জেসিকা মাহমুদ | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
প্রতিনিধি মুন্সীগঞ্জ: জেসিকা মাহমুদ ও আদিবা আক্তার দুজনের সঙ্গেই বিজয় রহমানের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এর মধ্যে হঠাৎ আদিবাকে বিয়ের পরিকল্পনা করে বিজয়। বিষয়টি জানতে পেরে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন জেসিকা। এরপরই জেসিকাকে খুনের পরিকল্পনা করেন বিজয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী আদিবার যোগসাজশে জেসিকাকে বাসায় ডেকে শ্বাসরোধে হত্যা করে বিজয়। এরপর জেসিকা ছাদ থেকে পড়ে মারা গেছে বলে নাটক সাজায় তারা।
জেসিকার মৃত্যুর ঘটনায় বুধবার বিকেলে আদিবাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আদিবার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি থেকে এসব তথ্য জানিয়েছে পুলিশ।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জেসিকা মাহমুদ নামে ওই এসএসসি পরীক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। তবে জেসিকাকে পরিকল্পিভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে তার পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়।
জেসিকা মাহমুদ মুন্সীগঞ্জের আলবার্ট ভিক্টোরিয়া যতীন্দ্র মোহন গভর্নমেন্ট গার্লস হাই স্কুলের শিক্ষার্থী ও সৌদি আরব প্রবাসী সেলিম মাহমুদের মেয়ে।
এ ঘটনায় বুধবার সন্ধ্যায় জেসিকার ভাই মো. শাহরিয়ার জিদান বাদী হয়ে বিজয় ও আদিবার নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করে মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রধান আসামি বিজয় মুন্সীগঞ্জ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও শহর সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আরিফুর রহমানের ছেলে এবং অপর আসামি আদিবা পঞ্চসার ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি জাহিদ হাসানের মেয়ে।
আদিবাকে বুধবার বিকেলে শহরের উপকণ্ঠ নয়াগাঁও এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর পুলিশের কাছে দেওয়া ১৬১ ধারায় জবানবন্দিতে হত্যাকাণ্ডের বিবরণ তুলে ধরে বলে জানিয়েছেন মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তারিকুজ্জামান।
মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) সুমন দেব জানান, আদিবা ও জেসিকা উভয়ের সঙ্গেই বিজয় রহমান বিজুর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সম্প্রতি বিজয় আদিবাকে বিয়ের পরিকল্পনা করে। বিষয়টি জানতে পেরে জেসিকা রাগন্বিত হয়ে ওঠে। পরে বিজয়ের সঙ্গে কথোপকথনের কিছু স্ক্রিনশট আদিবাকে পাঠায় জেসিকা। এসব দেখে বিজয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করে আদিবা। এরপর জেসিকাকে ডেকে এ বিষয়টি মীমাংসা করার সিদ্ধান্ত নেয় তারা।
তিনি আরও জানান, সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জেসিকাকে বিজয়ের বাসায় ডেকে পাঠানো হয়। সেখানে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে আদিবা ও বিজয় মিলে জেসিকাকে কিল-ঘুষি মেরে জখম করে। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে বিজয় জেসিকার গলা চেপে ধরে। এতে জেসিকা অচেতন হয়ে পড়ে। এরপর স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় জেসিকাকে হাসপাতালে নিয়ে আসে বিজয় এবং সে ছাদ থেকে পড়ে গেছে বলে জানায়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জেসিকার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।