ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী | ছবি: সংগৃহীত

সুজন সেন গুপ্ত: ৮১ বছর বয়সে পৃথিবী ছেড়ে বিদায় নিলেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে ভেন্টিলেশনে থাকা অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তার আগের দিন তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়েছিল।

মঙ্গলবার দুপুরেও তার চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, ওষুধে ইতিবাচক সাড়া দিচ্ছেন জাফরুল্লাহ। সবার মনে আশার সঞ্চার হয়েছিল, সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সবাইকে কাঁদিয়ে চিরবিদায় নিলেন তিনি।

বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবায় একজন প্রবাদপুরুষ হয়ে থাকবেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। রাজনীতির ময়দানেও ছিলেন সরব — হয়েছেন অনেক প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীনও। দেশের মানুষের তরে অনেক কিছুই সইছেন তিনি। বাংলার মানুষের জন্য জাফরুল্লাহর সেবার ব্রত শুরু হয়েছিল বাংলাদেশের জন্মক্ষণেই।

১৯৭১ সালে জাফরুল্লাহ চৌধুরী ৩০ বছরের যুবক। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার সময় তিনি ইংল্যান্ডে এফআরসিএস পড়ছিলেন। জাহানারা ইমাম তার একাত্তরের দিনগুলিতে লিখেছেন, যুদ্ধ শুরু হলে জাফরুল্লাহ চৌধুরী এফআরসিএস পরীক্ষা বাদ দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করতে দিল্লিগামী বিমানে চড়ে বসেন। সঙ্গে ছিলেন ডা. এম এ মোবিন। সিরিয়ান এয়ারলাইন্স-এর ওই বিমানটি সেদিন দামেস্কে পাঁচঘণ্টা দেরি করেছিল। ওই বিমানবন্দরে পাকিস্তানি এক কর্নেল ওত পেতে ছিল দুজনকে ধরার জন্য। কিন্তু তারা দুইজন বিমান থেকে নামেননি — বিমানের অভ্যন্তর আন্তর্জাতিক জোন বলে কাউকে গ্রেপ্তার করা যায় না — তাই হতাশ হয়েই ফিরতে হয়েছিল পাক কর্নেলকে।

১৯৪১ সালের ২৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম জেলার রাউজানে জন্মগ্রহণ করেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী। বিপ্লবী মাস্টারদা সূর্যসেনের ছাত্র ছিলেন তার বাবা। ঢাকার বকশীবাজারের নবকুমার স্কুল থেকে মেট্রিকুলেশন এবং ঢাকা কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন জাফরুল্লাহ।

প্রথমদিকে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র | ছবি: সংগৃহীত

১৯৬৪ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে সার্জারিতে ডিস্টিংশনসহ এমবিবিএস পাস করেন তিনি। এরপর ১৯৬৫ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের রয়্যাল কলেজ অভ সার্জনস থেকে এফআরসিএস পাঠ। তারপর যুদ্ধ শুরু হলে চূড়ান্ত পরীক্ষা না দিয়ে দেশে ফেরত আসা। পরবর্তী জীবনে ১৯৯০ সালে কলেজ অভ জেনারেল প্র্যাক্টিশনারস থেকে অনারারি এফসিজিপি লাভ করেন তিনি। ২০০৯ সালের মে মাসে কানাডার ওয়ার্ল্ড অর্গানাইজেশন অভ ন্যাচারাল মেডিসিন থেকে ডক্টর অভ হিউম্যানিটারিয়ান সার্ভিস দেওয়া হয় তাকে।

মুক্তিযুদ্ধে যোগদানের পর প্রাথমিক পর্যায়ে তিনি গেরিলাযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। পরে সার্জন ডা. মোবিনের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধা ও শরণার্থীদের জন্য মেলাঘরে প্রথম ফিল্ড হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন। ৪৮০ শয্যার ওই অস্থায়ী হাসপাতাল পরিচালনা করতেন পাঁচ বাংলাদেশি চিকিৎসক ও বিশাল সংখ্যক নারী স্বেচ্ছাসেবী। এ স্বেচ্ছাসেবীদের কারোরই অতীতে চিকিৎসা বিষয়ক কোনো প্রশিক্ষণ ছিল না।

স্বাধীনতার পরপরই দেশের স্বাস্থ্যখাতে নিজের কর্মযজ্ঞ শুরু করেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবার করুণ পরিস্থিতি অনুধাবন করতে পেরেছিলেন জাফরুল্লাহ। মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল ১৯৭২ সালের শেষ রোববার গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে রূপান্তরিত হয়। গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবার একটি সরবরাহ ব্যবস্থা তৈরি করতে সাভারে যাত্রা শুরু করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। মুক্তিযুদ্ধে চিকিৎসাসেবার অভিজ্ঞতাকেই পুঁজি করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র তৈরির চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলেন তিনি।

পুরো বিষয়টি নিয়ে 'বেসিক হেলথ কেয়ার ইন রুরাল এরিয়া' শীর্ষক একটি ধারণাপত্র ১৯৭২ সালের এপ্রিল মাসে ঢাকায় প্রথম উপস্থাপনা করা হয়। এ প্রতিবেদনই প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ে পরবর্তীকালে আন্তর্জাতিক আলোচনার অন্যতম ভিত্তি হয়ে ওঠে।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের নামের পেছনে শেখ মুজিবকে জড়িয়ে সুন্দর একটা গল্প আছে। ফিল্ড হাসপাতালকে স্বাধীন দেশে নতুন করে শুরু করার সময় তৎকালীন বাংলাদেশ সরকার এটির নাম নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছিল। বিরক্ত জাফরুল্লাহ সচিবালয়ে গিয়ে সোজা বঙ্গবন্ধুর কাছে নালিশ জানান, 'মুজিব ভাই, ফিল্ড হাসপাতাল করতে দিচ্ছে না আমাদেরকে।' বঙ্গবন্ধু তখন তাকে বুঝিয়ে বলেন, ফিল্ড হাসপাতালের সঙ্গে বাংলাদেশ শব্দটা থাকলে মনে হয় এটা বুঝি সরকারি হাসপাতাল।

গ্রামীণ নারীদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন ডা. জাফরুল্লাহ | ছবি: সংগৃহীত

হাসপাতালের জন্য সুন্দর একটা নাম দেওয়ার প্রস্তাব করেন মুজিব। অনেক আলোচনার পর বঙ্গবন্ধু প্রস্তাব দেন, তিনি তিনটা নাম ঠিক করবেন, আর জাফরুল্লাহ তিনটা নাম ঠিক করবে। সবচেয়ে ভালোটাই হবে হাসপাতালের নাম। পরের সাক্ষাতে নিজের তালিকা থেকে নাম পড়া শুরু করেন জাফরুল্লাহ। দুই নাম্বারে ছিল গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। বঙ্গবন্ধু তাকে থামিয়ে দিয়ে বলেন, এ নামটা সুন্দর। এটাই হবে হাসপাতালের নাম।

শুধু নাম দিয়েই ক্ষান্ত হননি বঙ্গবন্ধু, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জন্য সরকারিভাবে ২৩ একর জায়গার বরাদ্দও দিয়েছিলেন। আরও কয়েকজন ব্যক্তিও পারিবারিক সম্পত্তি থেকে মোট পাঁচ একর জায়গা দান করেছিলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জন্য।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মাধ্যমে স্বল্পশিক্ষিত বা অশিক্ষিত গ্রামীণ মানুষদের টিকাদান ও সাধারণ রোগের চিকিৎসা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী। এ প্রশিক্ষিত সাধারণ স্বেচ্ছাসেবকেরা সেবার মন্ত্র নিয়ে গ্রামে গ্রামে সাইকেল নিয়ে ঘুরে বেড়াতেন। তাদের কাছ থেকে গ্রামের মানুষ পেতেন মা ও শিশুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, পরিবার পরিকল্পনার পরামর্শ ইত্যাদি।

বাংলাদেশ সরকারের এনজিও বিষয়ক ওয়েবপোর্টালে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের লক্ষ্য সম্পর্কে বলা হয়েছে, এটির যাত্রা শুরু 'গ্রামে চল, গ্রাম গড়' মূলমন্ত্র নিয়ে। এখানকার স্বেচ্ছাসেবীরা নিজেদের উদ্যোগে গ্রামে গিয়ে, গ্রামে বসবাস করে, গ্রামবাসীকে সাথে নিয়ে তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে প্রয়োজনীয় কর্মপদ্ধতি ও কর্মসূচি নির্বাচন  করতেন।

বহুমুখী উন্নয়ন প্রকল্প গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কাজসমূহকে মোটামুটি দুইভাগে ভাগ করা যায়:  প্রত্যক্ষ সেবা ও সমাজ উন্নয়নমূলক এবং বাণিজ্য ও পরোক্ষ সেবা। প্রথম ধাপে রয়েছে কৃষিক্ষেত্রে সহায়তা, কমিউনিটি স্কুল, প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র ও হাসপাতাল, নারীদের কারিগরি প্রশিক্ষণ, পুষ্টি উন্নয়ন, দুর্যোগ ও ত্রাণ ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি। গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালস, গণস্বাস্থ্য ইন্ট্রা-ভেনাস ফ্লুইড ইউনিট, গণস্বাস্থ্য বেসিক অ্যান্টিবায়োটিকস প্রোডাকশন ইউনিট, গণ মুদ্রণ ইত্যাদি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের আয়ের কিছু উৎস।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উপকারভোগীরা। শুরুর দিকের ছবি | ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে প্যারামেডিকের ধারণা প্রথম চালু করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। এরপর ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ সরকার তা গ্রহণ করে। চীনের পরে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রই প্যারামেডিকদের প্রশিক্ষণের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের নিজস্ব প্যারামেডিকেরা দেশজুড়ে সাধারণ মানুষকে চিকিৎসাসেবা দিয়ে থাকেন। এ প্যারামেডিকদের কল্যাণে তাদের চিকিৎসা দেওয়া এলাকাগুলোতে মা ও শিশু মৃত্যুহার দেশের সার্বিক হারের তুলনায় অনেক কমে এসেছে।

'টিউবেকটোমি বাই প্যারাপ্রফেশনাল সার্জনস ইন রুরাল বাংলাদেশ' শীর্ষক একটি গবেষণাপত্রের সহলেখক ছিলেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। ১৯৭৫ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর এটি বিশ্বখ্যাত মেডিকেল জার্নাল ল্যান্সেট-এ যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য থেকে একইসঙ্গে প্রকাশিত হয়। এটিই ছিল ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে ল্যান্সেট-এ প্রকাশিত প্রথম কোনো প্রধান নিবন্ধ। বাকি জীবনেও জাফরুল্লাহর অনেক প্রবন্ধ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। ১৯৭৭ সালে প্রকাশিত 'রিসার্চ: আ মেথড অভ কলোনাইজেশন' বাংলা, ফরাসি, জার্মানি, ইতালীয়, ডাচ, স্প্যানিশসহ ভারতীয় অনেক ভাষায় অনুবাদ করা হয়।

১৯৭২ সাল থেকে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রজেক্ট কোঅর্ডিনেটর হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী। সেই দায়িত্বে ছিলেন দীর্ঘ ৩৭ বছর — ২০০৯ সালের মে মাসে ওই পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন তিনি।

১৯৮২ সালের বাংলাদেশ জাতীয় ঔষধ নীতির বিশেষজ্ঞ কমিটির প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। ওই কমিটির পরামর্শগুলো প্রয়োগ করার মাধ্যমে স্থানীয়ভাবে ঔষধপত্র উৎপাদন বৃদ্ধি এবং ঔষধের মানোন্নয়ন, ক্ষতিকর ও অপ্রয়োজনীয় ঔষধ দূর করা এবং ঔষধের দাম ও আমদানির ক্ষেত্রে নীতিমালা তৈরি ইত্যাদি সম্ভব হয়েছিল। এসেনশিয়াল ড্রাগ অ্যাক্ট-এর মাধ্যমে ১,৭০০ বিপজ্জনক ও অপ্রয়োজনীয় ঔষধকে বাতিল করা হয়। বিদেশি ঔষধ উৎপাদন কোম্পানিগুলো থেকে সে সময় প্রচুর বাধা এসেছিল, কিন্তু সরকার শেষ পর্যন্ত কমিটির পরামর্শ গ্রহণ করে। এ নীতিমালা থেরাপিউটিক ঔষধের বাজার নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে বিশ্বের অনেক দেশের জন্য উদাহরণে পরিণত হয়।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী | ছবি: সংগৃহীত

১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ সরকারের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পদক স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেন তিনি। ১৯৮৫ সালে ফিলিপাইন থেকে রামন ম্যাগসাইসাই পুরষ্কারে ভূষিত হন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। ১৯৯২ সালে সু্ইডেন থেকে রাইট লাভলিহুড-এ ভূষিত করা হয় তাকে। এছাড়াও পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বার্কলি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল হেলথ হিরো, এবং বাংলাদেশের আহমদ শরীফ স্মারক পুরস্কার।

জাফরুল্লাহ চৌধুরী একজন আশাবাদী মানুষ। রামন ম্যাগসাইসাই পুরষ্কার পাওয়ার পর নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে তিনি লিখেছিলেন: 'এ বিশ্বের বিবেক আজ কোথায়? আমাদের মানবতা কোথায়? মানবতা কি ঘুমিয়ে আছে? না। সারাবিশ্বের মানুষ আবারও খুব শিগগির জেগে উঠবে শোষণ ও সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে, মানুষের দুর্দশা দূর করতে।'

২০২৩ সালে ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী ডা. জাফরুল্লাহর বাংলাদেশের জন্য সার্বিক অবদানকে স্বতন্ত্র হিসেবে উল্লেখ করে বলেছিলেন, সমসাময়িক সমাজে জাফরুল্লাহর মতো আরেকজন মানুষ পাওয়া কঠিন ব্যাপার।

ছোটবেলায় জাফরুল্লাহ চেয়েছিলেন ব্যাংকার হতে, কিন্তু মা উৎসাহ দিতেন চিকিৎসক হওয়ার জন্য। এক বক্তৃতায় তিনি বলেছিলেন, 'এখন আমি বলতে পারি, আমার মা আমাকে সঠিক পথটাই দেখিয়েছিলেন।'

জাফরুল্লাহ চৌধুরী খুব সম্ভত ছোটবেলায় জীবনের লক্ষ্য নিয়ে রচনা লিখতে গিয়ে ব্যাংকার হওয়ার কথাই লিখেছিলেন। যদিবা কখনো তিনি ডাক্তার হওয়ার কথা লিখতেন, আর সেখানে বলতেন তিনি বড় হয়ে গ্রামের মানুষের সেবা করতে চান — তাহলে কথাটা একবিন্দুও মিথ্যা হতো না।