আওয়ামী লীগ

প্রতিনিধি পাবনা: গত ১৯ ফেব্রুয়ারি পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার ১৫ দিন পর বেশকিছু রদবদল করে পুনরায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন করা হয়েছে।

৭ মার্চ সকালে পুর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ করা হয়। তার আগে সোমবার আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে কমিটি অনুমোদন করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

পাবনা জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রেজাউল রহিম লাল এবং পাবনা সদর আসনের সংসদ গোলাম ফারুক প্রিন্সের নেতৃত্বাধীন নতুন করে কমিটি অনুমোদনের মাধ্যমে শহরের কৃষ্ণপুর বলয়ের পুনরুত্থান ঘটেছে।

এর আগে সম্মেলনের ঠিক এক বছর পর গত ১৯ ফেব্রুয়ারি পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। সেই কমিটিতে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা সাবেক মেয়র কামরুল হাসান মিন্টুকে প্রথম যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক, কেন্দ্রীয় তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক উপকমিটির সাবেক সদস্য কামরুজ্জামান উজ্জলকে তৃতীয় যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক ভূমিমন্ত্রী প্রয়াত শামসুর রহমান শরীফ ডিলুর ছেলে গালিবুর রহমান শরীফ সাংগঠনিক সম্পাদককসহ কমিটিতে বেশ কিছু চমক ছিল। এছাড়াও পাবনা পৌরসভা নির্বাচনে দলের বিপক্ষে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচিত মেয়র শরিফ উদ্দিন প্রধানসহ তার নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিয়ে নোটিশপ্রাপ্ত হওয়া বেশ কয়েকজনকে রাখা হয়েছে কমিটিতে।

ওই কমিটি ঘোষণার পরপরই দলের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। বিশেষ করে পাবনা শহরের কৃষ্ণপুর এলাকায় হতাশ ও ক্ষোভ দেখা দেয়। পাবনায় আওয়ামী লীগের কর্তৃত্ব কৃষ্ণপুর এলাকাভিত্তিক। সদর আসনের সংসদ সদস্য, নারী সংসদ সদস্য, পাবনা পৌর মেয়র, উপজেলা চেয়ারম্যান, জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক সবই এই এলাকার। ফলে বেশ কিছু বছর ধরে আওয়ামী লীগের কর্তৃত্ব-আধিপত্য চলছিল এই এলাকার। ১৯ ফেব্রুয়ারি ঘোষিত কমিটিতে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ছাড়া কৃষ্ণপুরের কর্তৃত্ব অনেকটা ধসে পড়েছিল।

পরিবর্তন এনে নতুন এই কমিটিতে বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া সাবেক মেয়র কামরুল হাসান মিন্টুকে প্রথম থেকে দ্বিতীয় যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পদে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রথম যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তুলে আনা হয়েছে দ্বিতীয় স্থানে থাকা অ্যাডভোকেট আব্দুল আহাদ বাবুকে। এছাড়াও কৃষ্ণপুরের আলোচিত নেতা প্রথম কমিটি থেকে ছিটকে পড়া কামিল হোসেনকে নতুন কমিটিতে করা হয়েছে এক নম্বর সাংগঠনিক সম্পাদক। গালিবুর রহমান শরীফকে দুই নম্বর সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছে। সহ-সভাপতি পদেও কয়েকজনকে পরিবর্তন করা হয়েছে।

৯৯ সদস্যের কমিটিতে ২৪ জনকে উপদেষ্টা ও ৩৬ জনকে সদস্য করা হয়েছে। পরিবর্তন এনে দ্বিতীয়বার পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে যাদের নাম অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন, সভাপতি রেজাউল রহিম লাল, সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বাবু (পরিবর্তিত), আ স ম আব্দুর রহিম পাকন, আব্দুল হামিদ মাস্টার (পরিবর্তিত), অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন সাখো, চন্দন কুমার চক্রবর্তী, আজিজুল হক আরজু, তোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী, আবু ইসহাক শামীম, এমদাদ আলী বিশ্বাস ভুলু, বিজয় ভূষণ রায় (পরিবর্তিত) ও মনির উদ্দিন আহমেদ মান্নান।

সহ-সভাপতি থেকে বাদ দেয়া হয়েছে মকবুল হোসেন এমপি, অ্যাডভোকেট বেলায়েত আলী বিল্লু ও আহম্মেদ ফিরোজ কবির এমপিকে। তাদের উপদেষ্টা ও সদস্য করা হয়েছে।

সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক প্রিন্স এমপি, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল আহাদ বাবু (দ্বিতীয় থেকে প্রথম), কামরুল হাসান মিন্টু (প্রথম থেকে দ্বিতীয়) ও কামরুজ্জামান উজ্জল।

আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সামাদ খান রতন, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক রাগীব হাসান টিপু, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট তৌফিক ইমাম খান, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক শাওয়াল বিশ্বাস, দফর সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সুইট, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মীর জহুরুল হক (পুনো), প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সরদার মিঠু আহমেদ, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক জামিরুল ইসলাম সাইকেল,  বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জি. আব্দুল আলীম (ভাঙ্গুড়া), মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মাহাজেবিন শিরিন পিয়া, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক মশিউর রহমান, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সাহাব উদ্দিন সবুজ, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ আলী জিরু, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক প্রলয় চাকী, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. আব্দুল আওয়াল।

সাংগঠনিক সম্পাদক কামিল হোসেন (পরিবর্তিত), গালিবুর রহমান শরীফ ও আব্দুল হান্নান। উপ-দফতর সম্পাদক অ্যাডভোকেট সাবিত ফয়সাল রিজভী শাওন, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন তোফা এবং কোষাধ্যক্ষ লিয়াকত আলী তালুকদার।

সদস্যরা হলেন, অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু এমপি, মকবুল হোসেন এমপি, ফিরোজ কবির এমপি (সহ-সভাপতি থেকে পরিবর্তিত), নুরুজ্জামান বিশ্বাস এমপি, নাদিরা ইয়াসমিন জলি এমপি, আডভোকেট আব্দুল মতিন (নগরবাড়ী), শহিদুল্লাহ সহিদ, আব্দুল বারি বাকী, বশির আহমেদ বকুল, ড. মজিবর রহমান, মো. রশিদুল্লাহ, অ্যাডভোকেট শাহ আলম, খ ম হাসান কবির আরিফ, খন্দকার কামরুজ্জামান মাজেদ, তানভীর ইসলাম (নতুন সংযুক্ত), বাকি বিল্লাহ, মোশাররফ হোসেন, সোহেল হাসান শাহীন, রফিকুল ইসলাম রুমন, অ্যাডভোকেট তোসলিম হাসান সুমন, মাযহার মানিক, আনিসুজ্জামান দোলন (নতুন সংযুক্ত), মোস্তাক আহমেদ আজাদ, সরদার ফারুক হোসেন, আনোয়ারা, আবু সাঈদ খান, তৌফিকুল আলম তৌফিক, শরীফ উদ্দিন প্রধান, আলী মুতর্জা বিশ্বাস সনি, আব্দুল আজিজ খান, আব্দুল হান্নান শেলী, বাদল কুমার ঘোষ, সাকিবুর রহমান শরীফ কনক, কামরুজ্জামান বিশ্বাস (জিপু), ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল আলীম (ঈশ্বরদী) এবং সেলিম রেজা সুইট।

উপদেষ্টা পরিষদ হলেন, খন্দকার জাহাঙ্গীর কবির রানা, অ্যাডভােকট রবিউল আলম বুদু, মুহাম্মদ ইসমাইল, পাঞ্জাব আলী বিশ্বাস, অ্যাডভাকেট এ কে এম শামসুদ্দিন, শামসুর রহমান মানিক, অ্যাডভোকেট তোরাব আলী খান, অ্যাডভোকেট বেলায়েত আলী বিল্লু, আব্দুল মতিন খান, ডা. গোলাজার হোসেন, সাজেদুর রহমান নীলু, মেজর জেনারেল (অব.) ফসিউর রহমান, সেলিনা পারভীন বকুল, কানিজ ফাতেমা পুতুল, প্রভাষক আমিরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট খন্দকার আব্দুল জাহিদ রানা, অ্যাডভোকেট ওবায়দুল হক, ফজলুর রহমান মাসুদ, অ্যাডভোকেট আক্তারুজ্জামান মুক্তা, এনামুল হক টগর, অ্যাডভোকেট হোসেন শহীদ সোরাওয়ার্দী, মোক্তার হোসেন, আব্দুল মতিন (সুজানগর)।

আগের কমিটির ৭ বছর পর ২০২২ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি পাবনা পুলিশ লাইন্স মাঠে জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে পাবনা জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রেজাউল রহিম লালকে সভাপতি এবং পাবনা সদর আসনের সংসদ গোলাম ফারুক প্রিন্সকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়েছিল।