প্রতিনিধি ঈশ্বরদী: তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে পাবনার ঈশ্বরদীতে বোরো ধানের বীজতলা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কৃষকেরা শীত ও কুয়াশার ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বীজতলা রক্ষার জন্য বিভিন্ন প্রকার ছত্রাকনাশক ছিটিয়েও ভালো ফল পাচ্ছেন না। এ রকম আবহাওয়া থাকলে এবার বোরোর চারার সংকট দেখা দিতে পারে বলে কৃষকেরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
উপজেলার কালামপুর পূর্ব পাড়া গ্রামের গোপীকৃষ্ণ রায় বলেন, ‘ব্রি-২৯ জাতের তিন মণ ধানের বীজতলার অর্ধেকই শীত ও কুয়াশায় মরে গেছে। মাঘ মাসের মধ্যে আরও ৫ কেজি ধানের বীজতলা তৈরি করবো। কিন্তু কুয়াশা কমছে না, তাই দুশ্চিন্তায় আছি।’
চরকুড়ুলিয়া গ্রামের সাহাদত হোসেন জানান, ব্রি-২৮ ও রত্নামালা জাতের আধা মণ ধানের বীজতলার অর্ধেকই শীত ও কুয়াশার কারণে মরে গেছে। এবার বীজের অভাবে বোরো ধানের আবাদ করা যাবে না।
বরমপুর গ্রামের উজির আলী, দীঘা গ্রামের তমিজউদ্দীন ও নলগাড়ী গ্রামের দবিরুল ইসলাম জানান, তাঁরা বীজতলায় অটোক্রপ কোম্পানির ব্যাভিস্টিন, নোয়িন কোম্পানির স্কোর, আলফা ইউরোর ডুডু, সিনজেনটার থিওভিটসহ বিভিন্ন ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করছেন। কিন্তু তাতে কোনো ফল পাওয়া যাচ্ছে না।
সোমবার ও মঙ্গলবার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে নষ্ট ও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া বীজতলা দেখা গেছে। শীতের কবল থেকে বীজতলা রক্ষা করতে কেউ কেউ পলিথিন দিয়ে বীজতলা ঢেকে দিচ্ছেন। যাঁরা পলিথিন কিনতে পারেননি, তাঁরা খড় দিয়ে বীজতলা ঢেকে রাখছেন।
এসব গ্রামের অধিকাংশ কৃষক জানান, পৌষের প্রথম সপ্তাহের পরে যেসব বীজতলায় ধানের বীজ বোনা হয়েছিল, সেগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। তবে অগ্রহায়ণ মাসে বপন করা ধানবীজ থেকে জন্মানো কিছু চারা ভালো আছে।
উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এবার উপজেলায় ২ হাজার ৬৭৫ হেক্টর জমিতে বোরোর বীজতলা তৈরি করা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিতা সরকার জানান, দেরিতে বপন করা বীজতলাগুলোর চারা শীত ও কুয়াশায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে ক্ষতির পরিমাণ ১৫ শতাংশের বেশি হবে না। তবে প্রতিদিন তিন-চার ঘণ্টা করে রোদ পাওয়া গেলে ক্ষতির পরিমাণ কমে আসবে।
তিনি আরও বলেন, শীত ও কুয়াশায় বীজতলার ক্ষতি হলেও চারার সংকট হবে না। কারণ, কৃষক প্রয়োজনের তুলনায় বেশি বীজতলা তৈরি করেছেন।