রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধির নির্দেশ

রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির | ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত নাগরিক রোহিঙ্গাদের আশ্রয়স্থল ক্যাম্পগুলোয় ভেতরে ও বাইরে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা বাড়ছে। এসব বন্ধে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়াতে বলেছে সরকার। দেশের ভেতরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবাধে ব্যবহৃত হচ্ছে মিয়ানমারের মোবাইল ফোনের সিম কার্ড। দেশের অভ্যন্তরে প্রায় ১০ কিলোমিটার পর্যন্ত মিয়ানমারের নেটওয়ার্ক পাওয়া যায়। ফলে রোহিঙ্গারা অবাধে মিয়ানমারের ফোন ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এসব বন্ধে এবার নড়েচড়ে বসেছে সরকার।

মিয়ানমারের মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবহার বন্ধ করার বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল রোববার ঢাকায় রোহিঙ্গাবিষয়ক সমন্বয়, ব্যবস্থাপনা ও আইনশৃঙ্খলাসম্পর্কিত জাতীয় কমিটির বৈঠকে এমন নির্দেশনা দেন বলে জানা গেছে।

বৈঠকের পর এক প্রেস ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ক্যাম্পগুলোর ভেতরে ও বাইরে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। রোহিঙ্গাদের নেতা, যাঁদের ‘মাঝি’ বলা হয়, তাঁদের অনেককে হত্যা করা হয়েছে। ক্যাম্পগুলোয় অপরাধীদের নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছে। এসব কারণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোকে সতর্ক অবস্থানে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ক্যাম্পে ক্যাম্পে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়াতে বলা হয়েছে। মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের জন্য বিশেষ অভিযান অব্যাহত থাকবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘সেখানে কিছু কিছু অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, তা নজরদারিতে আনা হচ্ছে।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গারা যাতে আমাদের নেটওয়ার্কে ঢুকতে পারে, তার ব্যবস্থা করা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চারপাশে নিরাপত্তাবেষ্টনী ও টহল রাস্তা নির্মাণ প্রায় শেষ হয়েছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চারদিকে কাঁটাতারের বেষ্টনী, টহল রাস্তা ও ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণে সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে প্রকল্পের ৯৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে।’ তিনি বলেন, কিছু কিছু জায়গায় ৯৯ শতাংশ কাজও শেষ হয়েছে। এখন শুধু নিয়ন্ত্রণ কক্ষগুলো তৈরি করা বাকি রয়েছে।

রোহিঙ্গাদের জন্য চলমান কল্যাণমূলক কাজ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্যসেবার জন্য একটি হাসপাতাল তৈরি করা হচ্ছে। নারী ও শিশু শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। তাদের কর্মক্ষম করে তুলতে ব্র্যাকসহ অনেক এনজিও কাজ করছে।

ক্যাম্পগুলোয় জন্মনিয়ন্ত্রণসহ পরিবার পরিকল্পনাব্যবস্থা প্রচলন নিয়ে বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, বর্তমান ৬৫ শতাংশ রোহিঙ্গা জন্মনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার আওতায় এসেছে।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সরকার সর্বাত্মক চেষ্টা করছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দ্বিপক্ষীয়, ত্রিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় আলোচনা করেছি। এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বন্ধুদেশগুলো কাজ করছে। আমাদের আশা, শিগগিরই এর সমাধান হবে।’ মন্ত্রী আরও বলেন, সরকার শান্তিপূর্ণ উপায়ে রাখাইনে ফেরত পাঠাতে কাজ করছে। অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকাসহ কয়েকটি দেশ কয়েকজন রোহিঙ্গাকে তাদের দেশে নিয়েছে।