পবিত্র রমজান উপলক্ষে ১০ টাকা লিটারে দুধ বিক্রি করছেন খামারি। শুক্রবার কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুর গ্রামে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি কিশোরগঞ্জ: রোজা এলেই জিনিসপত্রের দাম বাড়ানোর প্রতিযোগিতায় নামেন কিছু ব্যবসায়ী। তবে ব্যতিক্রমী নজির স্থাপন করেছেন কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুর গ্রামের এক খামারি। পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে তিনি ১০ টাকা লিটারে ২ টন দুধ বিক্রির ঘোষণা দিয়েছেন।

ওই খামারির নাম এরশাদ উদ্দিন। করিমগঞ্জের নিয়ামতপুর গ্রামে জেসি অ্যাগ্রো ফার্ম নামে তাঁর একটি গরুর খামার আছে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ মিলস্কেল রি-প্রসেস অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি তিনি। আজ শুক্রবার প্রথম রোজায় তিনি ৭০ জনের কাছে ১০ টাকা লিটার দরে দুধ বিক্রি করেন।

রমজান মাসের প্রথম থেকে শেষ দিন পর্যন্ত দুধ বিক্রি অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন খামারি এরশাদ উদ্দিন। তাঁর এ উদ্যোগ এলাকায় প্রশংসা কুড়াচ্ছে। বর্তমানে বাজারে ৮০ থেকে ১০০ টাকা দরে দুধ বিক্রি হচ্ছে।

এরশাদের খামারে দুগ্ধ ও মোটাতাজাকরণ জাতের ৪০০ গরু আছে। এর মধ্যে গাভি আছে ৬৫টি। দুধ দেওয়া ২৫টি গাভি থেকে দৈনিক ৭০ থেকে ৮০ লিটার দুধ পাওয়া যায়। খামারে উৎপাদিত সব দুধ রমজান মাসজুড়েই গরিবদের জন্য ১০ টাকা দরে বিক্রির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। গত বছরও রোজা উপলক্ষে ১০ টাকা লিটার দরে দুধ বিক্রি করেছিলেন তিনি। তিন বছর ধরে এভাবে বিক্রি করছেন।

জেসি অ্যাগ্রো ফার্মের চেয়ারম্যান এরশাদ উদ্দিন  বলেন, আজ প্রথম রোজা থেকে ১০ টাকা দরে দুধ বিক্রি শুরু করেছেন। পুরো রমজান মাসে প্রায় ২ হাজার লিটার দুধ ১০ টাকা দরে বিক্রি করবেন। তিনি বলেন, রমজান মাসে সবাই দুধ খেতে চান। বিশেষ করে সাহ্‌রির সময় এটা অনেকেরই পছন্দ। এ জন্য দুধের দাম বেড়ে যায়। তাই তিনি উদ্যোগ নিয়েছেন, পুরো রমজান মাসে তাঁর খামারের উৎপাদিত দুধ ১০ টাকা দরে বিক্রি করবেন। যে কেউ সেই দুধ খামারে এসে কিনে নিতে পারবেন। প্রতিজন সর্বোচ্চ এক লিটার দুধ কিনতে পারবেন।

এরশাদ উদ্দিনের দুধের খামার ছাড়াও শিল্পপ্রতিষ্ঠান আছে। দীর্ঘদিন ধরে তিনি এলাকায় সেবামূলক কাজ করছেন। প্রতিষ্ঠা করেছেন স্কুল-কলেজসহ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. হারিছ মিয়া বলেন, রোজা এলে জিনিসপত্রের দাম বাড়ানো, এটা রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে যেখানে ৯০ থেকে ১০০ টাকা দরে দুধ বিক্রি হচ্ছে, সেখানে গরিব মানুষের কথা ভেবে রমজান মাসে তিনি ১০ টাকা লিটার দুধ বিক্রি করছেন। এ ছাড়া অনেকের বাড়িতেই তিনি তাঁর খামারের দুধ পৌঁছে দিচ্ছেন। এমনকি অতিদরিদ্র কেউ টাকা ছাড়া এলেও খালি হাতে ফেরাচ্ছেন না।