বিদ্যুৎস্পৃষ্টে আটকে ছিলেন টাওয়ারে, প্রাণ বাঁচালেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা

৩৩ কেভি বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইনে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আটকে পড়া বিদ্যুৎকর্মীকে উদ্ধার করছেন বেড়া ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। সোমবার বিকেলে পাবনার বেড়া উপজেলার চাকলা গ্রামে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি বেড়া: ৩৩ কেভি বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইনের ত্রুটি মেরামতের জন্য সোমবার বিকেলে পাবনার বেড়া উপজেলার চাকলা গ্রামের একটি বৈদ্যুতিক টাওয়ারে উঠেছিলেন মো. জাকারিয়া। বিকেল চারটার কিছু পর হঠাৎ তিনি সেখানে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আটকে পড়েন।

মুহূর্তেই খবর পেয়ে বেড়া ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে প্রায় ৪০ ফুট ওপর থেকে জাকারিয়াকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করান। এতে প্রাণে বেঁচে যান জাকারিয়া। তিনি পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২-এর লাইনম্যান পদে কর্মরত।

বেড়া ফায়ার সার্ভিস, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, শাহজাদপুর গ্রিড লাইন হয়ে পাবনায় আসা প্রধান বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইনে (৩৩ কেভি) ত্রুটি দেখা দেওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। ত্রুটি মেরামতে পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২-এর লাইনম্যান জাকারিয়া সোমবার বিকেলে বেড়ার চাকলা গ্রামের মধ্য দিয়ে যাওয়া একটি বৈদ্যুতিক টাওয়ারে ওঠেন। প্রায় ৪০ ফুট উঁচুতে উঠে তিনি যখন কাজ করছিলেন, তখন ওই লাইনে বিদ্যুৎ সরবরাহ ছিল না। কিন্তু হঠাৎ করেই লাইনে বিদ্যুৎ সরবরাহ হলে তিনি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে টাওয়ারের ওপরে আটকা পড়েন। নিচে থাকা সহকর্মীরা তাঁকে উদ্ধার করতে না পেরে বেড়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে খবর দেন। খবর পাওয়া মাত্রই বেড়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন কর্মকর্তা আব্দুল হান্নানের নেতৃত্বে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তিন থেকে চার মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান। সেখানে আব্দুল হান্নানসহ স্টেশনের একাধিক কর্মী প্রায় ৪০ ফুট উঁচুতে উঠে আংশিক অচেতন অবস্থায় মো. জাকারিয়াকে নিচে নামিয়ে আনেন। নিচে নামানোর সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করা হয়।

উদ্ধারকাজে অংশ নেওয়া আব্দুল হান্নান বলেন, ‘জাকারিয়াকে উদ্ধারের জন্য আমি নিজে ওপরে উঠেছিলাম। আমরা একেবারে সঠিক সময়ে পৌঁছে দ্রুত তাঁকে উদ্ধার করেছিলাম বলেই একটি জীবন আজ রক্ষা পেয়েছে। তাঁকে উদ্ধারে আমাদের ১০ মিনিটের মতো সময় লেগেছিল। আর উদ্ধারের সময় তিনি আংশিক অচেতন ও আশঙ্কাজনক অবস্থায় ছিলেন।’

বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ফাতেমাতুয জান্নাত বলেন, ‘তাঁর (জাকারিয়ার) দুই জায়গায় বার্ন হলেও পায়ের বার্ন বেশ সিরিয়াস। আমাদের হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর তাঁকে আরও উন্নত হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে এখন তিনি আশঙ্কামুক্ত।’

পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২-এর বেড়া কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক আবু বকর সিদ্দিক বলেন, লাইন মেরামতের সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় জাকারিয়া টাওয়ারে উঠে কাজ করছিলেন। কিন্তু অপ্রত্যাশিতভাবে হঠাৎ করে লাইনে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু হলে দুর্ঘটনাটি ঘটে। বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর জাকারিয়া এখন আশঙ্কামুক্ত আছেন।