হাজেরা খাতুন | ছবি: সংগৃহীত

প্রতিনিধি ঈশ্বরদী: পাবনার ঈশ্বরদীতে শোবার ঘর থেকে হাজেরা খাতুন (৭৬) নামের এক নারীর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় মামলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে হাজেরার ছোট ছেলে সেবায়েল রাজ্জাক বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলাটি করেছেন। এদিকে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের খুঁজতে পুলিশের একাধিক দল মাঠে কাজ করছে বলে জানিয়েছে জেলা পুলিশ।

হাজেরা খাতুন উপজেলার পাকশী ইউনিয়নের বাঘইল গোলাবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা ও রাজশাহী কলেজের সাবেক অধ্যাপক প্রয়াত মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহর স্ত্রী। এ ছাড়া তিনি পাকশী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পাকশী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুল ইসলামের বোন। গত সোমবার সন্ধ্যায় নিজ শোবার ঘরে হাজেরার রক্তাক্ত লাশ পাওয়া যায়।

আরও পড়ুন- ঈশ্বরদীতে শোবার ঘরে মিলল আওয়ামী লীগ নেতার বোনের লাশ

ঈশ্বরদী থানা-পুলিশ জানিয়েছে, হাজেরার রক্তাক্ত লাশ উদ্ধারের পর থেকেই পুলিশ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্‌ঘাটনে কাজ শুরু করেছে। ইতিমধ্যে ওই বাড়ির তত্ত্বাবধায়কসহ তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাঁদের দেওয়া তথ্য ও হত্যার আলামত সূত্রে পাওয়া সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের খোঁজে পুলিশ কাজ শুরু করেছে। এদিকে গতকাল বিকেলে হাজেরার লাশ দাফন শেষে রাতে পরিবারের লোকজন থানায় এসে মামলা করেছেন। তবে মামলায় কোনো আসামির নাম উল্লেখ করা হয়নি।

ঈশ্বরদী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হাসান বাসির বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে পুলিশের একাধিক দল মাঠে কাজ করছে। আমরা হত্যাকাণ্ডের রহস্যের খুব কাছাকাছি পৌঁছে গেছি। আশা করছি, শিগগিরই ঘাতককে গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন হবে।’

পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ঈশ্বরদী সার্কেল) বিপ্লব কুমার গোস্বামী বলেন, ‘এখনই কিছু বলছি না। তবে আমরা ঘটনার একটি ক্লু পেয়েছি। সেটি ধরেই পুলিশ মাঠে নেমেছে।’

নিহত হাজেরা খাতুনের তিন ছেলে ও চার মেয়ে। তাঁদের মধ্যে দুই মেয়ে বিদেশে থাকেন। অন্যরা সবাই ঢাকায় থাকেন। হাজেরা অধিকাংশ সময় ঢাকায় থাকেন। মাঝেমধ্যে গ্রামের বাড়িতে এসে থাকতেন। সোমবার সকালেও কয়েক প্রতিবেশী তাঁকে বাড়ির বাগানে ঘুরতে দেখেছেন। এর পর থেকেই তাঁকে আর বাড়ির বাইরে দেখা যায়নি। তাঁর সন্তানেরা ঢাকা থেকে দিনভর মাকে কল করে পাননি। বিকেলে তাঁরা বিষয়টি কয়েক প্রতিবেশী ও মামা হাবিবুল ইসলামকে জানান। সন্ধ্যায় প্রতিবেশীদের সঙ্গে নিয়ে হাবিবুল ইসলাম বাড়িতে ঢুকে বোনের শোবার ঘর তালাবদ্ধ দেখতে পান। তালা ভেঙে ভেতরে ঢোকার পর তাঁরা ঘরের মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় হাজেরা খাতুনের লাশ পড়ে থাকতে দেখেন।

আরও পড়ুন-  ঈশ্বরদীতে শোবার ঘরে নারীর লাশ, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৩ প্রতিবেশী আটক

হাজেরা খাতুনের এমন মৃত্যু তাঁর স্বজন ও প্রতিবেশীরা মেনে নিতে পারছেন না। তাঁর কয়েকজন স্বজন ও প্রতিবেশী বলেন, হাজেরা সদালাপী ও শান্ত মানুষ ছিলেন। তিনি কখনও কারও সঙ্গে জোরে কথা বলতেন না। প্রতিবেশী এক নারী হাজেরাকে দেখাশোনা করতেন। আর ওই বাড়িতে একজন পুরুষ তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন। তিনি মাঝেমধ্যে বাজারসদাইসহ বাড়ির অন্য কাজ করে দিতেন।