বগুড়ায় দরপত্র চুরির ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান সাময়িক বরখাস্ত

শাজাহানপুর উপজেলার মাঝিড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নুরুজ্জামান | ছবি: সংগৃহীত

প্রতিনিধি বগুড়া: বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয় থেকে হাটবাজার ইজারার ২২ লাখ টাকার পে-অর্ডারসহ দরপত্র চুরির ঘটনায় মাঝিড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. নুরুজ্জামানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের ইউনিয়ন পরিষদ শাখা-১-এর জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। নুরুজ্জামান শাজাহানপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি উপজেলা হাটবাজার ইজারা কমিটির সদস্য।

স্থানীয় সরকার বিভাগের ইউনিয়ন পরিষদ শাখা-১-এর সিনিয়র সহকারী সচিব জেসমিন প্রধান স্বাক্ষরিত  প্রজ্ঞাপনে নুরুজ্জামানকে কেন চূড়ান্তভাবে অপসারণ করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে এবং চিঠি পাওয়ার ১০ কার্যদিবসের মধ্যে বগুড়া জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার বিভাগে উত্তর পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

শাজাহানপুরের ইউএনও সাঈদা খানম বলেন, ‘ডাকে পাঠানো প্রজ্ঞাপনটি বৃহস্পতিবার হাতে পেয়েছি।’

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ২ মার্চ উপজেলার জামাদারপুকুর হাটের ইজারা পেতে দুজন দরপত্র দাখিল করেন। এর মধ্যে একজন জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও উপজেলার খড়না ইউপির চেয়ারম্যান সাজেদুর রহমান এবং অন্যজন জেলা যুবলীগের সহসভাপতি ও বগুড়া পৌরসভার প্যানেল মেয়র আলহাজ শেখ।

আলহাজ শেখ অভিযোগ করেন, শেখ এন্টারপ্রাইজের নামে শাজাহানপুর উপজেলার সাতটি হাটের দরপত্রে অংশ নেন তিনি। এর মধ্যে জামাদারপুকুর হাটের জন্য ডাক দেন ৪৫ লাখ ৫১ হাজার টাকা। জনতা ব্যাংকের বগুড়ার সপ্তপদী শাখা থেকে ডাকের অনুকূলে ২২ লাখ টাকার পে-অর্ডার করেন। এরপর সাতটি হাটের আলাদা সাতটি দরপত্র বগুড়ার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে দাখিল করেন। দরপত্রগুলো শাজাহানপুর ইউএনও কার্যালয়ে পৌঁছানোর পর ২২ লাখ টাকার পে-অর্ডারসহ জামাদারপুকুর হাটের দরপত্র চুরি হয়।

উপজেলা প্রশাসনসহ একাধিক সূত্র জানায়, প্রথম পর্যায়ের দরপত্র দাখিল ও উন্মুক্তকরণ অনুষ্ঠানে ইউপি চেয়ারম্যান মো. নুরুজ্জামান উপজেলার জামাদারপুকুর হাটের দরপত্র গোপনে চুরি করে অন্য একজনের হাতে বাইরে পাঠিয়ে দেন। পরে অন্য একটি বানানো দরপত্র জমা দেওয়া হয়। জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সাজেদুর রহমানকে ওই হাটের ইজারা পাইয়ে দিতে দরপত্র চুরি করা হয়।

ঘটনার পর ইউপি চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান বলেন, সবার সামনে থেকে নিয়ে দরপত্রটি অন্য একজনকে দিয়েছিলেন তিনি। যাঁর হাতে দিয়েছিলেন, তিনি দরপত্র পাল্টে দিয়ে থাকতে পারেন।

এ ঘটনায় গত ৪ মার্চ শাজাহানপুরের ইউএনওর কার্যালয়ের কম্পিউটার অপারেটর মোজাহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান নুরুজ্জামানকে আসামি করে শাজাহানপুর থানায় মামলা করেন।