অভিযানে অবৈধ দোকানের সামনে লাল ক্রস চিহ্ন দিয়ে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
প্রতিনিধি ঈশ্বরদী: পাবনার ঈশ্বরদী রেলওয়ে সুপার মার্কেট উচ্ছেদ অভিযানে যান পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এসময় স্থানীয় সংসদ সদস্য নুরুজ্জামান বিশ্বাস মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে উচ্ছেদ অভিযান স্থগিত রাখার অনুরোধ করেন। পরে অবৈধ দোকানের সামনে লাল রঙের ক্রস চিহ্ন দিয়ে ঈদের ছুটি পর্যন্ত অভিযান স্থগিত রাখার ঘোষণা দেন রেলওয়ের কর্মকর্তারা।
রোববার দুপুরে পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) শাহ সুফি নূর মোহাম্মদের নেতৃত্বে বিভাগীয় ভূ-সম্পদ কর্মকর্তা মো. নুরুজ্জামান, বিভাগীয় প্রকৌশলী-২ বীরবল মন্ডল, বিভাগীয় রেলওয়ে পরিবহন কর্মকর্তা (ডিটিও) আনোয়ার হোসেনসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উচ্ছেদ অভিযানে যান। পরে তারা ঈদের পর দোকান সরিয়ে নিতে দোকানিদের নির্দেশ দেন।
মার্কেটের ব্যবসায়ী ও রেল সূত্র জানায়, পূর্বঘোষিত নোটিশ অনুযায়ী রোববার ঈশ্বরদীর রেলওয়ে সুপার মার্কেটের বেশ কিছু দোকানপাট উচ্ছেদ করার কথা ছিল। এদিকে ঈদের আগে এসব দোকানপাট উচ্ছেদ করা হলে ব্যবসায়ীরা চরম ক্ষতির মুখে পড়বেন জানিয়ে
স্থানীয় সংসদ সদস্য নুরুজ্জামান বিশ্বাস ও ঈশ্বরদী পৌরসভার মেয়র ইছাহক আলী মালিথা পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপকের কাছে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে অভিযান স্থগিত রাখার অনুরোধ করেন। এক পর্যায়ে রেলের কর্মকর্তারা উচ্ছেদ না করে ফিরে যান। তবে লাল রঙের ক্রস চিহ্ন দিয়ে অবৈধ দখলদারদের মৌখিকভাবে ঈদের ছুটি পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন।
ঈশ্বরদী রেলওয়ে সুপার মার্কেট উচ্ছেদ অভিযানে রেলওয়ের কর্মকর্তারা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
মার্কেটের ব্যবসায়ী আবুল কালাম আজাদ বলেন, রেলের কাছে থেকে লিজ নিয়ে এখানে দোকান নির্মাণ করে আমরা ৫০ বছর ধরে ব্যবসা করে আসছি। মার্কেটের সবাই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। কম দামে পোশাক বিক্রি হয় এখানে। হঠাৎ করে ঈদের আগেই মার্কেটের ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদের নোটিশ দেয়া হয়েছে, যদিও মানবিক কারণে রেল কর্তৃপক্ষ ঈদের পর উচ্ছেদ করবে বলে জানিয়ে দিয়েছে। আমরা এতগুলো ব্যবসায়ী এখন কোথায় যাব? রেলের কাছে আমরা পুনর্বাসনের দাবি জানাচ্ছি।
ব্যবসায়ী আকরাম রায়হান বাবু বলেন, এখানকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের যাওয়ার কোনো জায়গা নেই। অথচ রেলের বহু জায়গা পতিত পড়ে আছে। রেল কর্তৃপক্ষ মানবিক দিক বিবেচনা করে এসব ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের পুনবার্সন করতে পারে।
এ বিষয়ে পাবনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান বিশ্বাস বলেন, ঢাকায় বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের পর সেখানকার ব্যবসায়ীরা যেভাবে পথে বসেছেন, তেমনি ঈদের আগে ঈশ্বরদীর এ রেলওয়ে সুপার মার্কেট উচ্ছেদ করা হলে এখানকার ব্যবসায়ীরা পথে বসবেন। সে চিন্তা থেকে আমি রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় কর্মকর্তাদের কাছে ঈদের আগে উচ্ছেদ না করার জন্য অনুরোধ করি। পরে তারা ঈদের ছুটি পর্যন্ত সময় দেন।
ঈশ্বরদী পৌরসভার মেয়র ইছাহক আলী
মালিথা বলেন, এমপির অনুরোধ এবং মানবিক কারণে ঈদের আগ পর্যন্ত উচ্ছেদ বন্ধ
রাখায় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাই।
পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) শাহ সুফি নূর মোহাম্মদ বলেন, ঈদের আগে এ মার্কেট উচ্ছেদ করলে ব্যবসায়ীরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন, সে জন্য মানবিক কারণে অভিযান স্থগিত রাখা হয়েছে।
রেলওয়ে ভূ-সম্পদ কর্মকর্তা নুরুজ্জামান বলেন, রেলের এ জায়গার এত দিন প্রয়োজন ছিল না। এখন ভারত থেকে আসা ওয়াগন দ্রুত আনলোড করার জন্য জায়গাটি প্রয়োজন। নিয়ম অনুযায়ী দোকানদারদের নোটিশ দেয়া হয়েছে। ঈদের পর দোকান সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে।