রাজশাহীতে প্রধানমন্ত্রীর জনসভা: সকাল থেকে দল বেঁধে আসছেন মানুষ, সাজ সাজ রব

জনসভাস্থলে দলে দলে ঢুকছেন মানুষ। আজ রোববার সকালে রাজশাহীর মাদ্রাসা মাঠের ফটকে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন 

আব্দুল কাদের নাহিদ, রাজশাহী থেকে: রাজশাহীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভায় যোগ দিতে আজ রোববার সকাল থেকে দল বেঁধে আসছেন মানুষ। জনসভাস্থল রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা মাঠ (বর্তমান হাজী মুহম্মদ মহসিন সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠ) সকাল পৌনে ১১টার দিকে মানুষে মানুষে পূর্ণ হয়ে উঠেছে।

এই জনসভা উপলক্ষে তোরণ, পোস্টার, ব্যানার আর ফেস্টুনে সারা শহর যেন মোড়ানো হয়েছে। সেই সঙ্গে আজ সকাল থেকে দলীয় নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের মিছিল-স্লোগানে মুখর হয়ে উঠেছে জনসভাস্থল ও আশপাশের এলাকা। নগরের সাজ সাজ রব পড়ে গেছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, সকাল আটটা থেকে সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্পের নারী সদস্যরা দল ধরে আসছেন। নগরের বাটার মোড়, আলুপট্টি, রাজীব চত্বর, সিঅ্যান্ডবি মোড় এলাকা থেকে তাঁদের কমলা রঙের ক্যাপ সরবরাহ করা হচ্ছে। তাঁরা এ ক্যাপ নিয়ে দল ধরে জনসভাস্থলের দিকে যাচ্ছেন। একইভাবে বিভিন্ন নেতার পক্ষে স্লোগান দিতে দিতে খণ্ড খণ্ড মিছিল আসছে।

নগরের বাটার মোড়ে সিটি করপোরেশনের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্পের হাউজিং কমিটির সভাপতি সামিয়া হক বললেন, তাঁদের এ প্রকল্প থেকে ২৫ হাজার নারী সদস্য এ জনসভায় অংশ নিচ্ছেন। নগরীর চারটি মোড়ে তাঁদের কমলা রঙের ক্যাপ সরবরাহ করা হচ্ছে।

২৯ নম্বর ওয়ার্ডের খোঁজাপুর এলাকা থেকে আসছিলেন সুফিয়া বেগম। তাঁর দলে অন্তত শ খানেক নারী। তাঁদের অনেকে শিশুদের কোলে নিয়ে আসছেন। মোহনাপুর উপজেলা থেকে বাসে করে এসেছেন আওয়ামী লীগের কর্মী গোলাম রব্বানী। রাজশাহী নগরীর তেরখাদিয়া মোড়ে বাস থেকে নেমে সকাল পৌনে ৯টায় তিনি জনসভাস্থলে পৌঁছান। তিনি বলেন, সকাল ৭টায় বাড়ি থেকে বের হয়ে ৮টায় বাসে উঠেছেন।

এদিকে রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল ঘোষপাড়া মোড়, সিঅ্যান্ডবি মোড়, লক্ষ্মীপুর মোড় এলাকায় নিরাপত্তাচৌকি বসানো হয়েছে। এ এলাকায় কোনো যানবাহন ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। এলাকার ফুটপাতের দোকানপাটও বন্ধ রয়েছে। মাঠের প্রবেশপথগুলোয় এমনভাবে বাঁশের কাঠামো তৈরি করা হয়েছে যে একেবারে সুশৃঙ্খলভাবেই মানুষকে ভেতরে ঢুকতে এবং বের হতে হচ্ছে। পুলিশ ছাড়াও নিরাপত্তার জন্য আওয়ামী লীগের প্রায় ৫০০ স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত করা হয়েছে।

মিছিল নিয়ে জনসভায় আসছেন দলীয় নেতা–কর্মী ও সমর্থকেরা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন 

এদিকে রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল ঘোষপাড়া মোড়, সিঅ্যান্ডবি মোড়, লক্ষ্মীপুর মোড় এলাকায় নিরাপত্তাচৌকি বসানো হয়েছে। এ এলাকায় কোনো যানবাহন ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। এলাকার ফুটপাতের দোকানপাটও বন্ধ রয়েছে। মাঠের প্রবেশপথগুলোয় এমনভাবে বাঁশের কাঠামো তৈরি করা হয়েছে যে একেবারে সুশৃঙ্খলভাবেই মানুষকে ভেতরে ঢুকতে এবং বের হতে হচ্ছে। পুলিশ ছাড়াও নিরাপত্তার জন্য আওয়ামী লীগের প্রায় ৫০০ স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত করা হয়েছে।

জনসভামঞ্চ থেকে সকাল ৯টা ৫৪ মিনিটে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার প্রথম মাইকে সবাইকে সুশৃঙ্খলভাবে মাঠে প্রবেশ করে নির্দিষ্ট জায়গায় বসে প্রধানমন্ত্রীর জন্য অপেক্ষা করার অনুরোধ জানান। এক ঘণ্টায় মাঠের অর্ধেকের বেশি ভরে গেছে। সকাল ১০টায় পুঠিয়া দুর্গাপুর থেকে বিরাট মিছিল জনসভায় প্রবেশ করে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ রোববার রাজশাহী সফর করছেন। বিকেলে তিনি রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা মাঠে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় ভাষণ দেবেন। সেই সঙ্গে তিনি ৩১টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।

এর আগে সকাল ১০টায় চারঘাটে বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির প্যারেড গ্রাউন্ডে ৩৮তম বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারের শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করবেন।

শেষ ২০১৮ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজশাহীতে এসেছিলেন। সেদিনও মাদ্রাসা মাঠে তিনি ভাষণ দিয়েছিলেন। সেবার ২২টি প্রকল্পের উদ্বোধন ঘোষণা করেছিলেন। এবার তিনি ১ হাজার ৩১৬ কোটি ৯ লাখ ৬৭ হাজার টাকার মোট ৩১টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। এর মধ্যে ২৫টির কাজ শেষ হয়েছে। আর ছয়টির কাজ চলমান।

ঐতিহাসিক মাদ্রাসা মাঠের পাশের ঈদগাহ মাঠ, পশ্চিম দিকে সিএন্ডবি মোড় ও পূর্ব দিকে নগরের সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট পর্যন্ত এলাকাকে জনসভার মাঠ হিসেবে কাজে লাগানো হবে। এই জন্য ২২০টি মাইকের হর্ন ও ১২টি বড় পর্দা (এলইডি স্ক্রিন) ব্যবহার করা হবে। এতে মানুষ মাঠের বাইরে দাঁড়িয়েও জনসভার ভাষণ শুনতে পারবেন।

জনসভায় আগত মানুষের জন্য দেড় লাখ পানির বোতলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বোতলগুলো নগরের বিভিন্ন মোড় থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে। এদিকে রেলপথে জনসভায় মানুষ আনার জন্য সাতটি বিশেষ ট্রেন ভাড়া করা হয়েছে।