প্রতিনিধি নারায়ণগঞ্জ: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, দেশকে রক্ষা করতে হলে এই লুটেরা সরকারকে বিদায় করতে হবে। এই লুটেরা সরকার ক্ষমতায় থাকলে দেশের মানুষের উন্নয়ন ও উন্নতি হবে না। মানুষের পেটে ক্ষুধা রেখে দুটি সেতু করলেই উন্নয়ন হয় না। মানুষের পেটে যদি ভাত না থাকে, তাহলে এই উন্নয়ন দিয়ে কী হবে?
শুক্রবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়ায় জেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দলের এক জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মির্জা আব্বাস। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপি এ জনসমাবেশের আয়োজন করে। নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতির বিষয়টি তুলে ধরে মির্জা আব্বাস বলেন, মানুষ বাজারে গিয়ে কিনতে না পেরে কান্নাকাটি করছে।
শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদারের বক্তব্য তুলে ধরে বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, সরকারের মন্ত্রীরা বলছেন, সিন্ডিকেট করে দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ানো হচ্ছে। এই সিন্ডিকেট যাঁরা করছেন, তাঁরা সরকারের মন্ত্রী, যাঁরা বলছেন, তাঁরাও এই সরকারের মন্ত্রী। আজ দেশের জনগণ সরকারের লুটপাটে অস্থির হয়ে গেছে। লুটপাটের কারণে দেশের জনগণ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গেছে। বিএনপি বারবার প্রতিবাদ করে গেছে, কিন্তু এই সরকারের বোধোদয় হয়নি।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব আবু আল ইউসুফের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সহ–আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মনিরুজ্জামান, মোস্তাফিজুর রহমান, জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন, সদস্যসচিব গোলাম ফারুক, যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলামসহ জেলা ও মহানগর বিএনপির অনেক নেতা।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রসঙ্গে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘দেশনেত্রী খালেদা জিয়া যদি চাইতেন, আজ পর্যন্ত তিনি ক্ষমতায় থাকতে পারতেন। আপনাদের মতো ক্ষমতালিপ্সু যদি হতেন, তাহলে তিনি তাঁর বিশাল দল নিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারতেন। আপনারা কী করলেন, দেশের মানুষকে অভুক্ত রাখলেন, দেশের শত শত মানুষকে গুম করলেন, হত্যা করলেন—এইভাবে ক্ষমতায় টিকে আছেন। এইভাবে একটি দল ক্ষমতায় থাকতে পারে না, একটি দেশ চলতে পারে না। এই সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে হবে।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘খেলা কিন্তু শুরু হয়ে গেছে, ভুইলেন না। আমরা এই খেলায় দূর থেকে অংশগ্রহণ করব, আপনাদের সঙ্গে আমরা কোনো রকম ঝামেলায় যেতে চাই না। আমরা শুধুমাত্র নির্বাচনে যাব—আওয়ামী লীগ কেন, তার চেয়ে বড় কেউ আসুক—ফ্রেশ, ফেয়ার, ফ্রি একটা ইলেকশন চাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। সেই ইলেকশনে এলে খেলার পরিণতি শেষ হয়ে যাবে। কী দুর্ভাগ্যজনক পরিণতি হবে, তা আপনারা বুঝতে পারছেন না। এখনো সময় আছে বাংলাদেশের মানুষের মুখের ভাষা, শারীরিক ভাষা, চেহারার ভাষা বুঝতে চেষ্টা করুন। না হলে কিন্তু পালানোর পথ পাবেন না।’