প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদের ৫০ বছর পূর্তিতে বিশেষ অধিবেশনে সমাপনী ভাষণ দেন | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন 

নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগের টানা ক্ষমতার ১৪ বছরে বাংলাদেশে বিরাট পরিবর্তন সম্ভব হয়েছে বলে জাতীয় সংসদে দেওয়া ভাষণে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, এরপরও যদি কেউ উন্নয়ন না দেখে, আর সরকার কিছুই করেনি বলে, এর চেয়ে দুঃখজনক আর কিছুই হয় না। এই সরকার যা কিছু করছে, সেটি তেলা মাথায় তেল দেওয়ার জন্য নয়, জনগণের জন্য করছে।

সোমবার জাতীয় সংসদের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত বিশেষ অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ভাষণে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করেন। সমালোচনা করেছেন প্রথম আলোর। এ ছাড়া রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপিরও সমালোচনা করেছেন তিনি।

জাতীয় সংসদের ৫০ বছর পূর্তিতে ৬ এপ্রিল থেকে সংসদের বিশেষ অধিবেশন শুরু হয়। এরপর ৭ এপ্রিল সুবর্ণজয়ন্তীর দিনে সংসদে ভাষণ দেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। ওই দিন সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আলোচনার জন্য সংসদে একটি প্রস্তাব আনেন প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা।

এ প্রস্তাবের ওপর সংসদ নেতা শেখ হাসিনা, বিরোধী দলের নেতা রওশন এরশাদসহ ৬৩ জন সংসদ সদস্য আলোচনায় অংশ নেন। পরে প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহণ করা হয়। গতকালের অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। অধিবেশন শেষ হওয়ার আগে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দিনের ভাষণ নিয়ে নির্মিত একটি তথ্যচিত্র সংসদে দেখানো হয়।

গতকাল সমাপনী ভাষণে সংসদ নেতা শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগে ও পরে দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়ন ও অগ্রগতির তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরেন। তিনি বলেন, রপ্তানি আয় পাঁচ গুণ বেড়েছে, প্রবাসী আয় বেড়েছে পাঁচ গুণ, সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ ৪০ গুণ বেড়েছে। ছেঁড়া কাপড়, দুর্ভিক্ষ, মন্দা এখন আর কোথাও নেই। অতিদারিদ্র্য অর্ধেক কমেছে। মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে। মানবসম্পদ উন্নয়ন সূচকে বাংলাদেশের ২৫ ধাপ উন্নতি হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, দেশের মানুষও বিশ্বাস করে, ১৪ বছর একটানা ক্ষমতায় আছি বলেই দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পেরেছি। হ্যাঁ, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্বে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। তারপরও আমাদের উৎপাদন বৃদ্ধি করে দেশের মানুষের জন্য অতিরিক্ত দামে জিনিস কিনে এনেও আমরা খাদ্যনিরাপত্তা দিয়ে যাচ্ছি। নিম্ন আয়, মধ্যম আয়, সকলের দিকে আমাদের দৃষ্টি আছে। আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি মানুষের ভাগ্য গড়তে। এখন গ্রাম আর শহরের পার্থক্য কমে গেছে।’

বিএনপির নাম উল্লেখ না করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যে বিরোধী দলকে বড় বিরোধী দল বলা হয়, তারা ২০০৮ সালে ২৯টি সিট পেয়েছিল। তারা যদি এত বড়ই বিরোধী দল হয়ে থাকে তাহলে ২৯টি সিট পেল কেন? তারা এত বড় দল কোত্থেকে হয়ে গেল? আর সাজাপ্রাপ্ত আসামি হচ্ছে সেই দলের চেয়ারপারসন। হত্যা-গুম-খুন-দুর্নীতি-জঙ্গিবাদ—সবকিছুতেই যারা পারদর্শী ছিল। তাদের জন্য দেশের মানুষ আতঙ্কে থাকত। এখন তাদের নিয়ে এত উৎফুল্লতা শুরু করছে। এটাই হচ্ছে দুর্ভাগ্য।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা সংবিধান লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছে তারা দেশ ও জাতিকে কী দিতে পেরেছে? কিছুই দিতে পারেনি। নিজেদের ভাগ্য গড়তে পেরেছে। দুর্ভাগ্য হচ্ছে, আজকে তাদের কাছ থেকেও আমাদের গণতন্ত্রের কথা শুনতে হয়। তাদের থেকে আমাদের গণতন্ত্রের শিক্ষা নিতে হয়।’

সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা বলেন, ‘বলেছিলাম ঘরে ঘরে আলো জ্বালাব। ঘরে ঘরে আলো জ্বালাতে সক্ষম হয়েছি। যদিও ইউক্রেন যুদ্ধে জ্বালানি তেল ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই সবাইকে বলব কৃচ্ছ্রতা সাধন করতে। অল্প ব্যয় করতে। কারণ, বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে অনেক খরচ করতে হয়। তারপরও বিএনপি-জামায়াতের সময়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিল ৩ হাজার ৮৮২ মেগাওয়াট, প্রকৃতপক্ষে আমরা ২০০১ সালে ৪ হাজার ৩০০ মেগাওয়াট রেখে গিয়েছিলাম। তারা সেটা কমিয়ে ৩ হাজার মেগাওয়াটে নামিয়ে আনে। মানুষ সামনে যায়, ওরা পেছনে নিয়ে গেল। বর্তমানে ২৫ হাজার ২২৭ মেগাওয়াট, আট গুণ বৃদ্ধি। বিএনপির আমলে বিদ্যুৎ সুবিধাভোগী ছিল ২৮ শতাংশ। ২০২০ সালে শতভাগ। এটা উন্নতি কি না, সেটা দেশবাসী বিবেচনা করবে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০২৬ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত হবে। ভবিষ্যতে আরও এগিয়ে যাবে। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। যে বাংলাদেশ হবে সোনার বাংলাদেশ।’ তিনি বলেন, ‘যখন ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলেছিলাম, অনেকেই নাক সিটকিয়েছিল। বলেছিল, এটা আবার কী ডিজিটাল বাংলাদেশ। এখন সে ডিজিটাল ব্যবস্থা ব্যবহার করে আমাদের বিরুদ্ধে নানা রকম কুৎসাও রটায়। সুফল-কুফল দুটোই আছে। মানুষ সুবিধা পাচ্ছে।’

যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা
যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলে। আর এখন দেখা যায় দুর্নীতিতে সাজাপ্রাপ্তদের পক্ষ হয়েই তারা ওকালতি করে যাচ্ছে। আর গণতন্ত্রকে বাদ দিয়ে এখানে এমন একটা সরকার আনতে চাচ্ছে, যার গণতান্ত্রিক কোনো অস্তিত্বই থাকবে না। অগণতান্ত্রিক ধারা। সেই ক্ষেত্রে আমাদের কিছু বুদ্ধিজীবী, বুদ্ধি বেচিয়া জীবিকা নির্বাহ করেন, তাঁরা সামান্য কিছু পয়সার লোভে এদের তাঁবেদারি করে, পদলেহন করে।’

যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করতে গিয়ে নিজের একটি অভিজ্ঞতার কথাও তুলে ধরেন সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা। প্রথমবার যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়ে দেশটির আন্ডারসেক্রেটারির সঙ্গে যে বৈঠক করেছিলেন, সেই বৈঠকের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমি তাঁকে একটা কথা বলেছিলাম আমি একটি মনুমেন্ট (স্মৃতি স্তম্ভ) দেখে এসেছি, সেখানে লেখা আছে গভর্নমেন্ট অব দ্য পিপল, ফর দ্য পিপল, বাই দ্য পিপল। আমি একটি দেশ থেকে এসেছি সে দেশটি হচ্ছে, গভর্নমেন্ট অব দ্য আর্মি, বাই দ্য আর্মি, ফর দ্য জেনারেল।’ তিনি বলেন, ‘আমি সেই বৈঠকে বলেছিলাম, আমেরিকা গণতন্ত্র চর্চা করে আটলান্টিকের পাড় পর্যন্ত। এটা যখন পার হয়ে যায়, তখন কি আপনাদের গণতন্ত্রের সংজ্ঞাটা বদলে যায়? কেন আপনারা একটা মিলিটারি ডিক্টেটরকে সমর্থন দিচ্ছেন? আমি এই প্রশ্নটি করেছিলাম।’

সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকেও আমি বলি, যে দেশটা আমাদের কথায় কথায় গণতন্ত্রের ছবক দেয়। আর আমাদের বিরোধী দল থেকে শুরু করে কিছু কিছু লোক তাদের কথায় খুব নাচন–কোঁদন করছেন, ওঠবস করছেন, উৎফুল্ল হচ্ছেন। হ্যাঁ, তারা যেকোনো দেশের ক্ষমতা উল্টাতে পারে, পাল্টাতে পারে। বিশেষ করে মুসলিম দেশগুলো তো আরও বেশি কঠিন অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রশ্ন তোলেন, ‘আমাদেরকে গণতন্ত্রের এত জ্ঞান দিচ্ছে, কথায় কথায় ডেমোক্রেসি আর হিউম্যান রাইটসের কথা বলে। তাদের দেশের অবস্থাটা কী?’ এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় প্রতিদিন কোনো কোনো অঙ্গরাজ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শপিং মল, ক্লাবে অস্ত্র নিয়ে গিয়ে হত্যা করা হচ্ছে। কয়েক দিন আগে টেনেসি রাজ্যের তিনজন কংগ্রেস সদস্য অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের জন্য আবেদন করেছিলেন। তারা ডেমোনেস্ট্রেশন দিয়েছিল যে, এই ভাবে যার–তার হাতে অস্ত্র থাকা আর এইভাবে গুলি করে শিশু হত্যা বন্ধ করতে হবে। এটাই ছিল তাদের অপরাধ। আর এই অপরাধে এই তিনজনকে কংগ্রেস থেকে এক্সপেল (বরখাস্ত) করা হয়। একজন সাদা চামড়া ছিল বলে বেঁচে যায়। তাদের অপরাধ হলো তারা কালো চামড়া। সেই কারণে তাদের সিট আনসিট (বাতিল) হয়ে যায়। এখানে মানবাধিকার কোথায়? এখানে গণতন্ত্র কোথায়?’

বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় নিয়েছেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশটির সব প্রেসিডেন্টের কাছে আবেদন করা হয়েছে, কূটনৈতিক ও আইনগতভাবে চেষ্টা হয়েছে, তারা এই খুনি, মানবতা লঙ্ঘনকারীকে ফেরত দিচ্ছে না। খুনিদেরকে লালন–পালন করে রেখে দিচ্ছে।’

প্রথম আলোর সমালোচনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অভিযোগ করেন, ‘মাত্র একটা ছোট্ট শিশুর হাতে ১০টা টাকা দিয়ে তাকে দিয়ে একটা মিথ্যা বলানো, শিশুর মুখ থেকে কিছু কথা বলানো। কী কথা? ভাত, মাছ, মাংসের স্বাধীনতা চাই। একটা ৭ বছরের শিশু। তার হাতে ১০টা টাকা তুলে দেওয়া এবং তার কথা রেকর্ড করে সেটা প্রচার করা, স্বনামধন্য এক পত্রিকা। খুবই পপুলার। নাম তার প্রথম আলো। কিন্তু বাস করে অন্ধকারে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রথম আলো আওয়ামী লীগের শত্রু। প্রথম আলো গণতন্ত্রের শত্রু। প্রথম আলো দেশের মানুষের শত্রু। আমি এটা অত্যন্ত দুঃখের সাথে বলি যে, এরা এই দেশে কখনোই স্থিতিশীলতা থাকতে দিতে চায় না। ২০০৭ সালে যখন ইমার্জেন্সি হয়, তখন তারা উৎফুল্ল। দুটি পত্রিকা আদাজল খেয়ে নেমে গেল। বাহবা কুড়াল। আর তার সঙ্গে আছে একজন সুদখোর। বড়ই প্রিয় আমেরিকার। আমেরিকা একবারও জিজ্ঞাস করে না যে একটা ব্যাংক, গ্রামীণ ব্যাংক, এটা তো একটা সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান। সরকারের বেতন তুলত যে এমডি, সে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার কোথা থেকে পেল, যে আমেরিকার মতো জায়গায় সামাজিক ব্যবসা করে, বিনিয়োগ করে দেশে-বিদেশে। এই অর্থ কোথা থেকে আসে? এটা কি জিজ্ঞাসা করেছে কখনো তারা? জিজ্ঞাস করেনি। এদের কাছ থেকে দুর্নীতির কথা শুনতে হয়। দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিহাদ। এদের কাছ থেকে মানবতার কথা শুনতে হয়। যারা গরিবের রক্ত চোষা টাকা পাচার করে বিদেশে বিনিয়োগ করে নিজেরা শতকোটি টাকার মালিক হয়ে আবার আন্তর্জাতিক পুরস্কারও পেয়ে যায়। এই সব লোক এ দেশে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার চেষ্টা করে। মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলে। আওয়ামী লীগ সরকার এসে কিছুই নাকি দেয়নি। দেশ নাকি ধ্বংস হয়ে গেছে।’

সুরক্ষা দেয় ৭০ অনুচ্ছেদ

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের আগে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধনের বিষয়ে দাবি তুলেছিলেন বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘৭০ অনুচ্ছেদ নিয়ে অনেকেরই আপত্তি। যারা এই আপত্তির কথা তুলছেন তাঁদের বোধ হয় অভিজ্ঞতার অভাব আছে। এই ৭০ অনুচ্ছেদটাই কিন্তু আমাদের দেশে সরকারের একটা স্থায়িত্বের সুযোগ এনে দিয়েছে। যার ফলে দেশটা উন্নতি করতে সক্ষম হয়েছে।’

অতীতের কথা তুলে ধরে সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচিত প্রতিনিধিদের ‘ফ্লোর ক্রস’ করার কারণে ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট সরকার টিকতে পারেনি। এর আগে ১৯৪৬ সালেও একই খেলা হয়েছিল। যার কারণে পূর্ব বাংলা যেভাবে গঠন হওয়ার কথা, সেভাবে হয়নি। এটা ১৯৫৬ সালের নির্বাচনেও হয়েছিল।

সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ গণতন্ত্রকে সংহত করতে একটি সুরক্ষা দেয়, উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘জানি না এর ওপর কেন কিছু কিছু সদস্যের এত রাগ। কারণ হচ্ছে, সরকার ভাঙতে-গড়তে বা খেলাটা খেলতে তারা সক্ষম হচ্ছে না। এটাই হচ্ছে বাস্তবতা।’