। পৃথিবীতে গত তিন বছরে কৃষি খাতে যারা ভালো করেছে, তাদের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ। কৃষি হলো লাভজনক এবং কৃষিই হলো ভবিষ্যৎ। কৃষি যাঁদের সার্বক্ষণিক পেশা ছিল না, তাঁরা এখন কৃষিতে আসছেন। এই খাতে বিল্পব ঘটছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও কৃষি অধিদপ্তরের প্রচেষ্টায় সেটা সম্ভব হয়েছে।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, কয়েক বছর ধরে ১০টি দেশে আম রপ্তানি করা হচ্ছে। এ বছর পেঁপে, বরই, পেয়ারা পরীক্ষামূলকভাবে বিদেশে রপ্তানি করা হয়েছে। অন্যান্য বছরের চেয়ে এ মৌসুমে আরও বেশি আম রপ্তানি করা হবে। আগামী মৌসুমে মিষ্টি আলু, ওলকচু, হলুদ বিদেশে রপ্তানি করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
মেলা উদ্বোধনের পর ঘুরে দেখেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। এ সময় তিনি আমের ছবিও তোলেন। শনিবার দুপুরে বাঘা উপজেলার বটমূল চত্বরে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
শিক্ষিত বেকার যুবকদের উদ্দেশে শাহরিয়ার আলম আরও বলেন, এই উপজেলায় উচ্চ মূল্যের নানা ফসলের চাষ শুরু হয়েছে। অযথা সময় নষ্ট না করে পরিকল্পিতভাবে কৃষি অফিসের সহায়তায় ক্যাপসিকাম, স্ট্রবেরি, ড্রাগন, চিয়াবীজ, কিনোয়াবীজ, পেরিলাবীজ ও আঙুর চাষ করে নিজেদের ভাগ্যে পরিবর্তন ও পাশাপাশি দেশ উন্নয়নে ভূমিকা রাখছেন।
মেলার ২৫টি স্টলে বাঘায় উৎপাদিত ১০০ জাতের আম প্রদর্শন করা হয়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে লক্ষ্মণভোগ, ফজলি, ক্ষীরসাপাতি, হিমসাগর, ল্যাংড়া, আড়াজাম, আম্রপালি, মল্লিকা, আশ্বিনা, নন্দফ্রাম, কুয়াপাড়ি, চোষা, তোতাপরি, অনামিকা, ফনিয়া, জহুরা, বারি আম-৪, ব্যানানা ম্যাঙ্গো, কিং অব চাকাপাত, বোম্বাই, লাখে এক, খাজা গুটি, চিনিঘোরা, চুঙ্গাভোগ, মোহনভোগ, হাঁড়িভাঙা, বিবি, চাপড়া, ডুকসা, হাতিম, কৃষাণভোগ, কাদুমা, গোপালভোগ, বেলি, দুধসর, দুধকোমর, আপেল গুটি, মিয়াজাকি (সূর্যডিম), চেংসাই, ডকমাই, ভাদরী, নাকাবাসী, সুমাসি, জগৎমোহনী, দিংলি, হাতিঝোপা, কদালকাটি, সিন্দুরটোকা ও বারি আম-১১। আরও রয়েছে আনারসি, জাওনি, পাগাড়ে, স্বপ্নবিভর, ঝিনুক আশ্বিনা, বড় গুটি, চরুষা, ঠুটি, দুধভরা, বৈশাখী, আড়াজাম, ভুরই, গৌড়মতি, কাটিমন, কালুয়া গুটি, আনারকলি, বউ ভোলানো, ইঁদুরচাটা, বাবুইঝুকি, গুটি বড়, গুটি ছোট, বিশ্বনাথ, সুরমা ফজলি, বাঘাশাহী, বঙ্গবাসী, আষাঢ়ি, নাক ফজলি, ছাতু ভিজালি, গোল্লা, বাতাসী, ধমিয়া, সেঁদুরী, মোহনঠাকুর, গুটি আম (এক কেজি), মেথা, মিছরিছানা, সালাম ভোগ, খালসি, হাইব্রিড লকনা, মধু খালসি, পেঁপে গুটি, পেপসি গুটি, কাকড়ি, সুগন্ধি গুটি, নাজিরভোগ, দুধসাগর, বালিশ গুটি, জায়েন্ট ক্ষীরসাপাতি, মধু চুষকা, আবদুল্লাহ ফজলি, কালীভোগ, মধুমতি ও জামাইভোগ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, উপজেলার বিভিন্ন বাগান থেকে ১০০ জাতের আম সংগ্রহ করা হয়েছে। দর্শনার্থীদের কাছে পরিচিতির জন্য এসব আম প্রদর্শনী স্টলে রাখা হয়েছে।