উখিয়ায় আশ্রয়শিবিরে গুলি করে রোহিঙ্গা নেতাকে হত্যা

গুলি | প্রতীকী ছবি: রয়টার্স

প্রতিনিধি কক্সবাজার: কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং আশ্রয়শিবিরে (ক্যাম্প-২) গুলি করে রোহিঙ্গা মাঝি (নেতা) সৈয়দ হোসেনকে (৪২) হত্যা করা হয়েছে। আজ বুধবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে ডব্লিউ ব্লকের একটি দোকানে বসে চা পানের সময় একদল অস্ত্রধারী গুলি ছোড়ে। এতে তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটে পড়েন। আশপাশের লোকজন তাঁকে আশ্রয়শিবিরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত সৈয়দ হোসেন ওই আশ্রয়শিবিরের ডব্লিউ ব্লকের মাঝি ছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শী রোহিঙ্গাদের দাবি, মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মির (আরসা) সন্ত্রাসীরা গুলি করে সৈয়দ হোসেনকে হত্যা করেছে।

পুলিশ জানায়, ৬ মার্চ গভীর রাতে একদল অস্ত্রধারী রোহিঙ্গা উখিয়ার বালুখালী আশ্রয়শিবিরে (ক্যাম্প-৯) গুলি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে আরসার ক্যাম্প কমান্ডার নুর হাবি প্রকাশ ওয়াক্কাস ওরফে নুর কলিমকে (৪২)। এ হত্যার বদলা নিতে আরসার অস্ত্রধারীরা আজ সকালে সৈয়দ হোসেনকে গুলি করে হত্যা করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আশ্রয়শিবিরের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অধিনায়ক ও অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক সৈয়দ হারুন অর রশিদ বলেন, আজ সকালে ক্যাম্পের একটি দোকানে চা পান করার সময় সৈয়দ হোসেনকে গুলি করা হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে এপিবিএন সদস্যরা আহত সৈয়দকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। সন্ত্রাসীদের ধরতে আশ্রয়শিবিরে অভিযান চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বেশ কিছুদিন ধরে আশ্রয়শিবিরে আধিপত্য বিস্তার ও চাঁদাবাজির ঘটনায় মিয়ানমারের কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে বিরোধ ও হানাহানির ঘটনা ঘটছে বলে তিনি জানান।

পুলিশ জানায়, ৩ মার্চ দুপুরে উখিয়ার তাজনিমারখোলা আশ্রয়শিবিরের (ক্যাম্প-১৯) বসতবাড়ি থেকে তুলে নিয়ে পিটিয়ে এবং গুলি করে হত্যা করা হয় রোহিঙ্গা মো. রফিককে (৩৫)। নিহত রফিক এ-ব্লকের ৯ নম্বর শেডের বাসিন্দা দিল মোহাম্মদের ছেলে। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি উখিয়ার আশ্রয়শিবিরে (ক্যাম্প-১৭) ছুরিকাঘাত ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয় আশ্রয়শিবিরের একটি মসজিদের ইমাম সামসু আলমকে (৩৮)। তিনি ওই আশ্রয়শিবিরের সি-ব্লকের এইচ-৭৯ শেডের বাসিন্দা মিয়া চানের ছেলে। বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

পুলিশ ও রোহিঙ্গা নেতাদের তথ্যমতে, গত সাড়ে চার মাসে আশ্রয়শিবিরে একাধিক সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনায় অন্তত ৩০ রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ১৪ জন রোহিঙ্গা মাঝি, ৮ জন আরসার ও অন্যরা সাধারণ রোহিঙ্গা।