গোড়ান খেলার মাঠের নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

নিজস্ব প্রতিবেদক: বঙ্গবাজারের অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের ঘুরে দাঁড়াতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পর্যাপ্ত অনুদান দেবেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।

আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর খিলগাঁও এলাকায় ‘গোড়ান খেলার মাঠ’–এর নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস এসব তথ্য জানান।

শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘কোনো দুর্যোগ হলে প্রথম কাজ হলো উদ্ধার তৎপরতা। সেটি গতকাল মঙ্গলবার সম্পন্ন হয়েছে। এখন আমরা মানবিক দিকগুলো বিবেচনা করে পরিপূর্ণভাবে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে ও পাশে থাকব। আমার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর আজ সকালে কথা হয়েছে। উনি বলেছেন, আমরা তালিকা করে ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করার পরই সব ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের পর্যাপ্তভাবে তিনি অনুদান দিবেন। যাতে তাঁরা আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারেন। তাঁরা যেন আবার এই ব্যবসায় নামতে পারেন। তাঁদের পুঁজি হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। সেই দিকটাই এখন আমাদের সবার অগ্রাধিকার।’

বঙ্গবাজারে বহুতল ভবন নির্মাণের কথা থাকলেও মামলার কারণে তা করা যায়নি উল্লেখ করে মেয়র শেখ তাপস বলেন, ‘আমাদের সেখানে বহুতল ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল। মামলার কারণে সেটা বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা এখন বিপর্যয়ের মধ্যে আছেন। কিছুদিন সময় দিতে হবে। মানবিক দিক নির্ণয় করে তাঁরা যাতে আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারেন, তাঁদেরকে অনুদান দিয়ে আমরা সেটা নিশ্চিত করব। তারপর তাঁরা যাতে সেখানে সুষ্ঠুভাবে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারেন, সে জন্য আমরা নতুন একটি পরিকল্পনা নিয়ে তাঁদের সঙ্গে বসব। সেটা নিশ্চিত করার পরই আমরা ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা করব।’

এই অগ্নিকাণ্ড কোনো ধরনের পরিকল্পিত নাশকতা কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, ‘এখন পর্যন্ত এটি একটি দুর্ঘটনা বলেই মনে হচ্ছে। তারপরও এটি কোথা থেকে শুরু হয়েছে এবং কীভাবে শুরু হয়েছে, তা তদন্তেই বেরিয়ে আসবে।’

গোড়ান খেলার মাঠের নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন চলছে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

পূর্বের পরিকল্পনা অনুযায়ী বঙ্গবাজারে নতুন করে পাইকারি মার্কেটই নির্মাণ করা হবে উল্লেখ করে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র শেখ তাপস বলেন, ‘আমরা তাঁদের নিয়ে বসব। তাঁরা কীভাবে চান, তা জানব। প্রধানমন্ত্রীকেও আমরা ভবনের নকশাটি দেখাব। এটা পাইকারি বাজার। আমরা এটাকে পাইকারি মার্কেট হিসেবেই তৈরি করব এবং যাঁরা প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত, নতুন ভবনে তাঁদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। তাঁদেরকেই আগে পুনর্বাসিত করা হবে।’

এরপর মেয়র গোড়ান খেলার মাঠসংলগ্ন এলাকায় নর্দমা পরিষ্কার কার্যক্রম, পান্থপথ বক্স কালভার্ট এবং আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেলে চলমান উন্নয়নমূলক কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে ঢাকা-৯ আসনের সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী, করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, সচিব আকরামুজ্জামান, প্রধান প্রকৌশলী সালেহ আহম্মেদ, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন, অঞ্চল-২–এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা সোয়ে মেন জো, কাউন্সিলরদের মধ্যে ১ নম্বর ওয়ার্ডের মো. মাহবুবুল আলম, ২ নম্বর ওয়ার্ডের মো. আনিসুর রহমান, সংরক্ষিত আসনের ফারজানা ইয়াসমিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

প্রায় ২৬ কাঠা জমির ওপর এই খেলার মাঠের উন্নয়ন কার্যক্রম ২০২৪ সালের ১ ফেব্রুয়ারি শেষ হবে। এতে ব্যয় হবে ৬ কোটি ৩৬ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। এখানে চারটি প্রবেশপথ, একতলাবিশিষ্ট একটি ভবন, ফুটবল খেলার একটি মাঠ, ক্রিকেট নেট প্র্যাকটিস করার একটি স্থান, একটি মালটিপারপাস কোর্ট, একটি বাস্কেটবল কোর্ট, দুটি গ্যালারি, বাচ্চাদের জন্য একটি, একটি ব্যায়ামাগার ও নারীদের জন্য বসার স্থান থাকছে এই মাঠে।