সীমান্তে ডিজিএফআই কর্মকর্তা হত্যা মামলায় ২৫ দিনেও ধরা পড়েনি কেউ

তমব্রু সীমান্ত এলাকা | ফাইল ছবি

প্রতিনিধি কক্সবাজার: বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তে গুলিতে ডিজিএফআই কর্মকর্তা (স্কোয়াড্রন লিডার) রিজওয়ান রুশদী নিহত হওয়ার ঘটনায় করা হত্যা মামলায় ২৫ দিনেও কেউ ধরা পড়েনি। গত ১৪ নভেম্বর তাঁকে হত্যার ঘটনায় ২৩ নভেম্বর নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মির (আরসা) প্রধান আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনিকে (৪৮) প্রধান আসামি করে ৬৬ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়।

নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তে ১৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করতে গিয়ে গুলিতে নিহত হন ডিজিএফআই কর্মকর্তা রিজওয়ান রুশদী। তুমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখার রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের কাছে মাদকবিরোধী ওই অভিযানে ডিজিএফআইয়ের সঙ্গে র‍্যাবও অংশ নেয়। এ সময় গুলিবিদ্ধ হন র‍্যাব-১৫ কক্সবাজারের সদস্য সোহেল বড়ুয়া। গুলিতে শূন্যরেখার আশ্রয়শিবিরের রোহিঙ্গা তরুণী সাজেদা বেগম (২০) নিহত হন।

ডিজিএফআই কর্মকর্তা রিজওয়ান রুশদীর মৃত্যুর ঘটনায় ২৩ নভেম্বর নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় আরসার প্রধান আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনিকে (৪৮) প্রধান আসামি করে ৩১ জনের নাম উল্লেখসহ ৬৬ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়। এই মামলার বাদী ডিজিএফআই কক্সবাজার কার্যালয়ের মাঠ কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন। মামলার আসামিরা সবাই মিয়ানমারের রোহিঙ্গা।

হত্যা মামলাটি তদন্ত করছেন নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক (ইনচার্জ) সোহাগ রানা। একই ঘটনায় নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় পৃথক দুটি (অস্ত্র ও হামলা) মামলা করে র‍্যাব। র‍্যাবের মামলা তদন্ত করছেন ঘুমধুম পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আল আমিন। কিন্তু আজ রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত হত্যা মামলার একজন আসামিও ধরা পড়েনি। তবে র‍্যাবের করা অস্ত্র মামলায় জামাল হোসেন নামের একজন রোহিঙ্গাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের হস্তান্তর করেছে র‍্যাব।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন জনপ্রতিনিধির দাবি, আরসার প্রধান কমান্ডার জুনুনিসহ ডিজিএফআই কর্মকর্তা হত্যা মামলার আসামিরা তুমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখার রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে অবস্থান করছেন। মাঝেমধ্যে তাঁরা আশ্রয়শিবিরের পেছনে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের পাহাড়ে অবস্থান নেন কিছু সময়ের জন্য।

হত্যা মামলার তদন্ত কত দূর—জানতে চাইলে তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক সোহাগ রানা  বলেন, তদন্ত চলছে। আসামিদের ধরতে এবং তাঁদের হাতে থাকা অস্ত্র উদ্ধারে তৎপরতা চলছে। মামলার ২৫ দিনেও কোনো আসামি ধরা না পড়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি। তবে অস্ত্র ও হামলার ঘটনায় র‍্যাবের করা পৃথক মামলায় জামাল হোসেন নামের একজন রোহিঙ্গাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি ওই মামলার ২৫ নম্বর আসামি।’

র‍্যাবের করা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ঘুমধুম পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আল আমিন বলেন, সীমান্ত এলাকা। তদন্তে নানা জটিলতা আছে। সব কিছু মাথায় রেখে তদন্ত চলছে।

ডিজিএফআই কর্মকর্তা হত্যা মামলার বাদী আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ঘটনা আমরা নজরদারিতে রেখেছি।’

হত্যা মামলায় এজাহারভুক্ত ৩১ আসামির মধ্যে শূন্যরেখার রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান (রোহিঙ্গা নেতা) মাস্টার দিল মোহাম্মদ, সেক্রেটারি মৌলভী আরিফ, আরসা কমান্ডার ওস্তাদ খালেদ, মাওলানা মোস্তফা, আবদুর রহমানসহ অনেকের নাম আছে।