রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের গাড়িচালককে হত্যা: স্ত্রী সীমার পর রিমান্ডে স্বামী মমিন

গ্রেপ্তারের পর আদালতে হাজির করা হয় সম্রাট খান হত্যা মামলার আসামি আব্দুল মমিনকে। মঙ্গলবার বিকেলে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি পাবনা: কুষ্টিয়া কুমারখালী উপজেলায় পদ্মাপাড়ে গাড়ির ভেতর থেকে সম্রাট খান (২৯) নামের এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধারের ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার আবদুল মমিনকে এক দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার বিকেলে তাঁকে পাবনা জেলা আমলি আদালত-২-এ হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হলে এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক।

এর আগে রোববার বিকেলে আবদুল মমিনের স্ত্রী সীমা খাতুনকে একই আদালতে হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। আদালত তাঁর দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শেষে তাঁকে মঙ্গলবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে গত রোববার রাতে র‍্যাব-১২-এর সিরাজগঞ্জ ক্যাম্পের সদস্যরা মমিনকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করেন। পরে তাঁকে পাবনার ঈশ্বরদী থানায় হস্তান্তর করা হয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ঈশ্বরদী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তৌহিদ হোসেন রিমান্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সীমা খাতুন রিমান্ডে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। তাঁর স্বামী আবদুল মমিনের পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছিল। আদালত এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।

 সম্রাট খানকে হত্যায় ব্যবহৃত হাতুড়ি ও তাঁর ব্যবহৃত মুঠোফোনটি উদ্ধার করার কথা জানিয়েছে পুলিশ। এগুলো মমিন-সীমা দম্পতির বাড়ির একটি পরিত্যক্ত সেপটিক ট্যাংকে লুকানো ছিল। পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, সীমার তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলামত দুটি উদ্ধার করা হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। খুব দ্রুতই এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।

সম্রাট খান হত্যায় হাতুড়ি এবং তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল উদ্ধার করেছে ঈশ্বরদী থানা পুলিশ | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

গাড়িচালক সম্রাট খান ঈশ্বরদী উপজেলার মধ্য অরনকোলা এলাকার আবু বক্কার সিদ্দীকের ছেলে। তিনি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে নিয়োজিত একটি বিদেশি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ভাড়ায়চালিত প্রাডো গাড়ির চালক ছিলেন। স্থানীয় ব্যক্তিদের খবরের ভিত্তিতে গত শনিবার সকালে পদ্মাপাড় থেকে পুলিশ তাঁর লাশ উদ্ধার করে।

লাশ উদ্ধারের আগেই সন্দেহভাজন ঘাতক হিসেবে শনাক্ত হন আবদুল মমিন ও তাঁর স্ত্রী সীমা খাতুন। গাড়িটির খোঁজ করতে গিয়েই তাঁদের শনাক্ত করে পুলিশ। পরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সীমা খাতুন সম্রাটকে খুনের কথা স্বীকার করেন। খুনের পর স্বামী-স্ত্রী সম্রাটের লাশ গুমের জন্য গাড়িতে ঘুরে বেড়ান বলে জানিয়েছেন এই নারী। এ ঘটনায় নিহত সম্রাটের বাবা আবু বক্কার বাদী হয়ে আবদুল মমিন ও সীমা খাতুনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও তিন-চারজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেছেন।