তপ্ত রোদে গরম থেকে বাঁচতে এক রিকশাচালক মাথায় জড়িয়েছে জার্মান লতা। এতে নাকি মাথা ঠান্ডা থাকে বলে তাঁর দাবি। বাস্তুহারা, খুলনা, ১৯ এপ্রিল | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকার তাপমাত্রা আবারও বাড়তে শুরু করেছে। সঙ্গে আর্দ্রতার পরিমাণও বেড়ে গরমের অনুভূতি বেড়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দিনের বাকি সময়জুড়ে গরমের তীব্রতা বাড়তে পারে। সেই সঙ্গে সিলেট, ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রাম বিভাগে সন্ধ্যার পর কালবৈশাখীর আশঙ্কা আছে। ঝড়ের পর সেখানে বৃষ্টিও হতে পারে। তবে তা বেশি সময়ের জন্য স্থায়ী হওয়ার সম্ভাবনা কম বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদেরা।

সিলেটে গতকাল বুধবার মৃদু কালবৈশাখী হয়েছে, বৃষ্টি হয়েছে ১৬ মিলিমিটার। নেত্রকোনায় সামান্য বৃষ্টি হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, গতকাল দুপুর ১২টার তুলনায় আজ ঢাকার তাপমাত্রা দশমিক এক ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে। এ সময় ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৩৬ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

একই সঙ্গে আর্দ্রতার পরিমাণ গত দিনের তুলনায় ৩ শতাংশ বেড়ে ৫৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। তাপমাত্রার হিসেবে মৃদু দাবদাহ বয়ে গেলেও গরমের অনুভূতি আর্দ্রতার কারণে তীব্র মনে হচ্ছে।

সকাল থেকে রাজধানীর আকাশে কিছু মেঘের আনাগোনা বেড়ে গেলেও বেলা গড়াতে তা কমে যায়। মেঘ সরে গিয়ে রোদের তীব্রতা বাড়তে থাকে। বেলা ১১টার পর গরমের দাপট বেড়ে যায়। ভোর থেকে যে হালকা শীতল বাতাস বইতে শুরু করেছিল, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা লু হাওয়ায় পরিণত হয়।

বাতাস থেকে আগের দিনগুলোর মতোই আগুনের হল্কার মতো বের হয়। ফলে সপ্তাহের শেষ দিন যাঁরা নানা কাজে বাইরে বের হয়েছিলেন, তাঁদের কষ্ট যায় বেড়ে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেসা বলেন, গতকালের তুলনায় রাজধানীতে আজ গরমের তীব্রতা সামান্য বেশি মনে হচ্ছে। আজ দিনের বাকি সময় তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে। তবে ঢাকায় আজ কালবৈশাখীর সম্ভাবনা কম। মূলত সিলেট, চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহ বিভাগের কোথাও কোথাও বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

তীব্র দাবদাহ। অতিষ্ঠ জনজীবন। বৃষ্টির দেখা নেই। এই শিশু-কিশোরেরা কৃষকের ধানের খেতে সেচের পানিতে শরীরটাকে শীতল করে নিচ্ছে। চর কৃষ্ণপুর এলাকা, সদর উপজেলা, ফরিদপুর, ১৯ এপ্রিল | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

আজ সকাল ৯টা থেকে রাজধানীর বিভিন্ন বিপণিবিতান ও ফুটপাতের দোকানগুলো খুলতে শুরু করে। ঈদের কেনাকাটা করতে নামেন রাজধানীবাসী। ক্রেতা ও বিক্রেতা দুই পক্ষকে ঘামে ভিজে ও গরমের কষ্ট নিয়ে তাঁদের কাজ সারতে হয়েছে। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে রাজধানীর মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বর, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার ও পল্টন এলাকায় যানজট দেখা দেয়। এতে যানবাহনে বসে গরমে প্রায় সেদ্ধ হওয়ার জোগাড় হয় এসব মানুষকে।

আজ দুপুরের দিকে প্রচণ্ড গরমে রাজধানীর পিচঢালা পথ থেকে যেন আগুনের হল্কা বের হতে দেখা গেছে। মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বর, ১ নম্বর, রোকেয়া স্মরণীসহ বিভিন্ন স্থানে সিটি করপোরেশনের গাড়ি থেকে রাস্তায় পানি ছিটাতে দেখা গেছে। বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে ও তাপমাত্রা কমাতে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে সিটি করপোরেশনের সেখানে দায়িত্বে থাকা সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আগামীকাল শুক্রবার সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে মেঘ বাড়তে পারে। বৃষ্টি ও কালবৈশাখী হতে পারে সিলেট, ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রাম বিভাগ ছাড়া দেশের অন্যান্য বিভাগের কিছু কিছু জায়গায়। তবে বাতাসের আর্দ্রতা আগামীকাল আরও বেড়ে গরমের তীব্রতা বাড়তে পারে। আর আগামী শনিবার থেকে সারা দেশে বৃষ্টি বেড়ে দাবদাহের দাপট কমে আসতে পারে।