নাটোরে শিশু অপহরণের দায়ে দুজনের যাবজ্জীবন, একজনের ১০ বছর কারাদণ্ড

আদালত | প্রতীকী ছবি

প্রতিনিধি নাটোর: নাটোরে এক শিশুকে অপহরণের ঘটনায় দুই তরুণের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। একই ঘটনায় শিশু আদালতে আরেকজনের ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ট্রাইব্যুনালের বিচারক (দায়রা জজ) মুহাম্মদ আবদুর রহিম এ দণ্ডাদেশ দেন। রায়ে প্রত্যেক আসামিকে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে।

যাবজ্জীবন দণ্ডিত ব্যক্তিরা হচ্ছেন নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার ঢুলিয়া মোল্লাপাড়ার আবদুল করিমের ছেলে মো. সোহাগ ও একই গ্রামের মো. নিজামের ছেলে মো. সাগর। ২০১৬ সালে ঘটনার সময় সোহাগের বয়স ২২ বছর ও সাগরের বয়স ২০ বছর ছিল। ১০ বছরের কারাদণ্ড হওয়া নাবালকের বাড়িও একই এলাকায়।

নাটোর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি আনিছুর রহমান জানান, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের একজন নাবালক হওয়ায় তার বিচার শিশু আদালতে হয়েছে। একই বিচারক হওয়ায় তিনি একসঙ্গে রায় দিয়েছেন। রায়ে কারাদণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেক আসামিকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার টাকা ভুক্তভোগী শিশু পাবে।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ২০১৬ সালে বড়াইগ্রাম থানার একটি গ্রামে ১০ বছর বয়সী এক কন্যাশিশু স্থানীয় মাদ্রাসায় জলসা শুনতে যায়। সেখান থেকে আসামিরা তাঁকে অপহরণ করে বিলের মধ্যে নিয়ে যান। সঙ্গে থাকা অন্য মেয়েদের চিৎকারে উপস্থিত লোকজন বিলে গিয়ে তাৎক্ষণিক ওই শিশুকে উদ্ধার করে।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল সূত্রে জানা যায়, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিশুর মা সরাসরি ট্রাইব্যুনালে মো. সোহাগসহ তিনজনের বিরুদ্ধে একটি অপহরণ মামলা করেন। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় বড়াইগ্রাম থানাকে। পুলিশ তদন্ত শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরে মামলাটি বিচারের জন্য ট্রাইব্যুনালে এলে আট সাক্ষী সাক্ষ্য দেন। সাক্ষ্যপ্রমাণে আসামিদের বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তিনজনকে দণ্ডিত করেন।

ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ সহকারী সাইফুল ইসলাম জানান, যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের বিচার হয়েছে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এবং ১০ বছর কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. রনির বিচার হয় শিশু আদালতে। দুটি আদালতেরই বিচারক মুহাম্মদ আবদুর রহিম। গতকাল সোমবার মামলাটির যুক্তিতর্ক শুনানির দিন ধার্য ছিল। গতকাল আসামিরা আদালতে হাজির হলে আদালত তাঁদের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠান। আজ তাঁদের উপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করা হয়।