হাইকোর্টের রায় উপেক্ষা করে বিএসআরআইতে পদোন্নতির পাঁয়তারা

হাইকোর্ট ভবন | ফাইল ছবি

প্রতিনিধি ঈশ্বরদী: হাইকোর্টের রায় ও মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুসরণ না করেই বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইন্সটিটিউট-এর (বিএসআরআই) মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দেওয়া হবে বলে অভিযোগ উঠেছে।

বিজ্ঞানী অনেকের অভিমত, মহামান্য আদালতের রায় অনুসরণ না করে যদি পদোন্নতি না দেওয়া হয় তাহলে পদোন্নতিতে জ্যৈষ্ঠতা লঙ্ঘন করা হবে।

আজ বৃহস্পতিবার পদোন্নতি বিষয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। বৈঠকে মহামান্য আদালতের রায় ও মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুসারে মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাদের পদোন্নতি হোক এটা চান বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীদের দাবি, মহামান্য আদালতের রায় ও মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুসারে পদোন্নতি। আদালতের রায় ও মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা উপেক্ষা করে নয়।

জানা গেছে, ১৯৯৬ সালে গবেষণাপ্রক্রিয়াকে গতিশীল করতে ‘বাংলাদেশ ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউট জোরদারকরণ’ নামের একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। ২০০৩ সালে প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হলে ২০০৪ সালে ১ জানুয়ারি থেকে প্রকল্পে ৭৪টি পদ রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের সুপারিশ করা হয়। প্রতিষ্ঠানের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা পদে ২০০৫ সালের বাংলাদেশ গেজেটের এসআরও ১৮২নং আইনে ৪(৩) বিধিতে পদোন্নতি কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে প্রকল্পের জনবলকে রাজস্ব বাজেটে পদায়ন করে নিয়মিতকরণের সুপারিশ করেন। কিন্তু ২০০৭ সালের ২৬ জুলাই বিএসআরআই ব্যবস্থাপনা বোর্ড সভায় উক্ত জনবল নিয়মিতকরণে সুপারিশ করা হলেও তৎকালীন মহাপরিচালক (ডিজি) নিজ ক্ষমতাবলে ৫ আগস্ট নিয়মিত করেন যা সঠিক হয়নি। পরবর্তীতে জ্যেষ্ঠতা বিধিমালা অনুসরণ চেয়ে আদালতে মামলা করেন ইনস্টিটিউটের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আতাউর রহমানসহ চার গবেষক। দীর্ঘ সময় পর ২০১৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি আদালত গবেষকদের পক্ষে রায় দেন।

গবেষকদের দাবি, নিয়মিতকরণের এ প্রক্রিয়াতেই জটিলতার সূত্রপাত হয়। নিজের পছন্দের ব্যক্তিদের প্রাধান্য দিতে গিয়ে ইনস্টিটিউটের তৎকালীন মহাপরিচালক জ্যেষ্ঠতা বিধিমালা লঙ্ঘন করেন। এতে ক্ষুব্ধ হন অন্য গবেষকরা। গবেষকদের অভিযোগ, আদালতের রায়ের পরও বিধি লঙ্ঘন করে ২০২২ সালের ২০ এপ্রিল জ্যেষ্ঠতার তালিকা প্রকাশ ও সে অনুযায়ী পদোন্নতির সুপারিশ করা হয়। তারা বলেন, পদোন্নতি হচ্ছে কাজের অনুপ্রেরণা। দীর্ঘদিন এ অনুপ্রেরণা বঞ্চিত হয়ে গবেষকরা ঠিকমত কাজ করতে পারছেন না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বলেন, যেহেতু ২০০৪ সালের ১ জানুয়ারি বিএসআরআই এর পদোন্নতি কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে রাজস্ব বাজেটে পদায়ন করা হয়েছে। মহামান্য হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগের রায় এবং মন্ত্রণালয়ের প্রেরিত চিঠির নির্দেশনা মোতাবেক জ্যেষ্ঠতার তালিকা করে পদোন্নতি দেওয়াটা সমীচীন।

যোগাযোগ করা হলে বিএসআরআই মহাপরিচালক ড. ওমর আলী বলেন, সবকিছু যাচাই-বাছাই করেই পদোন্নতির ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। গবেষণা কার্যক্রম যাতে সুষ্ঠু, সুন্দরভাবে চলে, গবেষণা কার্যক্রমে কোনো ব্যাঘাত সৃষ্টি না হয় সেদিকটা লক্ষ্য রেখেই পদোন্নতির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।