বিশেষ প্রতিনিধি: আপাতত গরম কমার কোনো লক্ষণ নেই। বরং সামনের দিনগুলোতে তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, দেশের ৯০ শতাংশ এলাকাজুড়ে বয়ে যাওয়া দাবদাহ আরও সাত দিন ধরে চলতে পারে।
ছয় দিন ধরে তাপমাত্রার পারদ প্রতিনিয়ত উচুঁতে উঠছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বৃষ্টি ও মেঘের তেমন সম্ভবনা নেই। গরমের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের কষ্ট একই সঙ্গে বাড়ছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে আগামীকাল মঙ্গলবারের জন্য দেওয়া পূর্বাভাস বলছে, আগামীকাল দিন–রাতের তাপমাত্রা আজকের তুলনায় বাড়বে। কয়েক দিন ধরে তাপমাত্রা বৃদ্ধির এই ধারা অব্যাহত থাকতে পারে। রাজধানীসহ দেশের বড় শহরগুলোতে তাপমাত্রা যতটা, তার চেয়ে বেশি অনুভূত হচ্ছে। বিশেষ করে দিনের বেলা শহরজুড়ে যেন লু হাওয়া বইছে। গরমের সঙ্গে শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে ধুলার পরিমাণ বেড়ে মানুষের কষ্ট আর দুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ বলেন, এপ্রিল মাস দেশের সবচেয়ে উত্তপ্ত সময়। এই সময়ে একাধিক দাবদাহ সৃষ্টি হয়। তবে এই তাপদাহ এরই মধ্যে প্রায় এক সপ্তাহ অতিক্রম করে গেছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বৃষ্টি ও মেঘের তেমন সম্ভবনা নেই। ফলে আমাদের এই গরমের কষ্ট সহ্য করতে হবে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাবে, গতকাল দেশের সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায় ৩৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজধানীতে ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল।
৪৯ জেলার ওপর দিয়ে বইছে দাবদাহ
কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর থেকে বলা হয়েছে, দেশের ৪৯টি জেলার ওপর দিয়ে দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে। জেলাগুলো হচ্ছে বগুড়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, জয়পুরহাট, নওগাঁ, নাটোর, পাবনা, রাজশাহী, সিরাজগঞ্জ, ঢাকা, গাজীপুর, কিশোরগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, নারায়নগঞ্জ, নরসিংদী, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, রাজবাড়ী, শরীয়তপুর, বাগেরহাট, চুয়াডাঙ্গা, যশোর, ঝিনাইদহ, খুলনা, কুষ্টিয়া, মাগুরা, মেহেরপুর, নড়াইল, সাতক্ষীরা, বরিশাল, বরগুনা, ভোলা, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, ব্রাক্ষণবাড়িয়া, কুমিল্লা, চাঁদপুর, লক্ষীপুর, নোয়াখালী, ফেনী, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, বান্দরবান, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও মৌলভীবাজার জেলা।
চৈত্রের প্রচণ্ড দাবদাহে অতিষ্ঠ প্রাণিকুলও। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
ধান ও আম রক্ষায় বাড়তি সেচের পরামর্শ
এ সময়ে তাপপ্রবাহের ক্ষতি থেকে ধান রক্ষার জন্য বোরো ধানের জমিতে পর্যাপ্ত পানি ধরে রাখতে হবে। ধানের শিষে দানা শক্ত না হওয়া পর্যন্ত জমিতে অবশ্যই দুই-তিন ইঞ্চি দাঁড়ানো পানি রাখতে হবে। আমগাছের গোড়ায় পর্যাপ্ত সেচ দিতে হবে। প্রয়োজনে গাছের শাখা–প্রশাখায় পানি স্প্রে করা যেতে পারে। সবজির জমিতে আগামী এক সপ্তাহে মাটির ধরন বুঝে প্রয়োজন অনুযায়ী দুই থেকে তিনটি সেচের ব্যবস্থা করা। ফল ও সবজির চারাকে তাপপ্রবাহের ক্ষতি থেকে রক্ষার জন্য মালচিং ও সেচ নিশ্চিত করার পরামর্শ দিয়েছে কৃষি অধদপ্তর।