বগুড়াতে ভর্তি নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে অভিভাবকদের

বগুড়া সরকারী বালিকা উচ্চবিদ্যালয় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি বগুড়া: বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের (ভিএম) ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে অভিভাবকদের মধ্যে। একাধিকবার আবেদন ও লটারিতে নাম ওঠার ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। এ কারণে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তর থেকে তালিকা সংশোধনের নির্দেশ দেওয়া হয়।  সংশোধিত সেই তালিকা প্রকাশের পর থেকেই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন বাদ পড়া শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা।

তাঁদের দাবি, অনেকে প্রভাতি ও দিবা শাখার জন্য পৃথক দুটি আবেদন করলেও একই শিক্ষার্থীর নামে শতাধিক আবেদনের অভিযোগ ভিত্তিহীন। সফটওয়্যারের জটিলতার বিষয়টি শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের ওপর চাপানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রভাতি ও দিবা শাখায় একই জন্মনিবন্ধন ব্যবহার করে যারা আবেদন করেছেন তাদের ভর্তি করানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। ‘যাচাই-বাছাই করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এ কারণে কিছু ভুল হচ্ছে, সেগুলো সংশোধন করে তালিকা প্রকাশ করা হচ্ছে।

উম্মে মাওয়া বগুড়া শহরের মালগ্রাম এলাকার বাসিন্দা শামিম আহম্মেদের সন্তান। গত ১০ ডিসেম্বর লটারিতে ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলে বগুড়া সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে (ভিএম) মেধা তালিকায় ২৮ নম্বরে ভর্তির সুযোগ পান। সেই অনুযায়ী প্রতিষ্ঠান থেকে দেওয়া ভর্তি ফরম পূরণ করে জমা দেওয়া দেন। স্কুলের নির্দেশনা অনুযায়ী নির্দিষ্ট দোকান থেকে কাপড় কিনে ড্রেস বানাতে দেন সন্তানের জন্য। কিন্তু গতকাল বুধবার স্কুল থেকে প্রকাশ করা সংশোধিত ভর্তি তালিকায় উম্মে মাওয়ার নাম বাদ দেওয়া হয়। কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে দুই বার আবেদন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার স্কুলে যোগাযোগ করতে গেলে শামিম আহম্মেদকে জানানো হয় দুই বার না, তার মেয়ের নামে ৬ বার আবেদন করা হয়। এ কারণে তাঁর মেয়েকে ভর্তি করানো যাচ্ছে না।

এ নিয়ে শামিম আহম্মদে বলেন, ‘৪৬ বার আবেদন করা শিক্ষার্থীকেও ভর্তির তালিকায় রাখা হয়েছে। শামিম আহম্মেদের এ রকম অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে অভিভাবকদের। আর এ কারণেই বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের (ভিএম) ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে অভিভাবকদের মধ্যে।’

গত বুধবার রাতে দুই শতাধিক অভিভাবক মিটিং করে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন আরেক অভিভাবক শফিকুল ইসলাম। শফিকুল ইসলাম অভিযোগ করেন, তাঁর মেয়ে শর্মিলা আকতারকে স্কুলে ভর্তির জন্য অনলাইনে আবেদন করেছিলেন। লটারির ফলাফল প্রকাশের পর দেখা যায় শর্মিলার নাম মেধা তালিকার প্রথম, দ্বিতীয় ও ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে। পরে স্কুল কর্তৃপক্ষ জানায় শর্মিলার নামে ১৫৬ বার আবেদন জমা পড়েছে।

শফিকুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আমি একবারই আবেদন জমা দিয়েছি সেখানে ১৫৬ বার কি করে আবেদন জমা হয়?’ একবার আবেদন করতে টেলিটকের মাধ্যমে ১১০ টাকা করে পরিশোধ করতে হয়।’

এ নিয়ে জানতে চাইলে বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের (ভিএম) প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খাতুন বলেন, প্রভাতি ও দিবা শাখায় একই জন্মনিবন্ধন ব্যবহার করে যারা আবেদন করেছেন তাদের ভর্তি করানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। ‘যাচাই-বাছাই করতে আমাদেরও হিমশিম খেতে হচ্ছে। অন্যদিকে রয়েছে অভিভাবকদের চাপ। এ কারণে আমাদেরও কিছু ভুল হচ্ছে, সেগুলো সংশোধন করে তালিকা প্রকাশ করা হচ্ছে।’