আওয়ামী লীগের পতনের অপেক্ষায় দেশের মানুষ: মির্জা আব্বাস

শুক্রবার সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জ পৌর এলাকার জয়নগর উচ্চবিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত দলের এক জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা আব্বাস এসব কথা বলেন।

কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই সমাবেশের আয়োজন করে জেলা বিএনপি। মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আজ কথা বলা ও শোনার অধিকার নেই। আমাদের মিটিং, মিছিল করার অধিকার নেই। দেশের টাকাপয়সা লুট হয়ে যাবে, আমরা বসে বসে তামাশা দেখব। দেশের জনগণ ১৪ বছর এই তামাশা দেখেছে। দেশের জনগণ আর এই তামাশা দেখতে চায় না। ভোটের মাধ্যমে, রাজনৈতিকভাবে বাংলাদেশের জনগণ এই সরকারের পতন দেখতে চায়।’

সরকারের সমালোচনা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘যারা জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসেনি, তারা কখনোই জনগণের কল্যাণ চিন্তা করতে পারে না। ডলার ও টাকা পাচার হওয়াতে আজ দেশে কৃত্রিম সংকট চলছে। আজ যে শিশু জন্মগ্রহণ করেছে, সেই শিশুটির মাথায় লক্ষাধিক টাকার ঋণ। দেশের প্রত্যেক মানুষেরই সমপরিমাণ অর্থঋণ। এই ঋণ পরিশোধ করতে গিয়ে বাংলাদেশের মানুষ আজ দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে। এই সরকার এত টাকা ঋণ করেছে এবং সেই ঋণের টাকা পাচার করেছে।’

বিএনপি কোনো সভা-সমাবেশ করলে তার পাশেই আওয়ামী লীগ শান্তি সমাবেশ করে। সম্প্রতি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আর শান্তি নয়, এখন থেকে প্রতিরোধ সভা হবে।

ওবায়দুল কাদেরকে প্রশ্ন করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘কিসের প্রতিরোধ। আমরা তো একাত্তরে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলাম। আমরা পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলাম। আপনারা কিসের প্রতিরোধ করবেন? বাংলার মানুষ যখন অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, ক্ষুধার জ্বালা মেটাতে; কথা বলার অধিকার, ভোটের অধিকারের জন্য রাজপথে নামে, তখনই আপনারা প্রতিরোধ করবেন। এই হচ্ছে আপনাদের মতলব। বাংলাদেশের জনগণ আপনাদের এই প্রতিরোধ সহ্য করবে না। প্রতিরোধ যদি আপনারা করেন, সেই প্রতিরোধের বিরুদ্ধে পাল্টা প্রতিরোধ হবে। এ বিষয়ে কাউকে ছেড়ে দেওয়া হবে না।’

আওয়ামী লীগের বিদায়ঘণ্টা বেজে গেছে দাবি করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আওয়ামী লীগের বিদায়ঘণ্টা বেজে যাওয়ায় আবলতাবল কথাবার্তা বলতে শুরু করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, খালেদা জিয়াকে পদ্মা সেতু থেকে ফেলে দেওয়া হবে। এটা কী হত্যার হুমকি নয়? ফজলে নূর তাপস বলেছেন, যেসব সুশীল সমাজের প্রতিনিধি তাঁদের বুদ্ধি দিতে যাবেন, তাঁদের বস্তায় ভরে নদীতে ফেলে দেবেন। এটা কী হত্যার হুমকি নয়? এতে কজন গ্রেপ্তার হয়েছে?’

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপির সভাপতি আফরোজা খান রিতার সভাপতিত্বে এবং বিএনপি নেতা গোলাম কিবরিয়া সাঈদের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম, সহসাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এস এ জিন্নাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক নূরতাজ আলম, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক কাজী মোস্তাক হোসেন, সদস্যসচিব তুহিনুর রহমান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক জিন্নাহ খান, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আবদুল খালেক প্রমুখ।