আটক | প্রতীকী ছবি |
নিজস্ব প্রতিবেদক: নরসিংদী শহরে পুলিশের ভুয়া পরিচয় দিয়ে পিস্তল দেখিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) এক সদস্যের কাছ থেকে ১৬ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই ইউপি সদস্য ও তাঁর ছেলে এ অভিযোগ করেন। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ছাত্রলীগ নেতাসহ চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে শহরের বৌয়াকুড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশের ভাষ্য, আটক চারজনের মধ্যে টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় সরাসরি জড়িত দুজনকে স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থল থেকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছেন। অন্য দুজন আটক দুজনকে ছাড়িয়ে নিতে ঘটনাস্থলে এলে তাঁদেরও আটক করা হয়।
যাঁর টাকা ছিনতাই হয়েছে তিনি হলেন নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার বাঁশগাড়ী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আক্কাস আলী। তিনি ওয়ার্ডটির চরমেঘনা এলাকার মৃত হযরত আলীর ছেলে। ছিনতাইয়ের ঘটনার সময় আক্কাস আলীর সঙ্গে তাঁর ছেলে ইকবাল হোসেনও ছিলেন। তাঁদের দাবি, এলাকায় একটি জমি কেনার জন্য ১৬ লাখ টাকাভর্তি ব্যাগ নিয়ে যাওয়ার পথে ছিনতাইয়ের ঘটনার শিকার হয়েছেন।
এ ঘটনায় আটক চারজন হলেন নরসিংদী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক রেহানুল ইসলাম ভূঁইয়া ওরফে লেলিন (৩৬), ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সাবেক সদস্য শোয়েব রায়হান (২৯), ছাত্রলীগের কর্মী মাধবদীর বিরামপুর এলাকার তানভীর আহমেদ (৩০) ও ভলবদ্রদী এলাকার কামরুল হাসান ওরফে মুহিত (২৯)।
ভুক্তভোগী আক্কাস আলী ও তাঁর ছেলে ইকবাল হোসেন জানান, রায়পুরার বাঁশগাড়ী তাঁদের এলাকা হলেও নরসিংদী সদর উপজেলার সাহেপ্রতাব এলাকার বাড়িতে তাঁরা বাস করেন। বাঁশগাড়ী এলাকায় জমি কেনার জন্য ১৬ লাখ টাকাভর্তি একটি ব্যাগ নিয়ে সাহেপ্রতাব এলাকার বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন তাঁরা। একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় করে শহরের আরশীনগর সিএনজিচালিত স্ট্যান্ডে যাওয়ার পথে বৌয়াকুড় এলাকায় দুটি মোটরসাইকেলে করে চারজন তাঁদের গতিরোধ করেন। তাঁরা পুলিশ সদস্য হিসেবে পরিচয় দিয়ে পরিচয়পত্র দেখান এবং পিস্তল প্রদর্শন করেন। এরপরই তাঁরা টাকাভর্তি ব্যাগটি ছিনিয়ে নেন। এ সময় তাঁদের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এসে তানভীর ও শোয়েব নামে দুজনকে ধরে ফেলেন। কিন্তু অন্য দুজন টাকার ব্যাগ নিয়ে মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যান। খবর পেয়ে নরসিংদী মডেল থানার পুলিশ তানভীর ও শোয়েবকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এ ঘটনায় মামলা করার জন্য তাঁরা থানায় অবস্থান করছেন।
এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আহসানুল ইসলাম বলেন, যাঁদের কথা বলা হচ্ছে, তাঁরা এক সময় ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে একজন জেলা ছাত্রলীগের রাজনীতি করতেন, আরেকজন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। তাঁরা যেহেতু এখন ছাত্রলীগের কেউ নন, তাই তাঁদের নিয়ে কিছু বলতে চান না। তবে কেউ যদি অপরাধের সঙ্গে জড়িত হন, তাঁর পরিচয় যাই হোক না কেন, আইন অনুযায়ী তাঁর বিচার হবে।
নরসিংদী মডেল থানার উপপরিদর্শক অভিজিৎ চৌধুরী বলেন, পুলিশের ভুয়া পরিচয় দিয়ে টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় চারজন সরাসরি জড়িত। এর পেছনে থাকা আরও কয়েকজনের নাম তাঁরা শুনতে পাচ্ছেন। আটক তানভীর ও শোয়েবকে পুলিশের কাছ থেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য ঘটনাস্থলে আসেন লেলিন ও মুহিত নামের দুজন। ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততা থাকতে পারে ধারণা করে তাঁদেরও আটক করা হয়। পরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ছিনতাই ঘটনার সঙ্গে লেলিন ও মুহিত প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। ছিনতাই হওয়ার টাকাভর্তি ব্যাগ উদ্ধার ও পলাতক দুজনকে আটকের চেষ্টা চলছে।