ফাইল ছবি |
প্রতিনিধি চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম কাস্টমসে শুল্কায়নে হঠাৎ খেজুরের দাম (ভ্যালু) দ্বিগুণ হয়েছে। এ কারণে আজ বুধবার সকাল থেকে সারা দিন খেজুরের শুল্কায়ন বন্ধ থাকে। এতে রমজানে বিক্রির জন্য আনা খেজুরের শতাধিক কন্টেইনার আটকে যায়। এতে করে বাজারে খেজুরের দাম বাড়ার শঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কাস্টমসের শুল্কায়ন গ্রুপ-১ / (এ) এর রাজস্ব কর্মকর্তা মো. হারুন অর রশিদ। বুধবার ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়ার্ডিং এজেন্টে (সিএন্ডএফ) কোনো খেজুর আমদানির বিল এন্ট্রি করেননি বলে জানান তিনি।
হারুন অর রশিদ বলেন, ‘জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সিদ্ধান্তের আলোকে খেজুরের দাম বাড়ানো হয়েছে।’
কাস্টমসের শুল্কায়ন সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, খেজুরের আমদানি শুল্ক হার আড়াই কেজির কম ওজনের প্যাকেট ২৫ শতাংশ এবং আড়াই কেজির বেশি ওজনের বস্তা বা কাটুন ১০ শতাংশ হারে বিদ্যমান রয়েছে। বুধবার থেকে কার্টুনে আনা খেজুরের দাম প্রতি কেজি ১ ডলার থেকে বাড়িয়ে ২ ডলার পঞ্চাশ সেন্ট (২.৫০ ডলার), বস্তায় আনা খেজুর ৫০ (পঞ্চাশ সেন্ট) থেকে বাড়িয়ে এক ডলার ২৫ সেন্ট (১.২৫ ডলার) বাড়ানো হয়েছে। এ কারণে বুধবার কোনো সিএন্ডএফ খেজুর শুল্কায়ন করেনি। এর প্রেক্ষিতে রমজানের এই বাজারে আরেক দফা খেজুরের দাম বাড়ার আশঙ্কা করছেন তারা।
সিএন্ডএফ এজেন্ট মেসার্স সোনারগাঁও অ্যাসোসিয়েটস লি. এর কাস্টম সরকার মো. মুজিবুর রহমান বলেন, ‘আমাদের ৭৫টি (৪০ ফুট) খেজুরের কন্টেইনার কায়িক পরীক্ষা শেষ করে শুল্কায়নের অপেক্ষায় রয়েছে। আজ সকালে কাস্টমস থেকে জানানো হলো কার্টুনে আনা খেজুরের দাম প্রতি কেজি এক ডলার থেকে বাড়িয়ে দুই ডলার পঞ্চাশ সেন্ট (২.৫০ ডলার), বস্তায় আনা খেজুর ৫০ সেন্ট থেকে বাড়িয়ে এক ডলার ২৫ সেন্ট (১.২৫ ডলার) বাড়ানো হয়েছে। এতে আমরা শুল্কায়নে বিপাকে পড়ে যাই।’
একই কথা বললেন সিএন্ডএফ এজেন্ট এস হোসেন অ্যান্ড কো. এর প্রতিনিধি বাবু দাসও। তিনি জানান, তাঁদেরও ১০ কন্টেইনার খেজুর কায়িক পরীক্ষা শেষ করে শুল্কায়নের অপেক্ষায় রয়েছে। এভাবে সিএন্ডএফ এজেন্ট নিপুন এন্টারপ্রাইজের তিন কন্টেইনার, সাফি এন্টারপ্রাইজের দুই কন্টেইনারসহ আরও কয়েকজনের খেজুর শুল্কায়নের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানা যায়।
কাস্টমস হাউসের শুল্কায়ন গ্রুপ-১ /এ তে বেলা ২টার দিকে গিয়ে দেখা যায়, অনেক সিএন্ডএফ এজেন্ট এর প্রতিনিধিরা জড়ো হয়ে আছেন।
এ সময় কথা হয় খেজুর আমদানিকারক ঢাকার ‘যাত্রাবাড়ীর হলিমার্টের’ স্বত্বাধিকারী মো. সাইফুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘খেজুরের শুল্কায়নের ক্ষেত্রে ভ্যালু বাড়ানোর ফলে আমাদের আমদানি ব্যয় বেড়ে যাবে। ফলে বাজারে এর প্রভাব পড়বে।’
চট্টগ্রাম কাস্টমসের সহকারী কমিশনার মহি উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, ‘জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের পরামর্শে কমিশনারের নির্দেশনায় খেজুরের ভ্যালু বাড়ানো হয়েছে।’
দিনভর খেজুরের শুল্কায়ন না করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কেউ শুল্কায়ন করতে না আসলে আমাদের কী করার আছে!’